ঘুমের মধ্যেই পুড়ে শেষ পরিবারের পাঁচজন! অভাবে আত্মহত্যা, উঠছে প্রশ্ন
ইতিমধ্যেই ঘটনা ঘিরে রহস্য দানা বাঁধতে শুরু করেছে। স্থানীয়দের সঙ্গেও কথা বলছে পুলিশ (Hemtabad Police)।
উত্তর দিনাজপুর: ঘুমের মধ্যেই আগুনে পুড়ে মৃত্যু হল একই পরিবারের পাঁচ সদস্যর। হেমতাবাদে শনিবার ভোরে এই ঘটনা ঘটে। কী ভাবে আগুন লাগল তা খতিয়ে দেখছে হেমতাবাদ থানার পুলিশ। ইতিমধ্যেই ঘটনা ঘিরে রহস্য দানা বাঁধতে শুরু করেছে। তদন্তকারীদের প্রাথমিক অনুমান, অভাবের তাড়নায় এই ঘটনা। স্থানীয়দের সঙ্গেও কথা বলছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতদের নাম রামচন্দ্র ভৌমিক (৪০), শঙ্করী ভৌমিক (৩২), রানি ভৌমিক (১২), করুনা ভৌমিক (৭), সরস্বতী ভৌমিক (৪)।
হেমতাবাদ ব্লকের ইন্দো-বাংলাদেশ সীমান্তের চৈনগর গ্রামপঞ্চায়েতের কিসমত মালডুমা গ্রামে ভৌমিক পরিবারের বাস। শুক্রবার রাতে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে গিয়েছিল ওই পরিবার। প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, সেখান থেকে ফিরে এসে পরিবারের সকলে ঘুমিয়ে পড়লে নিজের শরীরে এবং স্ত্রী ও মেয়েদের শরীরে কিছু একটা ছিটিয়ে রামচন্দ্র আগুন ধরিয়ে দেন। কার্যত অভাবের তাড়নায় তিনি এই ঘটনা ঘটান বলে মনে করা হচ্ছে।
এক সময় ভ্যান চালিয়ে সংসার টানটেন রামচন্দ্র। কিন্তু লকডাউন, করোনা কাজ কেড়ে নেয় তাঁর। আর্থিক অনটনের মধ্যে সংসার চালানো দুষ্কর হয়ে উঠছিল। একটি বেসরকারি অর্থলগ্নি সংস্থা থেকে কিছু টাকা ধারও করেন বলে স্থানীয় সূত্রে খবর। সব কিছু মিলিয়ে একেবারে নাজেহাল হয়ে যাচ্ছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন: ‘খেলতে যাচ্ছি’ বলে বেরিয়েছিল, পুকুর থেকে উদ্ধার হল পাঁচ শিশুর নিথর দেহ
শনিবার সকালে রামচন্দ্র ভৌমিক-সহ তাঁর স্ত্রী ও দুই মেয়ের অগ্নিদগ্ধ মৃতদেহ উদ্ধার হয়। তবে ভোররাতে ঘটনার পরেই ১২ বছরের মেয়েকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তারও মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছেন হেমতাবাদের বিডিও লক্ষ্মীকান্ত রায়।
প্রতিবেশীদের দাবি, তাঁরা কোনও দিনই এই পরিবারে কলহের কোনও আঁচ পাননি। কেন এমনটা হল তা নিয়ে স্বভাবতই প্রশ্ন রয়েছে এলাকাবাসীর মনে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান হেমতাবাদের বিডিও লক্ষ্মীকান্ত রায়-সহ থানার পুলিশ এবং বিএসএফ। সূত্রের খবর, পুলিশ প্রশাসনের প্রাথমিক তদন্তে উঠে আসছে, পরিবারের কর্তা নিজেই আগুন লাগিয়ে এই ঘটনা ঘটান। তবে সব দিক খোলা রেখে তদন্ত চলছে। এখনই চূড়ান্ত কিছু বলতে নারাজ পুলিশ।