Bishnupur News: পুলিশের ভয়ে দীর্ঘক্ষণ পুকুরে ডুবে মৃত্যু, দেহ রাস্তায় শুইয়ে বিক্ষোভ স্থানীয়দের

Bishnupur Police: মৃতদেহ শুইয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তাঁরা। টায়ার ও গাছের গুঁড়ি জ্বালিয়ে চলে বিক্ষোভ। উত্তপ্ত দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুরের ভাষা চোদ্দো নম্বরে।

Bishnupur News: পুলিশের ভয়ে দীর্ঘক্ষণ পুকুরে ডুবে মৃত্যু, দেহ রাস্তায় শুইয়ে বিক্ষোভ স্থানীয়দের
কাঠগড়ায় পুলিশ, বিষ্ণুপুরে বিক্ষোভ (নিজস্ব চিত্র)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 04, 2021 | 10:47 AM

দক্ষিণ ২৪ পরগনা: আগে করতেন মাদকের ব্যবসা, এখন নিজে মাদক সেবন করতেন। খবর পেয়ে পুলিশ ধরতে এসেছিল তাঁকে। পুলিশের ভয়ে দীর্ঘক্ষণ পুকুরে ডুবে ছিলেন তিনি। আর তাতেই মৃত্যু! পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয়রা। মৃতদেহ শুইয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তাঁরা। টায়ার ও গাছের গুঁড়ি জ্বালিয়ে চলে বিক্ষোভ। উত্তপ্ত দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুরের ভাষা চোদ্দো নম্বরে।

শুক্রবার সন্ধ্যায় বিষ্ণুপুর থানার স্পেশাল পুলিশ হানা দেয় ভাষা চোদ্দ নম্বরে। শেখ সুরাজ নামে এক ব্যক্তিকে আটক করে আনার চেষ্টা করে। শেখ সুরাজকে নাগালে পেয়ে মারধর করে বলেও অভিযোগ। পুলিশের হাত থেকে নিজেকে বাঁচানোর জন্য পরিত্যক্ত পুকুরে ঝাঁপ দেন সুরাজ। সাঁতার না কাটতে পারায় পুকুর থেকে উঠতে পারেননি তিনি। পরে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, পুলিশের সামনেই জলে ডুবে মৃত্য়ু হয় ওই ব্যক্তির। স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, বারবার বলা সত্ত্বেও সুরজকে পুকুর থেকে উদ্ধার করার ব্যাপারে কোনও তত্পরতা দেখায়নি পুলিশ। সুরাজের পরিবারের লোকজন খবর পেয়ে পুকুরে মেশিন বসায় জল কমানোর সাড়ে ৩ ঘণ্টা পর সুরাজের খোঁজ মেলে।

এরপর পরিবারের সদস্যরা ও স্থানীয় বাসিন্দারা সুরাজের দেহ নিয়ে ১১৭ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। পুলিশের বিরুদ্ধে অমানবিকতার অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। টায়ার ও গাছের গুঁড়ি জ্বালায়ি চলে বিক্ষোভ।

কিন্তু কেন সুরজকে ধরতে গিয়েছিল পুলিশ?

শেখ সুরজ ৫ বছর আগে মাদকের ব্যাবসা করতেন। কিন্তু এখন তিনি ব্যবসা ছেড়ে, নিজেই মাদক সেবন করতেন। অভিযোগ, পুলিশ আচমকাই তাঁকে গ্রেফতার করতে এসেছিলেন। অথচ যারা বর্তমানে মাদকে ব্যবসা করে, তাদের গ্রেফতার করছে না পুলিশ।

পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এলাকার মানুষ। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই এলাকায় চোলাই, গাঁজা, ও মাদক বিক্রি হয়। পুলিশের কাছে এই নিয়ে একাধিকবার অভিযোগ জানিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু অভিযোগ পুলিশ এখন প্রতি মাসে টাকা নিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দিয়ে দেয়।

এদিনের ঘটনার প্রতিবাদে স্থানীয়রা জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। সকাল সাড়ে ৯ টা থেকে ১২ পর্যন্ত টানা চলে বিক্ষোভ। সমস্যায় পড়তে হয় নিত্যযাত্রীদের। অবশেষে বিষ্ণুপুর থানার বিশাল বাহিনী গিয়ে দেহ উদ্ধার করে আমতলা গ্রামীণ হসপিটালে নিয়ে যায়।

এ প্রসঙ্গে, মানবাধিকার কর্মী রঞ্জিত শূর বলেন, “পশ্চিমবাংলার পুলিশের সাধারণ ছবি। এলাহাবাদ হাইকোর্ট একটি মামলায় বলেছিল, পুলিশ হচ্ছে এদেশের সবচেয়ে সংগঠিত গুন্ডাবাহিনী। বারেবারে বিভিন্ন ঘটনায় পুলিশকে আমরা সেই ভূমিকায় দেখছি। মানুষকে পিটিয়ে মারছে। জলে ডুবে গিয়েছে, তাকে তোলেনি পর্যন্ত। লোকটাকে মেরে ফেলেছে। এটা ভয়ঙ্কর ঘটনা। একের পর এক ঘটনা ঘটে, তখন পুলিশের সাজা হয় না।” এখনও পর্যন্ত পুলিশের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

আরও পড়ুন: জাওয়াদ আসছে তবে বাংলার জন্য রয়েছে একটাই সুখবর! কী বলছেন আবহাওয়াবিদরা