Suicide: টাকা তছরুপে অভিযুক্ত মেয়ে! অপমানে ফেসবুক লাইভে আত্মঘাতী বাবা-মা-ভাই
South 24 pargana: পুনম দেবী ওই সংস্থার প্রায় সাড়ে নয় লক্ষ্য টাকার হিসেব দিতে পারেননি।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা: মর্মান্তিক ঘটনা। মেয়ের ঋণের টাকা শোধ করতে না পেরে চরম পরিণতি পরিবারের। ফেসবুক লাইভ করে আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন পরিবারের তিন সদস্য। ঘটনার পর এলাকায় রীতিমত শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
ঘটনাস্থান দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলপি থানার হাঁড়া। সেখানেই থাকতেন শ্যামল নস্কর (৬৩),রিতা নস্কর (৪৩) ও অভিষেক নস্কর (২৫)। শ্যামলবাবু ও রীতা দেবীর এক মেয়েও রয়েছেন। তাঁর নাম পুনম দাস। পুনম দেবীর শ্বশুরবাড়ি ডায়মন্ডহারবার থানার সুলতানপুরে।
সূত্রের খবর, একটি মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর প্রধান ছিলেন পুনম। অভিযোগ, পুনম দেবী ওই সংস্থার প্রায় সাড়ে নয় লক্ষ্য টাকার হিসেব দিতে পারেননি। এরপর থেকেই টাকা ফেরতের জন্য দলের সদস্য ও গ্রামবাসীরা তাঁর উপর চাপ সৃষ্টি করতে থাকে। এই নিয়ে একাধিকবার ঝামেলা, অশান্তিও তৈরি হয়। দীর্ঘ দু’মাস ধরেই চলছিল এই টাকা নিয়ে গন্ডগোল।
অভিযোগ, এরপর শনিবার রাতে স্থানীয় কিছু মানুষ এসে পুনমদেবীকে অশ্রাব্য ভাষায় গালাগালি করতে শুরু করে ও তাঁর উপর মানসিক নির্যাতন চালান। কিন্তু মেয়ের উপর এই ধরনের অত্যাচার সহ্য করতে পারেনি গোটা পরিবার। এরপরই মর্মান্তিক এই সিদ্ধান্ত নেয় পুনমের মা, বাবা ও ভাই।
রবিবার সকালে সপরিবারের বকখালিতে গিয়ে বনবিবির মন্দির থেকে কিছুটা দূরে সমুদ্রতটের জঙ্গলের ভেতর থেকে ফেসবুক লাইভ করে পুনমের ভাই অভিষেক। তিনি জানান, টাকা তছরুপে তাঁর দিদির কোনও ভূমিকা নেই। ব্যাঙ্কের ম্যানেজার ও স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মাথারা জড়িত। বিচার না পেয়ে মিথ্যা অপবাদ থেকে বাঁচতে এই চরম সিদ্ধান্ত নিচ্ছে তাঁরা। আত্মঘাতী হওয়ার আগে তিনজন জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
ওই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর এক মহিলা সদস্য বলেন, “যেই বিষয়টি বলা হচ্ছে পুনম দাসকে মারা হয়েছে। সেটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। কারণ গোটা গ্রামের মানুষজন যদি ওকে মারধর করত তাহলে কি পুনম জীবিত থাকতেন?পুলিশ এসে আজ অনেক মহিলাকে তুলে নিয়ে গেছে। কিন্তু কতজনকে তুলে নিয়ে যাবে ওরা? প্রত্যেকেই তো একই কথা বলবে” আরও এক মহিলা অভিযোগ করে বলেন, “আমরা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর বারোজন মেয়ে একটা দল চালাই। এইবার এখানে যে টাকা উঠত সব টাকা পুনম নিত। সবটাকার লেনদেন ও করত। এরপর আমরা একদিন বললাম টাকার বিষয়টা আমাদের বুঝিয়ে বলো। মিটিং ডাকো। আমাদের সবটা বুঝিয়ে বলো। কিন্তু ও কোনও হিসেব করতে দেখাতে পারেনি। এখন ব্যাঙ্ক আমাদের কাছ থেকে চার লাখ টাকা পায়। আমরা কোথা থেকে দেব এতটাকা? আজকে দুমাস ধরে এই গন্ডগোল চলছিল। এরপর পুলিশ আসে। তখন পুলিশকে ও বলে যে সোমাবার টাকা দিয়ে দেবে। কিন্তু পরে দেখি জামা কাপড় গুছিয়ে ও বাপের বাড়ি চলে যায়। জানি না সেখানে গিয়ে কী বলেছে। এরপরই খবর পাই ওর পরিবার আত্মহত্যা করেছে।”
ঘটনার পর ডায়মন্ডহারবার থানার পুলিশ এসে গোটা বিষয়টির তদন্ত করে। অন্যদিকে পুনম দাস ও তাঁর স্বামী মিঠুন দাসকে আটক করেছে পুলিশ। তাঁদের অভিযোগের ভিত্তিতে ওই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর পাঁচজন মহিলাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: Indigo Flight: করোনাকালে কমছে ইন্ডিগোর উড়ান, আগাম টিকিট কাটা থাকলে আপনার জন্য রয়েছে বিশেষ সুযোগ