Purulia TMC: ভরতপুরের ছায়া বারি-জাগদা গ্রামপঞ্চায়েতেও, ইস্তফার সিদ্ধান্ত নিয়েও ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সিদ্ধান্ত বদল
Purulia: মোট ১১ আসনের বারি-জাগদা গ্রামপঞ্চায়েতে ৬ জন তৃণমূল, ৪ জন নির্দল এবং ১ জন সিপিআইএম সদস্য রয়েছেন। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে পঞ্চায়েত দখল করে তৃণমূল।
পুরুলিয়া: পদ ছাড়বেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন পুরুলিয়ার পঞ্চায়েত সদস্যরা। তবে শেষমেশ তা আর হল না। বদলালেন সিদ্ধান্ত। পুরুলিয়ার (Purulia) মানবাজার-২ ব্লকের তৃণমূল পরিচালিত বারি-জাগদা গ্রামপঞ্চায়েত। এই পঞ্চায়েতেরই প্রধান-সহ অন্যান্য সদস্যরা পদ ছাড়বেন বলে জানালেও পরে বদল করলেন সিদ্ধান্ত। যোগ্য-অযোগ্য সঠিকভাবে বিচার করে আবাস তালিকায় নাম তোলা হচ্ছে না। এই অভিযোগকে সামনে রেখে গত সোমবার একযোগে গ্রামপঞ্চায়েতের প্রধান-সহ অন্যান্য সদস্যরা ইস্তফা দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন। তবে মঙ্গলবার সিদ্ধান্ত বদলের কথা জানালেন। এর আগে এই একই ছবি দেখা গিয়েছে মুর্শিদাবাদের ভরতপুরেও। ভরতপুর-২ ব্লকের মালিহাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সৈয়দ নাসিরুদ্দিন রীতিমতো কান্নাকাটি করে বলেছিলেন ইস্তফা দিচ্ছেন। প্রধান ও উপপ্রধান-সহ ১৭ জন পঞ্চায়েত সদস্য সোজা বিডিওর কাছে চলে যান গণইস্তফা দিতে। যদিও সে কাগজ জমা দেওয়ার আগেই ১১ জন মন বদল করেন।
মোট ১১ আসনের বারি-জাগদা গ্রামপঞ্চায়েতে ৬ জন তৃণমূল, ৪ জন নির্দল এবং ১ জন সিপিআইএম সদস্য রয়েছেন। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে পঞ্চায়েত দখল করে তৃণমূল। সম্প্রতি আবাস প্রকল্পে নতুন তালিকা প্রকাশ হতেই ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়। প্রধান অনিমেষ মাহাতো সোমবার বলেছিলেন, তাঁরা যাঁদের যোগ্য মনে করেছিলেন তাঁদের অনেকেরই নাম নেই। কোন নিয়ম মানা হয়নি এই তালিকা তৈরির ক্ষেত্রে। তাই এই তালিকা মেনে না নিয়ে ইস্তফা দিচ্ছেন তাঁরা।
বিরোধী সদস্য (সিপিএম) পরাণ মাহাতোর বক্তব্য ছিল, নতুন আবাস তালিকা মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। তাই ইস্তফা দিতে চান। তাঁদের এই বক্তব্য সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ পেতেই নড়েচড়ে বসে তৃণমূল নেতৃত্ব। শুরু হয় আলোচনা। মঙ্গলবার প্রধান জানিয়ে দেন, দলের বিরুদ্ধে তাঁর কোনও ক্ষোভ নেই। তিনি শুধু সমস্যার সমাধান চান।
অন্যদিকে জেলা তৃণমূল চেয়ারম্যান হংসেশ্বর মাহাতো বলেন, “২০১৮ সালে যে সার্ভে হয় তারপর কেন্দ্রের নতুন নির্দেশে আবারও তালিকা ঠিকঠাক করতে হয়। যোগ্য অযোগ্যর তালিকা নতুন করে তৈরি করতে হয়। তাতে আমাদের বারি-জাগদার ৫০৮ জনের নাম আসে। গ্রামসভায় রেজলিউশন পাশও হয়। কিন্তু ৫০৮ জনের নাম থাকলেও ৪১ জনের নাম আবার বাদ পড়ে যায়। এরপরই সমস্যার সূত্রপাত।”
হংসেশ্বর মাহাতোর বক্তব্য, পঞ্চায়েত সদস্যরা এই নাম বাদ যাওয়ার কারণ জানতে বিডিওর কাছে গিয়েছিলেন। বিডিও জানান, জবকার্ডের কিছু সমস্যার জন্য সেটি নিজে থেকেই বাদ পড়ে গিয়েছে। তবে বিডিওর বক্তব্য সন্তোষজনক মনে হয়নি পঞ্চায়েত সদস্যদের। তাঁদের বক্তব্য, তাঁদের সই নেওয়া হচ্ছে। গ্রামসভায় তাঁদের উপস্থিতিতে উপভোক্তাদের নাম ঘোষণা হচ্ছে। অথচ পড়ে নাম বাদ পড়ছে যখন, সকলে এসে তাঁদেরই ধরছে। জেলা তৃণমূল চেয়ারম্যানের কথায়, “তাই ওনারা ভেবেছিলেন পদে থেকে লাভ নেই।” তবে সে সমস্যা এখন মিটে গিয়েছে বলে জানান তিনি।
ভরতপুর-২ ব্লকের মালিহাটি গ্রামপঞ্চায়েতের প্রধান ও উপপ্রধান-সহ ১৭ জন পঞ্চায়েত সদস্য বিডিওর কাছে গিয়েছিলেন ইস্তফা দিতে। যদিও প্রথমেই ১১ জন বেঁকে বসেন। জানিয়ে দেন, ইস্তফা দিচ্ছেন না। তবে প্রধান, উপপ্রধানরা তখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি। সোমবার দলের তরফে বৈঠকে বসা হয়। সেখানে বাকি ৬ জন ছিলেন। মঙ্গলবার দুপুর অবধি তাঁদেরও ইস্তফাদানের কোনও খবর পাওয়া যায়নি।