Bhangar: নওশাদের বাড়ির পাশেই ISF কর্মীদের ঘাসফুলে যোগদান, আগেভাগেই কড়া নজর প্রশাসনের

TMC: শুক্রবার সকালেই মাঝেরহাটে বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকীর বাড়ির পাশেই তৃণমূলের একটি যোগদান কর্মসূচি রয়েছে। তৃণমূল সূত্রে খবর, এই কর্মসূচিতে আইএসএফ থেকে প্রায় ৩০০ জন কর্মীর তৃণমূলে যোগ দেওয়ার কথা।

Bhangar: নওশাদের বাড়ির পাশেই ISF কর্মীদের ঘাসফুলে যোগদান, আগেভাগেই কড়া নজর প্রশাসনের
তৃণমূলের জনসংযোগে জোর, নালিশ নওশাদের, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 12, 2021 | 9:32 AM

দক্ষিণ ২৪ পরগনা: ধীরে ধীরে বদলাচ্ছে ভাঙড়ের রাজনৈতিক সমীকরণ। কিছুদিন আগেই আব্বাস সিদ্দিকীর সভায় যোগদানকে কেন্দ্র করে আইএসএফ (ISF) ও পুলিশের মধ্যে কার্যত খণ্ডযুদ্ধ দেখা যায় ভাঙড়ে। তারপরে, ফের শুক্রবার সকালে, বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকীর বাড়ির পাশেই তৃণমূলের (TMC) যোগদান কর্মসূচি। সেই মাঝেরহাটেই। ফলে, সকাল থেকেই ধীরে ধীরে  ভাঙড়ে চড়ছে উত্তেজনার পারদ।

সূত্রের খবর, আজ, শুক্রবার সকালেই মাঝেরহাটে বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকীর বাড়ির পাশেই তৃণমূলের একটি যোগদান কর্মসূচি রয়েছে। তৃণমূল সূত্রে খবর, এই কর্মসূচিতে আইএসএফ থেকে প্রায় ৩০০ জন কর্মীর তৃণমূলে যোগ দেওয়ার কথা। শাসক শিবির সূত্রে জানানো হয়েছে, ওই এলাকায় সকলেই তৃণমূলেরই লোক। কিন্তু, বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে একটি ধর্মীয় ভাবাবেগকে আশ্রয় করেই  কিছুজন আইএসএফে যোগ দেয়। এখন তাঁরা নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে তৃণমূলে ফিরছেন।

পাল্টা, আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকীর কথায়, “তৃণমূলে আইএসএফের কেউ যোগ দেবে না। হয়ত বাইরের কেউ যোগ দেবে। আর সৌজন্যের রাজনীতি করা উচিত। আমার আইএসএফ ভাইদের বলব, রাজনৈতিক দল যেখানে ইচ্ছে সভা করবে। অশান্ত করার জন্য , এলাকা উত্তপ্ত করার জন্য তৃণমূল এটা করেছে। তবে, আপনারা শান্ত থাকুন। শান্তিপূর্ণভাবে সভা করতে দিন।”

এদিকে, তৃণমূলের যোগদান কর্মসূচির খবর পেয়েই আগেভাগে বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে প্রশাসন। এলাকাজুড়ে চলছে পুলিশি টহলদারি। কোনওরকম অপ্রীতিকর অবস্থা যাতে না হয়, সেদিকে বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে বলেই জানিয়েছে প্রশাসন। বিধায়কের বাড়ির পাশেই আইএসএফ ঘাঁটিতে এভাবে তৃণমূলের যোগদান কর্মসূচির অনুষ্ঠান করা যে কিছুটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এমন যুক্তি অস্বীকার করতে পারছেন না রাজনৈতিক মহলের একাংশ।

