Suvendu Adhikari: ‘শুভেন্দুর তৃণমূলে ফেরা সময়ের অপেক্ষা’, নন্দীগ্রামের রাজনীতিতে কি ফের মোচড়?

Suvendu Adhikari: তৃণমূল নেতাদের প্রত্যেকেই বক্তৃতা মঞ্চে দাঁড়িয়ে কমবেশি আক্রমণ শানিয়ে নেন শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে। কিন্তু আরও এক ধাপ এগিয়ে সৌমেন দাবি করেন, শুভেন্দুর তৃণমূলে ফেরা এখন নাকি শুধু সময়ের অপেক্ষা।

Suvendu Adhikari: 'শুভেন্দুর তৃণমূলে ফেরা সময়ের অপেক্ষা', নন্দীগ্রামের রাজনীতিতে কি ফের মোচড়?
নন্দীগ্রামে শুভেন্দু অধিকারী। ফাইল চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 08, 2021 | 10:22 AM

নন্দীগ্রাম: বিজেপিতে নাকি একা হয়ে পড়ছেন শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর বিরোধী দলনেতার আসনখানিও নাকি বেশ টলোমলো। নন্দীগ্রামের বুকে দাঁড়িয়ে সেখানকারই বিধায়কের বিরুদ্ধে একের পর এক কটাক্ষ ছুড়ে দিলেন মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র। রবিবার নন্দীগ্রামের সীতানন্দ কলেজের মাঠে একটি সভার আয়োজন করেছিল স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। সেখানে সৌমেন ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন দোলা সেন, পূর্ণেন্দু বসু এবং অখিল গিরিরা।

তৃণমূল নেতাদের প্রত্যেকেই বক্তৃতা মঞ্চে দাঁড়িয়ে কমবেশি আক্রমণ শানিয়ে নেন শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে। কিন্তু আরও এক ধাপ এগিয়ে সৌমেন দাবি করেন, শুভেন্দুর তৃণমূলে ফেরা এখন নাকি শুধু সময়ের অপেক্ষা।

সৌমেন মহাপাত্র বলেন, “বিরোধী দলনেতা পদটা থাকবে কিনা, সন্দেহ আছে। এই নন্দীগ্রামে একটা উপনির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ বিরোধী দলনেতার পদে যিনি আছেন, তিনি তাঁর দল থেকে যেভাবে আমাদের দলের দিকে সরে আসছেন, তাঁর দলের প্রায় সবাই চলে আসছেন, ওঁর আসা সময়ের অপেক্ষা। তবে কবে আসবেন নাকখত দিয়ে, তা সময়ই বলবে। আসনের সংখ্যা ৩০-এর কম হয়ে গেলে বিরোধী দলনেতা পদটা থাকবে না।” শুভেন্দু অধিকারী অবশ্য এই নিয়ে কোনও মন্তব্যই করতে চাননি।

প্রসঙ্গত, রাজ্য রাজনীতির ফোকাসে আবার নন্দীগ্রাম। আর নেপথ্যে একটাই নাম। শুভেন্দু অধিকারী। শনিবারই চাঞ্চল্যকর মোচড় দিয়েছেন তৃণমূল নেতা আবু তাহের। ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটি নেতা খুনে এবার আঙুল তুললেন শুভেন্দু অধিকারীর দিকে। নিশিকান্ত মণ্ডলকে খুন করিয়েছেন বিধানসভার বর্তমান বিরোধী দলনেতাই। শহিদ রবীন দাসের স্মরন সভায় দাবি করলেন আবু তাহের। বারো বছর কেন চুপ করে ছিলেন? তৃণমূল নেতার বক্তব্যের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলল শহিদ নিশিকান্তের পরিবার। বিজেপির দাবি, শুভেন্দু জনপ্রিয়তা দেখেই ভিত্তিহীন অভিযোগ করা শাসক দলের।

২০০৯ সালের ২২ নভেম্বর মৃত্যু হয়েছিল নিশিকান্ত মণ্ডলের। নিশিকান্ত সোনাচূড়া অঞ্চলে তত্কালীন অঞ্চল প্রধান ছিলেন। সেদিন সন্ধ্যা নাগাদ বাড়ি ফেরার সময়ে তিনি গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পিছনে মাওবাদী নেতা কিষানজির নাম উঠে এসেছিল। ঘটনার ১২ বছর পেরিয়ে গিয়েছে।

শনিবার নন্দীগ্রামের রাজনীতিতে এল বড় মোচড়। এলাকারই তৃণমূল নেতা রবীন দাসের স্মরণ সভায় তৃণমূল নেতা আবু তাহের শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ আনেন। তিনি সরাসরি বলেন, “শুভেন্দু অধিকারীই জমি আন্দোলনের নেতা আবু তাহেরকে লোক লাগিয়ে খুন করেছেন।”

আবু তাহেরের কথায়, “নিশিকান্ত মণ্ডল খুন হল। সে সময় পুলিশ তদন্ত করল। মোবাইল ট্র্যাক করা হল, কিন্তু আততায়ী খুঁজে বার করা গেল না? তিনিই তো নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তবে তিনি কীভাবে পারবেন?”

কিন্তু প্রশ্ন উঠছে এখানেই। কেন ১২ বছর চুপ ছিলেন আবু তাহের? কেন এখন শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে সরব হচ্ছেন আবু তাহের? প্রশ্ন তুলেছে নিশিকান্তের পরিবারও। বিজেপির বক্তব্য, তত্কালীন জমি আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। আবু তাহেরও সে সময় জমি আন্দোলনে কাজ করেছিলেন। তৃণমূল অন্যদিকে প্রথম থেকেই দাবি করে আসছিল, শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরও আবু তাহেরের সঙ্গে তাঁর গোপন আঁতাত ছিল।

২০০৯ সালের ঘটনায় এবার নাম উঠছে বিজেপি নেতার নাম। এপ্রসঙ্গে বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা, “এতদিন কি তৃণমূল ঘুমিয়ে ছিল? আমি যদি ধরে নিই এই অভিযোগ সত্য, তাহলে এর জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দায়ী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি তখন এ বিষয়ে কিছুই জানতেন না? এটা কি কখনও হতে পারে? আসল কারণ হচ্ছে শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে চক্রান্ত হচ্ছে। শুভেন্দুকে কোনওভাবেই রোখা সম্ভব হচ্ছে না। ভারতীয় জনতা পার্টির ঝাণ্ডা ধরে এগিয়ে যাচ্ছেন তিনি। শুভেন্দুকে নানাভাবে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানোর চক্রান্ত চলছে। এর আগে দেহরক্ষীর অস্বাভাবিক মৃত্যু মামলাতেও শুভেন্দুকে ফাঁসানোর চেষ্টা হয়েছে। হাইকোর্টের কাছে ভর্তসিত হতে হয়েছে রাজ্য সরকারকে। এবার নতুন ফন্দি আঁটছে ওরা।”

আরও পড়ুন: রাজ্যে কেন পেট্রোপণ্যের ভ্যাট কমানো হচ্ছে না? আজ উত্তাল হতে পারে বিধানসভা