Sundarban: বুধেই তৈরি হতে পারে মোখা, বিপদ মোকাবিলায় নৌকা বাঁধার কাজ শুরু সুন্দরবনে
Sundarban: জলে কুমির আর ডাঙায় বাঘের ঝুঁকি নিয়ে দিনরাত তাঁদের ভেসে থাকার জীবন। একইসঙ্গে আরও এক বিপদ থেকে থেকেই উঁকি দেয়, তা হল প্রাকৃতিক দুর্যোগ।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা: আজ গভীর নিম্নচাপ, এরপরই বুধবার ঘূর্ণিঝড় মোখার (Cyclone Mocha) সৃষ্টির সম্ভাবনা। বাংলার উপকূলে এই ঝড়ের প্রভাব কতটা কী হবে তা এখনও প্রশ্নসাপেক্ষ, তবে সবরকম প্রস্তুতি নিয়ে রাখছে সুন্দরবন প্রশাসন। সোমবারই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্ন থেকে জানিয়েছেন, “আমরা কন্ট্রোল রুম খুলেছি। মুখ্যসচিব বৈঠকও করেছেন সাইক্লোন নিয়ে। ১৪ জুন পর্যন্ত মাছ ধরা বন্ধ সাগরে।” সাগরে মাছ ধরা বন্ধের নির্দেশিকা যে আসবে তা তো জানতেনই মৎস্যজীবীরা। আপাতত নিজেদের একমাত্র সহায়সম্বল মাছ ধরার নৌকা বাঁচানোর জোর তোরজোড় শুরু সুন্দরবনের মৎস্যজীবীদের। ঝড়ের পূর্বাভাস শুনলেই আতঙ্কের প্রহর কাটে সুন্দরবনের মৎস্যজীবীদের। বংশপরম্পরায় মাছ, কাঁকড়া ধরার পেশায় যুক্ত তাঁরা। কুলতলি, গোসাবা, বাসন্তী, ক্যানিং-সহ বিস্তীর্ণ অংশের প্রচুর সংখ্যক মানুষ আজও সুন্দরবনের নদী খাঁড়িতে মাছ, কাঁকড়া ধরে জীবিকানির্বাহ করেন।
জলে কুমির আর ডাঙায় বাঘের ঝুঁকি নিয়ে দিনরাত তাঁদের ভেসে থাকার জীবন। একইসঙ্গে আরও এক বিপদ থেকে থেকেই উঁকি দেয়, তা হল প্রাকৃতিক দুর্যোগ। প্রতি বছর দুর্যোগে গ্রাম প্লাবিত হয়ে ভেসে যায় তাঁদের বাড়িঘর। ক্ষতিগ্রস্ত হয় ধানের জমি। চাষের অযোগ্য হয়ে যায় নোনা জল ভরে যাওয়ায়। মাছ চাষের পুকুরেও একই অবস্থা হয়। তাই মাছ, কাঁকড়া ধরা ছাড়া আর কোনও বিকল্প পেশা থাকে না তাঁদের কাছে।
আর সেই কাজ করতে যাওয়া মানে অবশ্যই প্রয়োজন নৌকা। আজও প্রচুর সংখ্যক মৎস্যজীবী যারা নৌকা নিয়ে মাছ, কাঁকড়া ধরতে যান। অনেকেই সেই নৌকাতে ধার দেনা করে যন্ত্রচালিত ইঞ্জিন লাগিয়ে একই কাজ করেন। কিন্তু তাঁদের অতীতের অভিজ্ঞতা মোটেই সুখকর নয়। কারণ ঘূর্ণিঝড় উঠলেই তুফান ওঠে চেনা নদীর জলে। তাণ্ডব থেকে বাদ যায় না নৌকাগুলিও।
তাই আবার মোখার পূর্বাভাস আসতেই আতঙ্কিত কুলতলি থানার দেউলবাড়ি- দেবীপুর গ্রামপঞ্চায়েতের দেউলবাড়ি গ্রামের মৎস্যজীবীরা। এখানকার মানুষ সম্পূর্ণভাবে নির্ভরশীল নদীতে মাছ, কাঁকড়া ধরার উপরে। আর সেই জন্য নৌকা একমাত্র তাঁদের ভরসা। হাওয়া দফতর সতর্কতা জারি করতেই নৌকাগুলিকে বিপদ থেকে দূরে রাখার তোড়জোর শুরু তাঁদের।