প্রসঙ্গত,  কিছুদিন আগেই পদ্মপুকুরের এই মাঠেই সভা করতে আসার কথা ছিল আইএসএফের প্রধান পৃষ্ঠপোষক আব্বাস সিদ্দিকীর। কিন্তু, সেই সভা নিয়ে কার্যত পুলিশ ও আইএসএফ সমর্থকদের মধ্যে খণ্ডযুদ্ধ বেধে যায়। রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে ভাঙড়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে লাঠিচার্জ থেকে শুরু করে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায়  পুলিশ। চলে ব্যাপক ধরপাকড়। অনুমতি ছাড়া কোভিডকালে জমায়েত করা যাবে না এমনটাই স্পষ্ট জানানো হয় প্রশাসনের পক্ষে। যদিও, পাল্টা ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী দাবি করেন, সভার অনুমতি চেয়ে পুলিশকে মেইল চিঠি দেওয়া হয়েছিল। মেইলও পাঠানো হয়েছিল।

যদিও, ভাঙড়ের তৃণমূল নেতা কাইজার আহমেদ দাবি করেন, এই ধরনের কোনও সভার কথা তিনি জানেন না। পাশাপাশি, তাঁর আরও মন্তব্য, “ওই সভা করার জন্য় পুলিশের থেকে কোনও অনুমতি নেয়নি ভাইজানের দল। তাই সভা করতে বাধা দেওয়া হয়েছে। এর সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই।”

এদিকে ভাঙড়ে ধীরে ধীরে বদলাচ্ছে রাজনৈতিক সমীকরণ। ক্রমেই কোণঠাসা হচ্ছে সংযুক্তো মোর্চা। একদা ‘লালদূর্গে’ ক্রমেই শক্তি বাড়াচ্ছে ঘাসফুল।  আইএসএফ যে ভাঙড়কে ঘিরে গোটা রাজ্যে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্ঠা করেছিল ভাঙড়ের সেই গড় তাসের ঘরের মত ভেঙে পড়ছে। ভাঙড় বিধানসভা এলাকার পোলেরহাট ভোগালি সানপুকুর প্রাণগঞ্জ নারায়ণপুর-সহ একাধিক অঞ্চলে আইএসএফ ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিচ্ছে কর্মী সমর্থকরা।

তাঁদের মনবল ফেরাতে আব্বাস সিদ্দিকি কি ভাঙড়ে সভা করা চেষ্টা করছে? উঠছে প্রশ্ন। দীর্ঘদিন ভাঙড় বিধানসভা কেন্দ্রের আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি বিধানসভা এলাকায় ঢুকতেই পারেনি। ভাঙড়ের মাঝেরহাটে নাম মাত্র একটি ঘর ভাড়া নিলেও সেখানে তাঁকে পাওয়া যায়না। বিধায়ককে না পেয়ে দল ছাড়ছে কর্মী সমর্থকরা? উঠছে প্রশ্ন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের দাবি, আইএসএফের জন্ম হয়েছিল একেবারেই বিধানসবা নির্বাচনের প্রাক্কালে। ধর্মনিরপেক্ষের ধ্বজা ওড়ালেও কার্যত বিশেষ ধর্মকেই বরাবর ‘প্রশ্রয়’ দিয়ে এসেছে আইএসএফ এমনটাই দাবি সংশ্লিষ্ট মহলের।

সংযুক্ত মোর্চার ক্ষেত্রে আইএসএফ-এর সঙ্গে বাম-কংগ্রেসের হাত মেলানোর ফলাফল শূন্য ঝুলিতে ঘরে ফেরা, এমনটাই মনে করেছেন অনেকেই। খোদ বাম ও কংগ্রেস শিবিরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল আইএসএফের সঙ্গে হাত মেলানো ভালভাবে নিতে পারেননি দলেরই একাংশ। তার প্রভাব পড়েছে নির্বাচনে।  সেই সুযোগেই ক্ষমতা বাড়িয়েছে তৃণমূল। কিছুদিন আগেই তৃণমূল যুব নেতার বিতর্কিত মন্তব্যকে কেন্দ্র করে ভাঙড়ে উত্তাপ ছড়িয়েছিল। ফের, শুক্রবার তৃণমূলের যোগদান কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে যাতে  কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি না তৈরি হয় সেইদিকেই বিশেষ নজর দিচ্ছে প্রশাসন।

আরও পড়ুন:  Kalyan Banerjee: ‘ম্যানহোল খুললে গঙ্গায় তো ময়লা ভাসবেই…’