Sundarban: ভাসতে পারে সুন্দরবন! জারি ‘জাওয়াদ’ সতর্কতা

Weather Update: বৃহস্পতিবার সকাল থেকে মৎস্য দফতরের পক্ষ থেকে কাকদ্বীপ, ডায়মন্ড হারবার, নামখানা, ফ্রেজারগঞ্জ-সহ সাগর ও পাথরপ্রতিমার উপকূল এলাকায় মাইক দিয়ে সতর্কতা প্রচার শুরু করা হয়েছে।

Sundarban: ভাসতে পারে সুন্দরবন! জারি 'জাওয়াদ' সতর্কতা
সুন্দবনে জারি সতর্কতা, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 02, 2021 | 2:17 PM

সুুন্দরবন ও পশ্চিম মেদিনীপুর: ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘জাওয়াদ’। তার আগেই বিশেষ প্রস্তুতি নিচ্ছে প্রশাসন। রাজ্যপুলিশের পক্ষ থেকে উপকূলের জেলাগুলিতে বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে। সুন্দরবনে বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে। চলছে মাইকিং।

বরাবরই বঙ্গে কোনও নিম্নচাপ বা ঘূর্ণিঝড়ের আগমন ঘটলে দেখা গিয়েছে, সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত হয় উপকূলের এলাকাগুলি। সেই তালিকায় রয়েছে বিস্তীর্ণ সুন্দরবন অঞ্চল, অন্যদিকে,  দামোদরের নিম্ন উপত্যকা। ঘাটাল, দাসপুর-সহ একাধিক এলাকা বন্যা কবলিত হয়ে পড়ে। এদিকে, বঙ্গে এখন শীতের মরসুম। চাষের সময়। নিম্নচাপের প্রভাবে চাষেও ক্ষতি বিস্তর। তাই আগেভাগেই বিশেষ ব্যবস্থা নিচ্ছে প্রশাসন।

সূত্রের খবর, সতর্কবার্তা পাওয়ার পর আজ, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে মৎস্য দফতরের পক্ষ থেকে কাকদ্বীপ, ডায়মন্ড হারবার, নামখানা, ফ্রেজারগঞ্জ-সহ সাগর ও পাথরপ্রতিমার উপকূল এলাকায় মাইক দিয়ে সতর্কতা প্রচার শুরু করা হয়েছে। শুক্রবার থেকে রবিবার পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সমস্ত দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে আগাম বিপর্যয় মোকাবিলা সংক্রান্ত বৈঠক করবে।

আগামিকাল শুক্রবার সন্ধের মধ্যে জেলার সুন্দরবন উপকূল এলাকায় সিভিল ডিফেন্স ও বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর বিশেষ দল পৌঁছে যাবে। ইয়াসের পর সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ নদী ও সমুদ্রের বাঁধ ধাপে ধাপে মেরামত করা হলেও টানা বর্ষার মধ্যে একের পর এক কোটাল ও একের পর এক নিম্নচাপের জেরে প্রবল বৃষ্টিতে বাঁধের মাটি ক্ষয় হয়েছে। ফলে সাগরদ্বীপ, পাথরপ্রতিমা, নামখানা, মৌসুনি ও ঘোড়ামারা দ্বীপের বেহাল নদী ও সমুদ্র বাঁধগুলোতে এবারের দুর্যোগে ভাঙন দেখা দিতে পারে।

দুর্যোগের আগেই উপকূল এলাকার বাসিন্দাদের সতর্ক করার পাশাপাশি তাঁদেরকে আগেভাগে উঁচু এলাকায় সরিয়ে নিয়ে আসা হবে। ইতিমধ্যে কাকদ্বীপ মহকুমার চারটি ব্লকের সাইক্লোন সেন্টারগুলি খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন।

এখন নিম্নচাপ আন্দামান সাগরে রয়েছে। সেটি খানিকটা শক্তি বাড়িয়ে সুস্পষ্ট নিম্নচাপে পরিণত হবে। এটি আজই আন্দামান থেকে বঙ্গোপসাগরের দিকে চলে যাবে। এবং এটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে। শুক্রবারের মধ্যে একটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এটি বঙ্গোপসাগরের মধ্য অঞ্চলে থাকবে। শনি-রবিরার এটি উপকূলের দিকে এগোতে থাকবে।

