Abhishek Banerjee: ‘প্রার্থী খুঁজতে তো দেড় মাস সময় লেগে গেল’, ডায়মন্ড হারবার থেকে বিজেপিকে একের পর এক খোঁচা অভিষেকের

Abhishek Banerjee: অভিষেক বলেন, "আজ রবিবার যেভাবে মানুষ যেভাবে আমাকে আশীর্বাদ করতে এসেছেন, আমি কৃতজ্ঞ। আমি ডায়মন্ড হারবারে যখন যা কথা দিয়েছি, তা রেখেছি। দু'টো বিধানসভার অন্তর্গত তিনটে ব্লক নিয়ে মাত্র এই সভা। বজবজ-২ ব্লকের ১১টা অঞ্চল, বিষ্ণুপুর-২ ১১টা অঞ্চল, বজবজ-১ ব্লকের ৬টা অঞ্চল। ২৮টা অঞ্চল নিয়ে আজকের এই মিটিং। অথচ সে সংখ্যক মানুষ এসেছেন, আমি আপ্লুত।"

Abhishek Banerjee: 'প্রার্থী খুঁজতে তো দেড় মাস সময় লেগে গেল', ডায়মন্ড হারবার থেকে বিজেপিকে একের পর এক খোঁচা অভিষেকের
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।Image Credit source: Facebook
Follow Us:
| Updated on: Apr 28, 2024 | 6:56 PM

ডায়মন্ড হারবার: ডায়মন্ড হারবারের সাতগাছিয়ায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসভা। এই প্রথম ভোটের প্রচারে নিজের সংসদীয় কেন্দ্রে অভিষেক। তিনি বলেন, “যাঁরা রাস্তায় দাঁড়িয়েছিলেন, আমি আসার সময় বলছিলেন, আপনি তো সারা বছর থাকেন। ভোটের সময় আপনার আসার দরকার নেই। আমি বললাম, না আমি ভোট চাইতে আসিনি। আমি আগামী সপ্তাহে ৭-১০ দিনের মধ্যে মনোনয়ন জমা দেব। তার আগে বড়দের আশীর্বাদ নিতে এসেছি, সমবয়সিদের ভালবাসা নিতে এসেছি। তা না হলে মনোনয়ন জমা দিলেও কোথাও একটা অসম্পূর্ণ থেকে যাবে।”

