কেউ ‘দাদার’ পাশে কেউ ‘দিদির’, ভোটের মুখে কী মত নন্দীগ্রামের শহিদ পরিবারের?
১৪ বছর পর আজও স্ত্রীর ছবি দেখে সোনাচূড়ার 'শহিদ' সুপ্রিয়া জানার স্বামীর মনে পড়ে যায় ১৪ বছর আগের সেই রক্তাক্ত দিনের কথা।
নন্দীগ্রাম: ২০০৭ সালের ১৪ মার্চ। নন্দীগ্রামে (Nandigram) ঝরেছিল ১৪টি প্রাণ। তারপর কেটে গিয়েছে ১৪ বছর। রাজ্যে ক্ষমতাসীন দল বদলেছে। লাল দূর্গ আজ সবুজে সবুজ। কিন্তু কেমন আছেন স্বজন হারানো সেই পরিবারের সদস্যরা? তাঁদের খবর কি সবাই রাখে? কেমন কাটছে তাঁদের দিন? সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হলে যেতে হবে নন্দীগ্রামের সুপ্রিয়া, ভরত মণ্ডলের মতো ‘শহিদ’দের বাড়িতে।
১৪ বছর পর আজও স্ত্রীর ছবি দেখে সোনাচূড়ার ‘শহিদ’ সুপ্রিয়া জানার স্বামীর মনে পড়ে যায় ১৪ বছর আগের সেই রক্তাক্ত দিনের কথা। সে দিন নন্দীগ্রামের ভাঙাবেড়া পুলের সামনে কীর্তনে গিয়েছিলেন সুপ্রিয়া। ফেরার পথে গণ্ডগোলের দিকে এগিয়ে গিয়েছিলেন। তারপর পায়ের সামনে এসে পড়ে কাঁদানে গ্য়াসের সেল। তারপর গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় সুপ্রিয়া দেবীর। তাঁর স্বামী সুকুমার মণ্ডল বলেন, “মাথায় গুলি লেগে মৃত্যু হয়েছিল স্ত্রীর। রাজ্য সরকারের কাছ থেকে সরকারি চাকরি পেয়েছি। এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে আছি।”
সোনাচূড়ার মণ্ডল পরিবার প্রথম দিন থেকে জমি আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিল। ৭ জানুয়ারি আন্দোলন করার সময়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান মণ্ডলবাড়ির বড় ছেলে ভরত মণ্ডল। ভরত মণ্ডলের দুই মেয়ের বিয়ে হয়েছে। ভরত মণ্ডলের স্ত্রী বলেন, “দিদি তো এখানে দেখাশোনা করত না। দাদা করতেন, আমরা দাদার পাশে আছি। দাদা-দিদি যখন একসঙ্গে ছিল তখন রান্নার কাজ পেয়েছি। তবে ছেলে এখনও বেকার, কোনও কাজ পায়নি। তবে সব সময়ের জন্য দাদা পাশে ছিলেন আর এখনও পাশে আছেন।”
২০০৭ সালের ১৪ মার্চের গণ্ডগোলে গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারান ভরতের ভাই পুষ্পেন্দু মণ্ডলও। পুষ্পেন্দুর দাদা কৃষ্ণেন্দুর দাবি, বিপদে পাশে থেকেছেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, “প্রতিশ্রুতি মতো অনেকে কাজ পেয়েছে। কিন্তু এরকম অনেক পরিবার রয়েছে যারা কাজ পায়নি।” নন্দীগ্রামে রাজনীতির অঙ্ক বদলেছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রাক্তন সহযোদ্ধা এখন তাঁর প্রতিপক্ষ। সেখানেই দেখার আন্দোলনের নেত্রী না কি আন্দোলনের সেনাপতি কার দিকে যায় নন্দীগ্রামের রায়।
আরও পড়ুন: ফিরে দেখা নন্দীগ্রাম: লক্ষ্মণ শেঠের নোটিসে রাতারাতি বদলে গেল দেহাতি মানুষগুলো…তারপর