ফের লালার ভামুরিয়ার বাড়িতে ইডির হানা, কয়লাকাণ্ডে বড়সড় তথ্য তদন্তকারীদের নাগালে?
Coal Scam Case: মঙ্গলবারই ইডির অন্য একটি দল হানা দিয়েছিল লেকটাউনের ব্যবসায়ী গণেশ বাগাড়িয়ার বাড়িতে। এই গণেশের নাম লালার ঘনিষ্ঠ হিসাবেই তদন্তকারীদের খাতায়।
পুরুলিয়া: ফের অনুপ মাজি (Anup Maji) ওরফে লালার গ্রামের বাড়িতে তল্লাশি চালাল ইডি। কয়লাকাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত লালার পুরুলিয়ার নিতুড়িয়ায় বাড়ি রয়েছে। যেখান থেকে তাঁর ‘উত্থানপর্ব’-এর সূচনা। মঙ্গলবার ফের ইডি আধিকারিকদের একটি দল সেখানে হানা দেয়। প্রায় তিন-সাড়ে তিন ঘণ্টা সেখানে ছিল তারা।
পুরুলিয়ার নিতুড়িয়া থানা এলাকার প্রত্যন্ত গ্রাম ভামুরিয়া। পশ্চিম বর্ধমানের একেবারে গা ঘেঁষা এলাকা। সেখানেই সাত ভাই বোনের সঙ্গে বড় হয়েছেন লালা। ক্ষমতার সিংহাসন তাঁকে ছোট থেকেই টানত। বাবা কাজ করতেন ইস্টার্ন কোলফিল্ডস লিমিটেড (ইসিএল)-এর ভামুরিয়া কোলিয়ারিতে। ছেলে জেনেছিল ওই খনিতেই আছে ‘গুপ্তধন’। যা একবার নাগালে এলে পিছু ফিরতে লাগে না। এই ভামুরিয়ায় একটা সময় মাছও বিক্রি করেছেন লালা। কিন্তু যাই করুন না কেন, নজর ছিল খাদান পথেই। এর পর একেবারে সিনেমার চিত্রনাট্যের মতো এগিয়েছে লালার জীবন। সমস্ত অভিযোগই তদন্তের হাত ধরে উঠে এসেছে।
গত বছর কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার কাছে খবর যায়, এ রাজ্যের একাধিক কয়লা খাদান থেকে হাজার কোটি টাকার কয়লা বেআইনি ভাবে উত্তোলিত হয়েছে। বিশেষ করে করোনার প্রথম ঢেউয়ে গোটা দেশ যখন বিপর্যস্ত, সে সময়ও অবৈধ কয়লা তোলা হয়েছে ইসিএলের খনি থেকে। এরপরই তদন্তে নামে গোয়েন্দারা। সিবিআই-ইডি এক যোগে তদন্ত শুরু করে।
এ নিয়ে গত নভেম্বরে সিবিআই মামলা দায়ের করে। এরপরই উঠে আসে অনুপ মাজির নাম। তদন্তকারীদের দাবি, এই অবৈধ কারবারে মূল চক্রী লালা। এরপর জল গড়িয়েছে বহু দূর। সিবিআই লালাকে গ্রেফতার করতে চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে পর্যন্ত গিয়েছে। পাল্টা দেশের শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, এখনই লালাকে গ্রেফতার করা যাবে না। তবে তদন্তে সহযোগিতা করতে হবে তাঁকে।
আরও পড়ুন: কয়লাকাণ্ডে ফের ইডির হানা শহরে, ‘পলাতক’ বাগাড়িয়ার বাড়িতে তল্লাশি
ইতিমধ্যেই একাধিকবার নিজাম প্যালেসে সিবিআই দফতরে উপস্থিত হয়েছেন লালা। বার বার তিনি দাবি করেছেন, এই ঘটনায় তাঁর কোনও হাতই নেই। এমনকী কয়লা পাচারকারী শব্দবন্ধের সঙ্গে তাঁর নাম জুড়ে দেওয়া নিয়েও তীব্র আপত্তি তুলেছেন। আপাতত গোটা ঘটনাই তদন্ত সাপেক্ষ। তবে এদিন নিতুড়িয়ায় লালার বাড়িতে ইডির হানা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।
কারণ, মঙ্গলবার দুপুরেই কয়লাকাণ্ডে লালার সঙ্গী হিসাবে অভিযুক্ত ব্যবসায়ী গণেশ বাগাড়িয়ার লেকটাউনের বাড়িতে হানা দেয় ইডির অন্য একটি দল। বাগাড়িয়া আপাতত ‘পলাতক’। তাঁর বাড়িটিও সিল করা। তবে এদিন ইডি সেই সিল ভেঙেই ঘরে ঢুকেছিল। অন্যদিকে লালার ভামুরিয়ার বাড়িও সিল করে দিয়েছিল তদন্তকারীরা। এদিন সেখানেও সিল ভেঙেই ভিতরে ঢোকেন গোয়েন্দারা। ভিতরে চারজন আধিকারিক ঢুকেছিলেন। বাইরে তখন সিআরপিএফের জওয়ান মোতায়েন করা ছিল। এদিনের অভিযান নিয়ে ইডি আধিকারিকরা কোনও কথা বলেননি। তবে আবার বড় কোনও সূত্র তদন্তকারীদের হাতে উঠে এসেছে বলেই অনুমান।