SSC Recruitment Scam: হঠাৎ ইস্তফা দিয়ে রাতারাতি ‘উধাও’ ভূগোলের শিক্ষিকা পিউ, রহস্য উন্মোচন হল SSC-র তালিকা বেরতেই
SSC Teacher: চলতি বছরের ৯ নভেম্বর পিউ মজুমদার ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে চাকরি থেকে ইস্তফা দেন। তারপর থেকে নাকি আর এলাকায় দেখা যায়নি তাঁকে।
উত্তর দিনাজপুর: চাকরি পেয়েই প্রথমে কোচবিহারের স্কুলে শিক্ষকতা শুরু করেন ভূগোলের শিক্ষিকা পিউ মজুমদার। পরে ২০২১ সালে বদলি নিয়ে চলে যান উত্তর দিনাজপুরের একটি স্কুলে। এ পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল। কিন্তু বছর ঘুরতেই আজব বিভ্রাট। হঠাৎ একদিন সকালে স্কুলে গিয়ে ইস্তফা পত্র জমা দেন পিউ মজুমদার নামে ওই শিক্ষিকা। তাঁর এমন আচমকা ইস্তফায় অবাক হন স্কুলের প্রধান শিক্ষকও। তারপর থেকে স্কুল তো দূর, এলাকাতেও নাকি দেখা যায়নি পিউ মজুমদারকে। অবাক হয়ে যান পিউ-র সহকর্মীরাও। কিন্তু বৃহস্পতিবার যে তালিকা প্রকাশ করেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন, তারপরই বিষয়টা অনেকটাই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।
১৮৩ জনকে বেআইনিভাবে সুপারিশ করা হয়েছিল বলে স্বীকার করেছে খোদ স্কুল সার্ভিস কমিশন। এই স্বীকারোক্তির পরই কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, ওই ১৮৩ জনের তালিকা প্রকাশ করতে হবে এসএসসি-র ওয়েবসাইটে। সেই মতো তালিকা প্রকাশও করা হয়েছে। আর সেই তালিকাতেই ৯৩ নম্বরে রয়েছে পিউ মজুমদারের নাম।
উত্তর দিনাজপুর জেলার চোপড়া ব্লকের টুটু সিংহ স্মৃতি হাইস্কুলের ভূগোল শিক্ষিকা ছিলেন পিউ মজুমদার। কোচবিহার জেলার মেখলিগঞ্জের ফুলকা ডাবড়ি নবীন চন্দ্র হাইস্কুলে প্রথম চাকরি পেয়েছিলেন তিনি। উল্লেখ্য,মেখলিগঞ্জের অপর একটি স্কুলেই চাকরি পেয়েছিলেন প্রাক্তন মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীও। কোচবিহারের ওই স্কুল থেকে মিউচুয়াল ট্রান্সফার নিয়ে উত্তর দিনাজপুর জেলার ওই স্কুলে যোগ দেন পিউ। ২০২১ সালের নভেম্বর মাস থেকে শিক্ষকতা করছিলেন সেখানে।
আচমকাই চলতি বছরের ৯ নভেম্বর পিউ মজুমদার ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে চাকরি থেকে ইস্তফা দেন। স্কুলের অন্যান্য শিক্ষকরা যখন পিউ মজুমদারের কাছে তাঁর এই সিদ্ধান্তের কারণ জানতে চান, তখন পিউ জানিয়েছিলেন, তিনি তাঁর আইনজীবীর পরামর্শ অনুযায়ী ইস্তফা দিচ্ছেন। টুটু সিংহ স্মৃতি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রণব কুমার বাড়ুই জানিয়েছেন, তাঁকেও একই কথা বলেছিলেন পিউ। এর থেকে বেশি কিছু বলেননি।
সহকর্মীরা জানিয়েছেন, ইস্তফা দিয়ে তড়িঘড়ি চলে যান পিউ। ওই দিনের পর থেকে পিউ মজুমদারকে আর এলাকায় দেখা যায়নি বলেই দাবি অভিভাবকদের। জেলা স্কুল পরিদর্শককেও ইস্তফার কথা জানিয়েছেন প্রধান শিক্ষক। তবে স্কুল পরিদর্শকের তরফে এই তালিকার বিষয়ে এখনও পর্যন্ত স্কুলকে কিছু জানানো হয়নি।
বেআইনিভাবে যাঁদের নিয়োগ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে, তাঁদের অবিলম্বে চিহ্নিত করে বরখাস্ত করার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। সেই মামলায় আদালত নির্দেশ দিয়েছিল, ১৮৩ জনের নাম প্রকাশ করতে হবে এসএসসি-কে। কে, কোন স্কুলে চাকরি করেন সেটাও সংশ্লিষ্ট জেলার স্কুল পরিদর্শকদের জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এরপরই বৃহস্পতিবার সেই তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।