সহকর্মীদের অসহযোগিতায় নন্দীগ্রামে মমতার হার! বিস্ফোরক অভিযোগ ‘ব্যথিত’ সুব্রতর

Subrata Bakshi: "নন্দীগ্রামের সহস্র হাজার মানুষ দু'হাত তুলে আশীর্বাদ করলেও দলের কিছু সহকর্মীর অসহযোগিতার কারণে মমতা ব্যানার্জি নন্দীগ্রামের প্রতিনিধিত্ব করতে পারলেন না। এটা দুঃখের।''

সহকর্মীদের অসহযোগিতায় নন্দীগ্রামে মমতার হার! বিস্ফোরক অভিযোগ 'ব্যথিত' সুব্রতর
নন্দীগ্রামে দাঁড়িয়ে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করলেন সুব্রত বক্সি। নিজস্ব চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 07, 2021 | 8:00 PM

পূর্ব মেদিনীপুর: নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ( Mamata Banerjee) হারের অন্যতম কারণ দলের একাংশের অসহযোগিতা। এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি সুব্রত বক্সি (Subrata Bakshi)। এ জন্য তিনি ব্যথিত ও দুঃখিত বলে নন্দীগ্রামের সভা থেকে মন্তব্য করলেন।

পেট্রোল ,ডিজেল ,গ্যাসের ও নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্য বৃদ্ধি-সহ কেন্দ্রীয় এজেন্সি কে দিয়ে মিথ্যা মামলায় তৃণমূল নেতৃত্বকে ফাঁসানোর প্রতিবাদ জানিয়ে এদিন নন্দীগ্রাম সীতারাম কলেজ ময়দানে এক ধিক্কার সভার আয়োজন করে নন্দীগ্রাম ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস। সেই সভায় উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি সুব্রত বক্সি, প্রাক্তন মন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু, আইএনটিটিইউসি নেত্রী দোলা সেন, মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র অখিল গিরিরা।

সেই সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে নিজেদের ব্যর্থতার কথা তুলে ধরেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি। সুব্রতবাবুর কথায়, “নির্বাচনে যাঁরাই মমতা ব্যানার্জির হয়ে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিলেন তাঁদেরই মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে। সিবিআই দিয়ে গ্রেফতার করানো হচ্ছে। যারা এ কাণ্ড করছে, যাদের অঙ্গুলি হেলনে এ সব হচ্ছে, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে তাদের নন্দীগ্রাম ছাড়া করতে হবে।” আর তার জন্য নন্দীগ্রামের মাটিতে লড়াই জারি রাখার বার্তা দেন সুব্রত বক্সী।

আবার নন্দীগ্রামে ভোট পরবর্তী সময়ে রাজনৈতিক হিংসার ঘটনায় বিজেপিকে দায়ী করেন সুব্রতবাবু। বলেন, “ভোট পরবর্তী সময়ে কেন্দ্রীয় সরকার ক্ষমতা ব্যবহার করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন দিয়ে যে কায়দায় ভোট পরবর্তী হিংসার পর্যবেক্ষণকে আইনের আঙিনায় নিয়ে গেছে তা ভারতবর্ষের রাজনীতির ইতিহাসে বিরল। অথচ নির্বাচনে নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিল নির্বাচন কমিশন। তাদের নাম করে সংস্থা লাগিয়ে পরবর্তী পর্যায়ে আদালতের সিবিআই তদন্তের ব্যবস্থা করলেন। এর প্রেক্ষিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সহযোগীদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেফতারি শুরু করা হল। আমরা এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি। লড়াই যখন আইনের খাতায়, তখন মানুষকে সঙ্ঘবদ্ধ করে লড়াইয়ের রূপরেখাকে সঠিক জায়গায় পৌঁছে দিতে হবে।” বলেন, সঙ্ঘবদ্ধ থেকে ২০২৪ -এর ভোটে নন্দীগ্রাম থেকে চিরতরে বিদায় দিতে হবে বিজেপিকে।

তার পর নন্দীগ্রামের ভোটে মমতার বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরাজয়ে তিনি ব্যথিত বলে জানান সুব্রত বক্সি। তাঁর কথায়, ‘নন্দীগ্রামে মমতা ব্যানার্জি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। একটা বিচারাধীন মামলা আছে। আইনের ওপর আমাদের যথেষ্ট আস্থা-ভরসা আছে। তাই এত বিশ্লেষণের মধ্যে যাব না। তবু বলতে চাই, এখানে নন্দীগ্রামের সহস্র হাজার মানুষ দু’হাত তুলে আশীর্বাদ করলেও দলের কিছু সহকর্মীর অসহযোগিতার কারণে মমতা ব্যানার্জি নন্দীগ্রামের প্রতিনিধিত্ব করতে পারলেন না। এটা দুঃখের। নন্দীগ্রামের মানুষের মতো আমিও সে দুঃখ মনের মধ্যে রেখে দিয়েছি।’

মমতার নেতৃত্বে ২০২৪ সালে কেন্দ্রের সরকার বদল নিশ্চিত বলে দাবি করে সুব্রত বলেন, “মমতা ব্যানার্জি-র লড়াইয়ের মূল্য লক্ষ্য ভারতীয় সংবিধান রক্ষা করা। যা ধংস করতে চাইছে বিজেপি। তাদের ক্ষমতা থেকে না সরানো পর্যন্ত এ লড়াই চলবে। একটা সুদূরপ্রসারী লড়াই। একটা জয়ের মধ্য দিয়ে বাংলা দখলের মধ্যে দিয়ে এ লড়াই শেষ হবে না। মমতা ব্যানার্জি দিল্লির অভিমুখে যাত্রা শুরু করেছেন।”

তবে এদিন রাজনৈতিক মহলের একাংশ সুব্রতবাবুর মন্তব্যের একটা অংশ নিয়ে কৌতূহল প্রকাশ করেছেন। মমতার হারের কারণ হিসাবে যেভাবে দলেরই একাংশকে যেভাবে দায়ী করেছেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

আরও পড়ুন: Bomb Blast: জমিতে গোবর সার দিতে গিয়েছিলেন কৃষক, আচমকাই বিকট শব্দে কেঁপে উঠল এলাকা!