বাঁধ ভেঙে ভাসিয়েছে গ্রাম, সেই ভাঙা বাঁধেই ঘর বেঁধেছেন তুষখালির সুবলারা

ইয়াসের (Cyclone Yaas) পর সাতদিন পার হয়ে গিয়েছে। তবুও দুর্ভোগ কাটেনি সন্দেশখালি-২ ব্লকের ভাঙা তুষখালির মানুষের।

বাঁধ ভেঙে ভাসিয়েছে গ্রাম, সেই ভাঙা বাঁধেই ঘর বেঁধেছেন তুষখালির সুবলারা
নিজস্ব চিত্র।
Follow Us:
| Updated on: Jun 03, 2021 | 10:17 PM

দক্ষিণ ২৪ পরগনা: কোথাও বাঁধ ভেঙে বানভাসি। কোথাও আবার বাঁধ উপচে কিংবা বাঁধের ফুটো দিয়ে জল ঢুকে গ্রামের পর গ্রাম ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছে। এ এক অদ্ভূত জলযন্ত্রণার গাঁথা। আয়লা থেকে ইয়াস, সে ছবিতে কোনও বদল আসেনি। চরম দুর্ভোগে সন্দেশখালির তুষখালি দ্বীপের মানুষ। গ্রামবাসীরা বাঁধের উপর ত্রিপল টাঙিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। ছেলে-বুড়ো-বউ-বাচ্চা সব এক ত্রিপলের তলায়। করোনা বিধি? সে সব নিয়ে ওঁদের ভাবার সময় আছে? ওঁদের তো সর্বস্বই জলে ভাসছে।

ইয়াসের পর সাতদিন পার হয়ে গিয়েছে। তবুও দুর্ভোগ কাটেনি সন্দেশখালি-২ ব্লকের ভাঙা তুষখালির মানুষের। ওপারে ধামাখালি। নৌকা পার করলেই ভাঙা তুষখালি দ্বীপ। এখানকার গ্রাম কাছারিপাড়া। গ্রামের বহু মানুষ এই মুহূর্তে নদী বাঁধের উপরই ‘ঘর’ বেঁধেছেন। ইছামতী নদীর জলে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত এই বাঁধ। গ্রামের ঘরবাড়ি, চাষের জমি, মাছের ভেড়ি সব জলের তলায়। বাঁধের উপর ত্রিপল টাঙিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন অসহায় মানুষগুলি।

আরও পড়ুন: ১৮৩ কোটি টাকার বাঁধ তৈরি হচ্ছে, তবু ভয় যেন কাটছেই না তারকেশ্বর, ধনিয়াখালির মানুষের

তাঁদের কথায়, “১০-১২ দিন ধরে আমাদের কাছারিপাড়া গ্রামের অবস্থা একইরকম। জল নামেনি। এখানে সব থেকে বড় সমস্যা হল, এটা চার নদীর মুখ। অথচ এমন নড়বড়ে বাঁধ, একটু বৃষ্টি হলেই ভয় করে। কাউকে বলেই কিছু হয় না। কেউ কিছু করেও না।” অগত্যা বাঁধের উপর ঘর বেঁধেছেন। গ্রাম জলমগ্ন। দিনের আলো থাকতে থাকতে বার বার গিয়ে এক চিলতে ঘরখানা দেখে আসেন।

বাঁধের উপর ত্রিপলে ঘর করে গাদাগাদি করে আটজন রয়েছেন সুবলা সর্দাররা। করোনার আতঙ্ক নয়, জীবন ধারনই এখন বড় চ্যালেঞ্জ তাঁদের কাছে। সুবলা জানালেন, “করোনা নিয়ে ভয় পেয়ে কী হবে। এখন তো আমাদের জীবন নিয়ে টানাটানি।” ফি বছর বাঁধ ভাঙে। সামাল দিতে বালির বস্তা ফেলা হয়। তবে পাকাপাকি এ সমস্যার সমাধান মেলে না। তাই এ জলযন্ত্রণা এখানকার মানুষের বারমাস্যা।