শুক্রবার থেকেই বেশ কয়েকটি জেলা, দুই ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়ায় হালকা বৃষ্টি হতে পারে। ৬ জেলায় শনিবার ভারী বৃষ্টি। রবিবার মূল দুর্যোগের আশঙ্কা। এই ঘূর্ণিঝড় অন্ধ্র-ওড়িশা উপকূলের দিকে এগোবে। কিন্তু সেখান থেকে এটি স্থলভাগে ঢুকে যাবে কিনা, তা সুস্পষ্ট নয়। এক হতে পারে, স্থলভাগে ঢুকে খানিকটা শক্তি হারিয়ে বাংলার দিকে এল। অথবা স্থলভাগে না ঢুকেই সমুদ্র পথ ধরে বাংলায় আছড়ে পড়তে পারে। ওড়িশার কাছাকাছি আসার পর ঘূর্ণিঝড় একটা ‘টার্ন’ নিতেই পারে। সেখানেই বাংলার জন্য দুঃসংবাদ। কলকাতা-সহ ৭ জেলায় অতি ভারী বর্ষণের আশঙ্কা করা হয়েছে। ওই দিন সর্বোচ্চ ৮০ কিমি বেগেও ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে উপকূলবর্তী এলাকায়।

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, এবছর আন্দামান ও বঙ্গোপসাগরে বারবার নিম্নচাপ তৈরি হচ্ছে। যদি নিম্নচাপ একই জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকে,তাহলে শক্তি বৃদ্ধি করবেই। এক্ষেত্রেও সেটি হবে। এবছর একটানা শীতের মরসুমও নেই। তার একটাই কারণ জলীয় বাষ্প। শীতের আমেজও এবার কম থাকবে। এক টানা কনকনে শীতের সম্ভাবনা কম।

ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রস্তুত কলকাতা পুরসভাও। আপাতত ৭৬ টি পাম্পিং স্টেশনকে সজাগ থাকতে বলা হয়েছে। পোর্টেবল পাম্পিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে। কলকাতা পুরসভার কন্ট্রোল রুম খোলা থাকবে।

আপাতত কোন পর্যায়ে রয়েছে নিম্নচাপ, দেখুন এক নজরে

♦ আপাতত মধ্য আন্দামান সাগরে লো প্রেশার হিসেবে আছে। ♦ ২ তারিখ পশ্চিম দিকে এসে ডিপ্রেশন ফর্ম করছে ♦ ৩ তারিখ পশ্চিম, উত্তর পশ্চিমে মুভ করে মধ্য বঙ্গোপসাগরে সাইক্লোন ফর্ম করবে। ♦ ৪ তারিখ অন্ধ্রপ্রদেশের উত্তর এবং ওডিশা উপকুলের কাছে আছড়ে পড়বে ঘূর্ণিঝড় হিসেবে।

♦ ৩ তারিখ থেকে উপকূলবর্তী জেলা দুই ২৪ পরগণা, দুই মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, হাওড়ায় অল্প বৃষ্টি শুরু হবে। ♦ ৪ তারিখ বৃষ্টির দাপট বাড়বে সমস্ত জেলাতেই বৃষ্টি হবে। উপকূলবর্তী জেলাগুলোয় (কলকাতা, দুই ২৪ পরগণা, দুই মেদিনীপুর, হাওড়া, ঝাড়গ্রাম) ভারী বৃষ্টি হতে পারে।

♦ ৫ তারিখ বৃষ্টির দাপট বাড়বে। উপকূলবর্তী জেলাগুলোয় ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি এবং সঙ্গে ৪০-৫০ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়ার সম্ভাবনা। ♦ ৬ তারিখও বৃষ্টিপাত হবে।

♦ উত্তরবঙ্গের ক্ষেত্রে মালদা, দুই দিনাজপুর, কালিম্পঙে বৃষ্টি হতে পারে। ♦ ৩ তারিখ থেকে রাতের তাপমাত্রা বাড়বে ৩-৪ ডিগ্রি করে।

আরও পড়ুন: Viral Video: ‘জাতীয় সঙ্গীতকে জ্ঞাতসারেই কি অবমাননা করলেন মুখ্যমন্ত্রী?’ প্রশ্ন বিজেপির