Jalpaiguri: মায়ের গর্ভে মল ত্যাগ করে মারা গেল সদ্যোজাত
Jalpaiguri: ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সীতেশ বর বলেন, "এই জাতীয় ঘটনাকে স্টিল বর্ন বলা হয়। আমাদের চিকিৎসক টিম যাবতীয় চেষ্টা করেছিল। কিন্তু বাচ্চাকে বাঁচাতে পারলাম না।"

জলপাইগুড়ি: ভূমিষ্ট হওয়ার মুখে প্রসবদ্বারে আটকে রইল শিশু। আর এর জেরে মাতৃগর্ভে মল ত্যাগ করে ফেলে। সেই মল মায়ের পেটের জলের সঙ্গে মিশে শিশুর নাকে মুখে চলে যায়। ফলে জন্মের কিছুক্ষণ পরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে ওই শিশুপুত্র। রবিবার দুপুরে ময়নাগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে হওয়া এমন ঘটনায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় ময়নাগুড়ি থানার পুলিশ। পরে পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে মৃত সদ্যোজাত শিশুর পরিবার। অভিযোগের ভিত্তিতে দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। মানসিক অবসাদ নিয়ে ওই প্রসূতি আপাতত ময়নাগুড়ি হাসপাতালেই ভর্তি রয়েছেন।
জানা গিয়েছে, ময়নাগুড়ি ব্লকের রামসাই গ্রামপঞ্চায়েত এলাকার প্রশান্ত রায়ের স্ত্রী পিঙ্কি রায় গর্ভাবস্থার চেকআপ করতে গত ২৮ মার্চ হাসপাতালে আসেন। চেকআপের পর তাঁকে ময়নাগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতাল ভর্তি করে নেয়। এরপর রবিবার সদ্যোজাত ভূমিষ্ট হবার কিছুসময় পর মারা যায়।
মৃত শিশুর বাবা প্রশান্ত রায় বলেন, “শুক্রবার ভর্তির পর সারা রাত পার হয়ে যায়। এরপর শনিবার জিজ্ঞাসা করি কখন প্রসব হবে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায় রাতে হবে। কিন্তু রাতেও প্রসব হয়নি। আজ সকালে লেবার রুমে নিয়ে যাওয়া হয়।” এক ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও চিকিৎসকের কাছ থেকে কোনও উত্তর না আসায় তিনি ফের একবার জিজ্ঞেস করেন, কত সময় লাগবে ডাক্তারবাবু? চিকিৎসক জানিয়ে দেন, সময় লাগবে। প্রশান্ত রায় বলেন, “এরপর আমি চিকিৎসককে বলি ময়নাগুড়িতে না হলে প্রসূতিকে জলপাইগুড়ি রেফার করে দেওয়া হোক। কিন্তু রেফার করা হয়নি। জলপাইগুড়ি নিয়ে গেলে আমার বাচ্চা প্রাণে বেঁচে যেত। আমি ডাক্তারের ফাঁসি চাই।”
এই খবরটিও পড়ুন




প্রসূতির আত্মীয় বুনুবালা রায় বলেন, “চিকিৎসায় গাফিলতির জন্য জন্মের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের ছেলের মৃত্যু হয়েছে। আমরা থানায় অভিযোগ করেছি। আমাদের প্রশ্ন, রাতে ইনজেকশন দেওয়ার পরও কেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করল না? কেন রেফার করে দেওয়া হল না? আমরা শাস্তি চাই।”
ঘটনাটি নিয়ে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সীতেশ বর বলেন, “এই জাতীয় ঘটনাকে স্টিল বর্ন বলা হয়। আমাদের চিকিৎসক টিম যাবতীয় চেষ্টা করেছিল। কিন্তু বাচ্চাকে বাঁচাতে পারলাম না। প্রসূতি শনিবারও ঠিক ছিলেন। রবিবার সকালে তাকে ওটিতে নেওয়া হয়। সেইসময় শিশুটির মাথা বাইরে বেরিয়ে আসে। কিন্তু সন্তান ভূমিষ্ট না হয়ে আটকে থাকে। ওর মা প্রেসার দেওয়ার জন্য বাচ্চাটি পেটে শৌচকর্ম করে দিয়েছিল। সেটা তার শ্বাসনালীতে চলে যায়। এই অবস্থায় আমাদের গাইড লাইন অনুযায়ী রেফার করা যায় না। কারণ গাড়িতে কিছু একটা হলে তখন কারও কিছু করার থাকবে না। অনেক চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু শেষে আমাদের হার মানতে হয়। আমরা সবসময় চাই, মা সুস্থ থাকুক এবং বাচ্চা সুস্থ থাকুক। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।” ময়নাগুড়ি থানার আইসি সুবল ঘোষ বলেন, “শিশুটিকে ময়নাতদন্তের জন্য জলপাইগুড়ি পাঠানো হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।”





