Kanthi: মেয়াদ ফুরোনোর আগেই কর্মাধ্যক্ষের পদ থেকে অপসারিত শুভেন্দু-ঘনিষ্ঠ কণিষ্ক
Kanishka Panda:রাজনৈতিক মহলের একাংশের অভিমত, শুভেন্দু অধিকারী দলত্যাগের পর থেকেই কাঁথিতে একের পর এক ক্ষমতা হারিয়েছেন অধিকারীরা।
পূর্বে মেদিনীপুর: ‘নিজ-গড়ে’ ক্রমেই কি ক্ষমতা হারাচ্ছেন অধিকারীরা? এ বার, কাঁথির ৩ নম্বর ব্লক পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষের পদ থেকে শুভেন্দু অধিকারী-ঘনিষ্ঠ কণিষ্ক পণ্ডাকে (Kanishka Panda) অপসারিত করা হল। মেয়াদ ফুরোনোর আগেই এই অপসারণের নেপথ্যে রাজনৈতিক কারণ রয়েছে বলেই অনুমান করছেন বিশ্লেষকরা।
শুক্রবার দুপুরে কাঁথির ৩ নম্বর ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির দুই কর্মাধ্যক্ষ ও স্থায়ী কমিটির সদস্যকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এদিন, কাঁথি মহকুমা শাসকের উপস্থিতিতে ২৪ জন পঞ্চায়েত সদস্যের মধ্যে ১৯ জন সদস্যের উপস্থিতিতে অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে চারজনকে অপসারিত করা হয়। শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ কণিষ্ক পণ্ডা ছাড়াও অপসারণের তালিকায় ছিলেন পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ নীলিমা দলাই। স্থায়ী কমিটির অপসারিত দুই সদস্য হলেন রাজশেখর মণ্ডল ও চন্দ্রশেখর মণ্ডল। শুভেন্দু-ঘনিষ্ঠ কণিষ্কের (Kanishka Panda) হাতে ছিল পঞ্চায়েতের বন ও ভূমি দফতর। আগামী ২০২৩-এ তাঁর মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। ২০১৮-এর পঞ্চায়েত নির্বাচনে তিনি নির্বাচিত হন। সেখানে প্রায় একবছর আগেই সরিয়ে দেওয়া হল কনিষ্ককে।
ঘটনায়, কাঁথি ৩ নম্বর ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি তথা তৃণমূল নেতা বিকাশ চন্দ্র বেজ বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে দলে থেকে দল বিরোধী কাজ কর্ম করছিলেন। ফলে এই পঞ্চায়েত সমিতির কাজ ব্যাহত হচ্ছিল। আমরা সবাই খুশি। আগামী দিনে মিটিং করে নতুন দুই কর্মাধ্যক্ষ করা হবে।” তবে এর নেপথ্য়ে, রাজনৈতিক কারণকেই দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা। রাজনৈতিক মহলের একাংশের অভিমত, শুভেন্দু অধিকারী দলত্যাগের পর থেকেই কাঁথিতে একের পর এক ক্ষমতা হারিয়েছেন অধিকারীরা। খুব সুচারু ও সুচতুরভাবেই কার্যত অধিকারীদের হাত থেকে ক্ষমতা হস্তান্তরিত হয়েছে। কাঁথি সমবায় ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান পদ থেকেও সম্প্রতি অপসারিত হয়েছেন অধিকারী পুত্র। সেখানে শুভেন্দু-ঘনিষ্ঠ কণিষ্ককেও পদ থেকে অপসারণ করা হতে পারে তা অনুমেয় বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
যদিও পাল্টা কটাক্ষে হেনেছেন কণিষ্ক পণ্ডা (Kanishka Panda)। তিনি বলেন “নতুন করে আবার তৃণমূল কংগ্রেস নাটক শুরু করেছে। আমি অনেক আগেই পদত্যাগপত্র দিয়ে এসেছি। সেই পদত্যাগপত্র আমার কাছে রয়েছে। আলাদা করে এখন পদ থেকে অপসারণ করিয়ে কী লাভ।” উল্লেখ্য, দলবিরোধী কাজের অভিযোগে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা সম্পাদক কণিষ্ক পণ্ডাকে গত বছরের শেষেই অপসারিত করে তৃণমূল। তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী দলের এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিলেন।
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছিল, শুভেন্দু অধিকারী মন্ত্রিত্ব ছাড়ার পর থেকে একাধিক বিষয়ে দলবিরোধী মন্তব্য করছিলেন কনিষ্ক। এমনকি দলনেত্রীর বিরুদ্ধেও সরব হয়েছিলেন তিনি। তার জেরেই তাঁকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয় দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী মন্ত্রিত্ব ছাড়ার পর থেকে তাঁকে নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে জল্পনা তুঙ্গে ওঠে। তাঁর সঙ্গে বেশ কয়েক দফা বৈঠকের পরও জটিলতা কাটেনি। শেষে পদ্ম শিবিরেই যোগ দিয়েছিলেন অধিকারী পুত্র। মন্ত্রিত্ব ছাড়ার আগে রাজ্য সরকারের নিরাপত্তা ফিরিয়ে দিয়েছিলেন শুভেন্দু। তাঁর জেলার নেতার এই সিদ্ধান্ত গ্রহণের পরেই কণিষ্ক একাধিক বিষয় নিয়ে দলের সমালোচনায় মুখর হন। শুভেন্দুর নিরাপত্তা নিয়েও তৃণমূলকে কাঠগড়ায় তোলেন তিনি। এরপরই তাঁকে বহিষ্কার করে তৃণমূল।
আরও পড়ুন: হুড়মুড়িয়ে ভাঙল গাছ, ভাসল ল্যাম্পপোস্ট! উদয়নারায়ণপুরে বিপদের মুখে TV9-এর প্রতিনিধি