ভোট ছিল না, ভালবাসা ছিল, সেই টানেই ত্রাণ নিয়ে আসানসোল দক্ষিণে হাজির সায়নী, করলেন অগ্নিমিত্রার আরোগ্য কামনাও
এদিন, তারকা তৃণমূল নেত্রী বলেন, "ভোটে হারা-জেতাটা বড় কথা নয়। আসানসোলের মানুষ আমায় ভালবেসেছেন। আমিও ওঁদের সঙ্গে এক হতে পেরেছি। সেই টানেই আমি এসেছি।"
পশ্চিম বর্ধমান: একুশের নির্বাচনে তিনি ছিলেন নজরকাড়া মুখ। শুধু তারকা বলে নয়, তাঁর আচমকা তৃণমূলে (TMC) যোগদান থেকে প্রার্থী হওয়া সবটাই নজর কেড়েছিল। বাড়ির মেয়ের মতো ‘দুয়ারে দুয়ারে’ প্রচারও সেরেছিলেন তিনি। তিনি, আসানসোল দক্ষিণের তৃণমূল প্রার্থী সায়নী ঘোষ (Sayoni Ghosh)। নির্বাচনে জয়লাভ না করতে পারলেও নিজের কেন্দ্রকে ভুলে যাননি তিনি।
রাজ্য়ে করোনা সংক্রমণ রুখতে লকডাউন জারি হওয়ার পরেই দুঃস্থ মানুষদের কথা ভেবে ত্রাণ নিয়ে আসানসোল দক্ষিণে হাজির হলেন সায়নী (Sayoni Ghosh)। বৃহস্পতিবার, তৃণমূলের তারকা নেত্রী আর্থিকভাবে পিছিয়ে থাকা মানুষদের খাদ্য়সামগ্রী, মাস্ক, স্যানিটাইজার দেন। ছোটদের হাতে তুলে দেন চকোলেট আর রঙিন ছাতা। তবে, করোনা আবহে সকলকেই বলেন দূরত্ববিধি বজায় রাখতে।
এদিন, তারকা তৃণমূল নেত্রী বলেন, “ভোটে হারা-জেতাটা বড় কথা নয়। আসানসোলের মানুষ আমায় ভালবেসেছেন। আমিও ওঁদের সঙ্গে এক হতে পেরেছি। সেই টানেই আমি এসেছি।” অন্য়দিকে, আসানসোল দক্ষিণের বিজেপি (BJP) বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল (Agnimitra Paul) করোনা (Corona) আক্রান্ত। সেই প্রসঙ্গে সায়নী আরও বলেন, “এলাকার বিধায়ক দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকলে সেই এলাকার জন্য সুখকর নয়। ওঁ তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠুন। এই কামনা করি।” প্রসঙ্গত, ভোট আবহে, সায়নীর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মন্তব্য করে অগ্নিমিত্রা বলেছিলেন, “নির্বাচনে হেরে গিয়ে সায়নী কন্ডোমের দোকান দেবেন।” পাল্টা সায়নী বলেছিলেন, “এই কথা বলে আসলে নিজের বংশপরিচয়, বেড়ে ওঠাটাই চিনিয়ে দিলেন। বুঝিয়ে দিলেন কতটা নিম্নরুচি তাঁর।” তারপর ভোটপর্ব মিটেছে। বাবুল-পিচে জমিয়ে ব্যাট করতে পারেননি ‘স্ট্রিট ফাইটার’ সায়নী। প্রায় ৫ হাজার ভোটের ব্যবধানে শেষ হাসিটা হেসেছেন অগ্নিমিত্রাই।তারপর ফের একবার আসানসোলের মাটিতে পা রেখেছেন সায়নী। ঘাসফুলের দলীয় সূত্রে যদিও খবর, শীঘ্রই তৃণমূলের রাজ্য কমিটিতে জায়গা পেতে চলেছেন সায়নী।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ভোটপর্বের পরে আর বিশেষ ‘অ্যাক্টিভ ফর্মে’ দেখা যায়নি তারকা প্রার্থীদের। যশ দাশগুপ্ত, তনুশ্রী চক্রবর্তী, পাপিয়া অধিকারীর মতো বিজেপি তারকা প্রার্থীদের আর দেখাই যায়নি জনগণের পাশে। এমনকী, বিজয়ী তৃণমূল বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিক বা রাজ চক্রবর্তীও বুড়ি ছুঁয়ে আসার মতো করেই কাজ সেরেছেন। অধিকাংশের দাবি, কোভিড পরিস্থিতিতে ফোনকলেই এলাকার খবরাখবর রাখছেন তাঁরা। সেখানে, পরাজয়ের পরেও সায়নীর এইভাবে সামনে এগিয়ে আসা পরবর্তী লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের পক্ষে এখন থেকেই জমি তৈরির প্রস্তুতি হতে পারে এমনকী, করোনাক্রান্ত অগ্নিমিত্রার অনুপস্থিতি সায়নী তথা তৃণমূলের পথ প্রশস্ত করতে পারে এমনটাই মনে করছেন বিশ্লেষকদের অন্যদিকে। পাশাপাশি, দলের তরফে, জনতা জনার্দনের কাছে ‘ব্যক্তি সায়নী’ ইমেজটাও যে অত্যন্ত সদর্থক হতে পারে তাও মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ।
আরও পড়ুন: করোনা মোকাবিলায় পথে বিধায়ক-মন্ত্রীরা, কেউ বিলি করলেন মাস্ক, কেউ চালু করলেন ‘আশ্বাস প্রকল্প’