এদিন প্রচারসভা থেকে আর কী কী বললেন অভিষেক—

  1. ৪০০ পারের গল্প দিচ্ছে তো, ২০০য় গাড়ি আটকে যাবে। ৪ তারিখ ১০ বছর পর পরিবর্তনের যে সরকার তৈরি হবে, সেখানে অগ্রণী ভূমিকা নেবে তৃণমূল ও বাংলার মানুষ।
  2. মানুষ ভোট দেবে, ইডি সিবিআই তো ভোট দেবে না। আমি তো বলেছিলাম এত রাগ যখন আমার বিরুদ্ধে, তাহলে ইডি সিবিআইয়ের ডিরেক্টরকে ডায়মন্ড হারবার থেকে দাঁড় করান। মেঘনাদ না হয়ে সম্মুখ সমরে আসুন। ভোট ঘোষণা হয়েছে ১৬ মার্চ, বিজেপি প্রার্থী ঘোষণা করছিল ১৬ এপ্রিল। ভোট কীভাবে কাটা যায় অপেক্ষা করছিল। আমি তো বলেছি যে খুশি দাঁড়াক। যারা এলাকা চেনে না, ক’টা ব্লক, ক’টা পুরসভার ক’টা ওয়ার্ড বলতে পারবে না, তারা নাকি অভিষেককে খেদাবে। আমি বলব, ৩ নম্বরে ছিল, ৩ নম্বরেই থাকবে। মানুষকে দুর্বল ভাবা, পারবে না। বাড়ির প্রতিশ্রুতি এই মঞ্চ থেকেই দিয়ে গেলাম। এ বছর শেষের আগেই।
  3. আজ যারা ভোট চাইতে আসছে তাদের মুখের ভাষা কী! বলছে ডায়মন্ড হারবার থেকে অভিষেককে খেদাও, ডায়মন্ড মডেল খেদাও। কী করে খেদাবে? মানুষের মনে মাথায় আছি। খেদাতে এলে মুরগি হয়ে দিল্লিতে ফিরে যাবে। যেভাবে ২০১৯ সালে হয়েছিল। সেবার নিরঞ্জন রায় দক্ষিণ দিনাজপুর থেকে এসেছিলেন, হিমন্ত বিশ্বশর্মা অসম থেকে এসেছিলেন। ঘাঁটি গেড়ে বসেছিলেন আমাকে হারাতে। কিন্তু এখানকার মানুষ ৭৪ হাজার ভোটের ব্যবধান ৩ লক্ষ ২১ হাজারে নিয়ে গিয়ে প্রমাণ করেছিলেন এই মাটি তৃণমূলের। এবার ৪-৫ লাখ ব্যবধান হলেও অবাক হব না। আমি কথা দিচ্ছি, আগামী দিনে দ্বিগুণ কাজ করব।
  4. বিজেপি লক্ষ্মীর ভাণ্ডার বন্ধ করতে চায়। কোচবিহারে বিজেপির নেত্রী বলেছেন, অথচ তাঁর বিরুদ্ধে বিজেপি কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। তার মানে ধরে নিতে হবে যেভাবে ১০০ দিনের টাকা, আবাসের টাকা বন্ধ করেছেন, লক্ষ্মীর ভাণ্ডারও বন্ধ করতে চান? আমরাও বলে রাখি, যতদিন আমরা ক্ষমতায় আছি, সরকার আছে, বাংলায় তৃণমূল আছে, লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের আশেপাশে আসতে দেবো না। এটা তৃণমূলের গ্যারান্টি।
  5. চার বছর ধরে কেন্দ্র আবাসের টাকা দেয়নি। তবে এখানকার সবাইকে আশ্বস্ত করছি, ফল ঘোষণার পর ৬ তারিখ আদর্শ আচরণ বিধি উঠে যাওয়ার ৬ মাসের মধ্যে যারা বাড়ির জন্য আবেদন করেছেন, সবার বাড়ির প্রথম কিস্তির টাকা পাঠিয়ে দেব। এ বছর শেষ হওয়ার আগে টাকা পাঠিয়ে দেব। এটা আমার গ্যারান্টি।
  6. আমি কথা দিলে তা কোনও সরকারের উপর ভর করে কথা দিই না। আমি জানি আমি কী করতে পারি। আমার সভায় যারা এসেছেন, আমার গ্যারান্টি আমি কথা দিচ্ছি বার্ধক্যভাতা ‘শ্রদ্ধার্ঘ’ আপনারা পাচ্ছেন, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, স্বাস্থ্যসাথী, বিনা পয়সায় রেশন পাচ্ছেন একইভাবে আবাসের টাকা পাবেন।
  7. যাদের পাঁচ বছর খুঁজে পাওয়া যায়নি, এখন ভাষণ দিতে আসছে। আসুক আপত্তি নেই। কিন্তু যাদের সরকার ১০ বছর কেন্দ্রে ক্ষমতায় আমার ডায়মন্ড হারবারের জন্য কী করেছে সে হিসাব আমার চাই। মানুষকে হিসাব দিতে হবে।
  8. আমার কাজকে কটাক্ষ করে ডায়মন্ড মডেল বলে বাকিদের থেকে দূরত্ব তৈরির চেষ্টা করে তাদের বলব ডায়মন্ড মডেল পথ দেখিয়েছে, আগামিদিনে ৪১ লোকসভাতেই এই ডায়মন্ডের উন্নয়ন মডেল বাস্তবায়িত করে দেখাব।
