Diwali 2021: এবারও কি আলোর উৎসবে অন্ধকারেই ব্যবসা? চিন্তা গ্রাস করছে নুঙ্গির বাজি ব্যবসায়ীদের

Covid 19: এক সময় এলাকায় যে বাজি তৈরির কারখানা ছিল, এখন তা বন্ধ। দুই ছেলে মেয়ে নিয়ে সংসার চালাতে তাই বাজি বাজারের মনোজ মণ্ডল এখন মজুরের কাজ করছেন।

Diwali 2021: এবারও কি আলোর উৎসবে অন্ধকারেই ব্যবসা? চিন্তা গ্রাস করছে নুঙ্গির বাজি ব্যবসায়ীদের
কোভিডে বাজি নিষিদ্ধ হয়েছিল গত বছরই। সব আয়োজন করেও আলোর উৎসব দীপাবলির আগেই আঁধার নেমে এসেছিল বাজি ব্যবসায়ীদের ঘরে। ফাইল চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 23, 2021 | 9:42 AM

দক্ষিণ ২৪ পরগনা: কোভিডে বাজি নিষিদ্ধ হয়েছিল গত বছরই। সব আয়োজন করেও আলোর উৎসব দীপাবলির আগেই আঁধার নেমে এসেছিল বাজি ব্যবসায়ীদের ঘরে। এ বছর কি হবে? দুর্গাপুজোয় তো ভালই ভিড় হয়েছে। কালীপুজোয় কি আঁধারে আলো জ্বলবে, প্রশ্ন বাজি ব্যবসায়ীদের মনে।

গত বছর কালীপুজোর আগে হঠাৎই হাইকোর্টের রায়ে বাজি পোড়ানো নিষিদ্ধ হয়ে যায়। মালপত্র মজুত করে বিপদের মুখে পরেন রাজ্যের লক্ষাধিক বাজি বিক্রেতা। এ বছর তাই কোনও জিনিস নতুন করে বানাননি তাঁরা। দক্ষিণ ২৪ পরগনার নুঙ্গির বাজি ব্যবসায়ী সুখদেব নস্কর বলেন, আপাতত তাঁরা চান গত বছরের বাজিগুলি অন্তত এবার বিক্রি হোক।

বাজি পোড়ানোর ফলে যে ধোঁয়া বের হয় তার ফলে অনেকেরই শ্বাস নিতে সমস্যা হয়। এ নিয়ে পরিবেশবিদরাও বার বার সচেতন করেছেন। বিশেষ করে কোভিডকালে এই ধোঁয়া যে প্রাণঘাতী পর্যন্ত হয়ে উঠতে পারে সে কথাও বলেছেন চিকিৎসকরা। কেউ যদি করোনা আক্রান্ত হন, তাঁর শ্বাসযন্ত্রের জন্য অত্যন্ত ভয়াবহ হতে পারে বাজির ধোঁয়া। তাই গতবার আদালত কালীপুজোয় বাজি পোড়ানোয় নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এবারও উৎসবে যাতে কোনও বাজি না ফাটানো হয়, তার উপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আদালতে মামলা দায়ের হয়েছে।

তবে বাজি ব্যবসায়ীরা শুধু কোভিডকেই দোষ দিচ্ছেন না। ‘পরিবেশ বান্ধব’ সবুজ বাজি বিক্রি করা যাবে বলে সায় দিয়েছে শীর্ষ আদালত। কিন্তু সেই বাজি তৈরি করতে পারছেন না রাজ্যের বিক্রেতারা। এর জন্য সরকারের সদিচ্ছার অভাবকেই দুষছেন তাঁরা। সাধারণত ন্যাশনাল এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট এই বাজির জন্য সার্টিফিকেট দেয়। কিন্তু যাঁদের ফায়ার লাইসেন্স নেই তাঁদের এই বাজি কিনতে বেগ পেতে হয়।

নুঙ্গির যে অলিগলিতে পুজোর এই মাসে সর্বত্রই বাজি নজরে পড়ত, সেই গলিতেই এখন বাজির দোকান খোঁজ করে যেতে হচ্ছে। গত বছরে হাইকোর্টের রায়ের পর বাজি নিষিদ্ধ হয়েছিল এ রাজ্যে। এ বছর এখনও কোনও নির্দেশ না এলেও হঠাৎ কি পরিস্থিতি হয়, এই আশঙ্কায় নতুন করে আর বাজি তৈরি করছে না নুঙ্গির বাজি বাজার। গত বছর ব্যবসা মার খেয়েছে। এ বছরও কোনও আশা নেই। ফলে নিজেদের পুরনো ব্যবসা ছেড়ে দিচ্ছেন অনেকেই। বদলাচ্ছে বাজি বাজারের চরিত্র।

এক সময় এলাকায় যে বাজি তৈরির কারখানা ছিল, এখন তা বন্ধ। দুই ছেলে মেয়ে নিয়ে সংসার চালাতে তাই বাজি বাজারের মনোজ মণ্ডল এখন মজুরের কাজ করছেন। শুধু মনোজই নন, এমন অনেকেই রয়েছেন, যাঁরা দীপের উৎসবের মধ্যেও আশার আলো না দেখে পেটের তাগিদে বদলাচ্ছেন পেশা। কেউ এখন মুদিখানার দোকান খুলেছেন। কারও আবার রাস্তার ধারে চায়ের দোকান। বিকম পাশ করেও চাকরি না পেয়ে বাজির দোকান চালাতেন এলাকার তরুণ কৌশিক মণ্ডল। দু’বছর ধরে তো তাও বন্ধ। ক্রমেই কঠিন থেকে কঠিনতর হচ্ছে বেঁচে থাকার লড়াই।

গতবার কালীপুজো, দীপাবলির পাশপাশি ছটপুজোতেও বাজি ফাটানোয় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল আদালত। এবারও সেই নির্দেশই বহাল থাকে কি না সেদিকেই নজর নুঙ্গির বাজি বাজারের সদস্যদের। একটাই খেদ, এবারও বাজার বন্ধ থাকলে খেয়ে পরে বাঁচার লড়াইটাই ভয়ঙ্কর রূপ নেবে।

আরও পড়ুন: Landslide in Kalimpong: দুর্যোগ কাটলেও বিদ্যুৎ, পানীয় জলের কষ্ট পাহাড়ের বিভিন্ন জায়গায়