ঘুর্ণিঝড়ের দাপটে জঙ্গল থেকে গ্রামে ঢুকে পড়তে পারে বাঘ! ড্রোনের সাহায্যে সুন্দরবনে চলছে কড়া নজরদারি

ইয়াস (Cyclone Yaas) মোকাবিলায় সুন্দরবন (Sundorbon) জুড়ে চলছে কড়া নজরদারি। এই পরিস্থিতিতে বাঘের গতিবিধি আর জঙ্গলের ক্ষয়ক্ষতি দেখতে ড্রোনের সাহায্যে নজরদারি চালাবেন বনকর্মীরা।

ঘুর্ণিঝড়ের দাপটে জঙ্গল থেকে গ্রামে ঢুকে পড়তে পারে বাঘ! ড্রোনের সাহায্যে সুন্দরবনে চলছে কড়া নজরদারি
ড্রোনের মাধ্যমে চলছে নজরদারি
Follow Us:
| Updated on: May 25, 2021 | 11:10 AM

দক্ষিণ ২৪ পরগনা: বিশ্বের বৃহত্তম বাদাবন সুন্দরবনl আর এই সুন্দরবনের একদিকে রয়েছে ব্যাঘ্র প্রকল্প আর তার পাশেই রয়েছে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার বিভাগীয় বন আধিকারিক এর বিশেষ বনাঞ্চল।ইয়াস (Cyclone Yaas) মোকাবিলায় সুন্দরবন (Sundorbon) জুড়ে চলছে কড়া নজরদারি। এই পরিস্থিতিতে বাঘের গতিবিধি আর জঙ্গলের ক্ষয়ক্ষতি দেখতে ড্রোনের সাহায্যে নজরদারি চালাবেন বনকর্মীরা।

আয়লা থেকে বুলবুল এবং গত বছরের আমফানের কারণে বিশেষ বনাঞ্চলে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল। বনদফতরের বিট অফিস ও ক্যাম্প অফিসে থাকা কর্তব্যরত বন কর্মীরা এবার অতীতের অভিজ্ঞতাকে মাথায় রেখেই বাড়তি বন্দোবস্ত রেখেছে। ঘূর্ণিঝড়ের পরেই যাতে জঙ্গল থেকে কোনও ভাবে বাঘ বেরিয়ে লোকালয়ে প্রবেশ করতে না পারে, সেই কারণে আগেই গ্রাম লাগোয়া জঙ্গলের দিকে লাগানো নাইলনের জাল অর্থাৎ ফেন্সিংগুলি সরানো হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড়ে কোন ভাবে সেই ফেন্সিং ভেঙে পড়লে বাঘ, হরিণ বা অন্য বন্যপ্রাণী যাতে বেরিয়ে না আসে, সেইজন্যও নদী পথে টহলদারি চালাবে বন দফতরের কুইক রেসপন্স টিম। ডিএফও মিলন মন্ডলের নেতৃত্বে একটি কুইক রেসপন্স টিম পুরো জেলার পরিস্থিতির ওপর নজর রাখবে। কুলতলি এলাকায় ক্ষয়ক্ষতির দিক মাথায় রেখে অরণ্যপ্রহরী নামের একটি বড় বোট মোতায়েন থাকবে । সেই বোটে থাকবে ১৮ জন সদস্য। তাঁরা দ্রুত এলাকায় গিয়ে ভেঙে পড়া ফেন্সিং দ্রুত মেরামত করবেন।

গ্রামের কোথাও বাঘ ঢুকে পড়লে, পরিস্থিতি সামলাতে কুলতলি ও ঝড়খালি এই দুই বিট অফিসে দুটি আলাদা টিম রাখা আছে। তাঁরা তড়িঘড়ি এলাকায় গিয়ে বাঘকে ঘুমপাড়ানি গুলি ছু়ড়ে কাবু করবে। বন দফতরের বোটে ঘুমপাড়ানি বন্দুক, লোহার খাঁচা ও নাইলনের মজবুত জাল রাখা হয়েছেl এই পুরো নজরদারি চালানো হবে ড্রোনের মাধ্যমে।

শুধুমাত্র কুলতলি বিট অফিস এলাকায় দেউলবাড়ি-দেবীপুর, গুড়গুড়িয়া-ভুবনেশ্বরী ও মৈপীঠ-বৈকুণ্ঠপুর এই তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ৩৭ কিলোমিটার নাইলনের ফেন্সিং রয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা পুরোপুরি বিপর্যস্ত হতে পারে, এই আশঙ্কায় জঙ্গলের মধ্যে থাকা যে সমস্ত বনদফতরের বিট অফিস ও ক্যাম্প অফিসগুলিতে ১৫ দিনের খাদ্য সামগ্রী, ওষুধ, পানীয় জল পাঠানো হয়েছে।

বন কর্মীরা গ্রাম জঙ্গলের ফেন্সিংয়ের ক্ষয়ক্ষতি দেখার পাশাপাশি নদী বাঁধেরও খেয়াল রাখবে। দুর্গত মানুষকে উদ্ধার করতে ডিভিশনের মোট ৬ লগিং অপারেশন টিম তৈরি করা হয়েছে। সেই টিমে থাকবে ১২ জন সদস্যl বারুইপুর, ক্যানিং, ডায়মন্ড হারবার, নামখানা, রায়দিঘি, রামগঙ্গা মূলত রেঞ্জ অফিসাররাই এই টিমগুলোর নেতৃত্ব দেবেন।

আরও পড়ুন: ল্যান্ডফল স্থল থেকে দূরত্ব ২০০ কিমি! আমফানের চেয়ে শক্তিশালী ইয়াসে কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হবে কলকাতা? আর কখন থেকে?

ঝড়ে উপড়ে পড়া গাছ দ্রুত সরাতে ৭ জন করে মোট ৬ টি টিম তৈরি করা হয়েছেl প্রতিটি টিমের কাছে থাকবে বৈদ্যুতিক করাত। এছাড়া বনদফতরের দুটি ক্যাম্প রয়েছে জম্বুদ্বীপ ও চুলকাঠিতে। সেখানে মোতায়েন রয়েছে ১০ কর্মী।

♦♦♦ ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ মোকাবিলায় নবান্নের তরফে প্রকাশ করা হল হেল্পলাইন নম্বর। ঘূর্ণিঝড়ের সময়ে যে কোনও বিপদে পড়লে ফোন করুন এই নম্বরগুলিতে ১০৭০ এবং ০৩৩-২২১৪৩৫২৬।