  9. যারা আমার বিরুদ্ধে লড়াই করছেন, তাঁদের প্রতি পূর্ণ সম্মান জানিয়ে বলছি, আজ তৃণমূলের বিরুদ্ধে খালি ষড়যন্ত্র, চক্রান্ত না করে সিপিএম-বিজেপি যদি খবরের কাগজের প্রথম পাতায় বিজ্ঞাপন দিত তাহলে যে প্রার্থীদের দাঁড় করিয়েছে তার থেকে ভাল প্রার্থী পেত।
  10. যারা আজ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে এসেছে অনেক বড় বড় ভাষণ দিয়েছিল। অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্যায় ৩ নম্বর ৪ নম্বর হবে। বলেছিলাম, আমি গণতন্ত্রে রাজনীতির ছাত্র, মানুষের ক্ষমতায় বিশ্বাস করি, কোনও রাজনেতার ক্ষমতায় নয়। তাই যে ডায়মন্ড হারবার নিয়ে পাঁচ বছর ধরে কটাক্ষ করেছিল, প্রার্থী খুঁজতে দেড় মাস লেগে গিয়েছে। এটা আমার সাফল্য বা জয় নয়, আপনাদের জয়। অনেকে আমাকে বলেন, ডায়মন্ড হারবারের মানুষের সত্যি খুব ভাল ভাগ্য এমন একজন সাংসদ পেয়েছেন। আমি বলি ভুল, আমার ভাগ্য ভাল। আমি আগের জন্মে নিশ্চয়ই আগের জন্মে কোনও ভাল কাজ করেছিলাম, তাই এখানকার মানুষকে পেয়েছি।
  11. কোভিডের সময় ২১টা কমিউনিটি কিচেন খুলে আমরা কাজ করেছি। প্রায় ১৪ লক্ষ লোকের বাড়িতে আমাদের ১০ হাজার সৈনিক জীবন বিপন্ন করে মানুষের বাড়িতে খাবার পৌঁছে দিয়েছিলাম। কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ে একদিনে ৫০ হাজার টেস্ট করে দৃষ্টান্ত তৈরি করি এখানে।
  12. বিজেপি প্রার্থী, সিপিএম প্রার্থী যাঁরা লড়ছেন, সকলের গণতন্ত্রে লড়ার অধিকার আছে। আপনাদের একটা কথাই বলতে চাই, যখন আপনারা ঘুমিয়েছেন, ডায়মন্ড হারবারে কাজ হয়েছে।
  13. বিজেপি ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পর ডায়মন্ড হারবারে গত ১০ বছরে একটা মানুষের জন্য ১০ পয়সার সাহায্য সহযোগিতা পাঠায়নি। তারপরও দেশের মধ্যে ডায়মন্ড হারবার ১ নম্বর। ১০ বছরে ৫ হাজার ৫৮০ কোটি টাকার কাজ করেছি। দেশের সর্ববৃহৎ জলের প্রকল্প এখানে হয়েছে। ৮০ শতাংশের বাড়িতে জল গিয়েছে। বাকি ২০ শতাংশ এ বছর শেষ হওয়ার আগে যাবে।
  14. সকলে ভোট দিলে সাতগাছিয়া আর বজবজ থেকেই দেড় লক্ষের ব্যবধানে তৃণমূল জিতবে। রাস্তায় কত লোক দাঁড়িয়ে। এক একটা পরিবার থেকে ভোট দিলেই তো ভোকাট্টা।
  15. আজ রবিবার যেভাবে মানুষ আমাকে আশীর্বাদ করতে এসেছেন, আমি কৃতজ্ঞ। আমি ডায়মন্ড হারবারে যখন যা কথা দিয়েছি, তা রেখেছি। দু’টো বিধানসভার অন্তর্গত তিনটে ব্লক নিয়ে মাত্র এই সভা। বজবজ-২ ব্লকের ১১টা অঞ্চল, বিষ্ণুপুর-২ ১১টা অঞ্চল, বজবজ-১ ব্লকের ৬টা অঞ্চল। ২৮টা অঞ্চল নিয়ে আজকের এই মিটিং। অথচ সে সংখ্যক মানুষ এসেছেন, আমি আপ্লুত।
  16. আপনারা ডায়মন্ড হারবারের দায়িত্বটা নেবেন। বাকি ৪১টার দায়িত্ব আমার। আমি বাকি ৪১টায় যাতে সময় দিয়ে বাংলা বিরোধীদের বাংলা ছাড়া করার লড়াইয়ে মমতার বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত শক্ত করে বিরোধীদের আগামিদিনে বিতাড়িত করতে পারি, সেই অনুমতি নিতে এসেছি।
  17. পরিবারের লোকের কাছে কেউ ভোট যায় না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন দক্ষিণ কলকাতা ভোটে লড়তেন, জিততেন, তখন যেমন পাড়ার লোক, এলাকার লোকেদের কাছে ভোট চাইতে যেতেন না, সারা বছর থাকতেন। আমিও আজ ভোট চাইতে আসিনি। শুধু অনুমতি নিতে এসেছি। ডায়মন্ড হারবার বাংলার ৪২ লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে তৃণমূলের সবথেকে শক্তিশালী ঘাঁটি।