বিজেপির প্রার্থী প্রত্যাহার নিয়ে গণ্ডগোলের পিছনে তৃণমূল ও টিম পিকে! অভিযোগ গেরুয়া শিবিরের
গত ১৯ মার্চ বিজেপির প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পরেই উত্তর দিনাজপুর জেলা জুড়ে বিজেপি কার্যালয়গুলিতে ব্যাপক ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। প্রতি জায়গাতেই প্রার্থী না-পসন্দের অভিযোগে চলে বিক্ষোভ। তাতে তৃণমূল (TMC)-এর হাত রয়েছে বলে দাবি বিজেপি (BJP)-র।
রায়গঞ্জ: বিজেপির প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পর উত্তর দিনাজপুর জুড়ে শুরু হয়েছিল বিক্ষোভ। রায়গঞ্জে ভাঙচুর হয় বিজেপির কার্যালয়। কিন্তু কোনও বিজেপি নেতাকর্মি এই কাজ করেননি। দলের অন্দরে ফাটল তৈরি করতে তৃণমূল এবং তাদের নির্বাচনী স্ট্র্যাটেজিস্ট প্রশান্ত কিশোরের টিমের চক্রান্ত রয়েছে। এমনই অভিযোগ করল উত্তর দিনাজপুর জেলা বিজেপি। সিসিটিভি ফুটেজ নিয়ে তাঁদের দাবি এই ঘটনার পিছনে থাকতে পারে তৃণমূলের চক্রান্ত। দলীয় নেতাদের ইতিমধ্যে ভাঙচুরের ভিডিয়ো ফুটেজ পাঠিয়ে চিহ্নিতকরণের কাজ শুরু করা হয়েছে।
এ নিয়ে জেলা বিজেপি সভাপতি বিশ্বজিৎ লাহিড়ী বলেন, দলীয় কেউ জড়িত থাকলে তাঁর বিরুদ্ধে দলগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু বহিরাগতরা জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। তৃণমূলের জেলা সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়াল অবশ্য বিজেপির আনা অভিযোগকে উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর কটাক্ষ, সকলেই জানে কী ঘটেছিল।
গত ১৯ মার্চ বিজেপির প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পরেই উত্তর দিনাজপুর জেলা জুড়ে বিজেপি কার্যালয়গুলিতে ব্যাপক ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। প্রতি জায়গাতেই প্রার্থী না-পসন্দের অভিযোগে চলে বিক্ষোভ। সেই রাতেই ব্যাপক ভাঙচুর হয় উত্তর দিনাজপুর জেলা বিজেপির কার্যালয়ে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বিশাল পুলিশ বাহিনী। ঘটনায় চরম অসস্তিতে পরেন বিজেপি জেলা নেতারা।
ওই ঘটনার পর থমথমে ছিল দলীয় কার্যালয়ের পরিস্থিতি। সেদিনের পর এই প্রথম দলীয় কর্মসূচি পালন করে বিজেপি। সোমবার সকালে বিজেপি জেলা কার্যালয় থেকে রায়গঞ্জের বিজেপি প্রার্থী কৃষ্ণ কল্যণীকে নিয়ে প্রচার কর্মসূচিতে বের হন বিজেপি জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ লাহিড়ী। রায়গঞ্জ শহরের বেশ কয়েকটি ওয়ার্ড পরিক্রমা করে ওই মিছিল। এরপরেই দলীয় কার্যালয়ে এসে সাংবাদিকদের গত শুক্রবারের ঘটনার প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে বিজেপি জেলা সভাপতি বলেন,”সেদিনের বিক্ষোভের ঘটনায় যারা ভাঙচুর করেছেন ভিডিও ফুটেজ দেখে চিহ্নিতকরণের কাজ শুরু হয়েছে। দলীয় নেতৃত্বদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমি জেলা সভাপতি হিসাবে ওইসব ফুটেজ দেখে ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িতদের চিনতে পারিনি।” পরক্ষণেই তাঁর চাঞ্চল্যকর অভিযোগ, “ওই বিক্ষোভের সময় টিম পিকের ছেলেরা বা তৃণমূলের ছেলেরা ভাঙচুরের কাজ করে থাকতে পারে। তাই তদন্তে যদি দেখা যায় বহিরাগতরা এই ভাঙ্গচুর করেছে, তবে আমরা তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেব। আর দলীয় কর্মীরা করলে দলগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
আরও পড়ুন: দল সঠিক মূল্যায়ণ করেনি, ক্ষোভে একের পর এক পদ থেকে ইস্তফা তৃণমূল নেতার
এদিকে বিজেপির অভিযোগ নস্যাৎ করে তৃণমুল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়াল বলেন, এটা সবাই জানে যে বিজেপির প্রার্থী ঘোষণার পরে তাদের দল গোটা জেলায় বিক্ষোভ করেছে। দলের মধ্যে যাঁরা প্রার্থী হবেন বলে আশা করেছিলেন, তাঁরা টিকিট না পেয়ে এই বিক্ষোভ করেছিল। এতে তৃণমূল বা টিম পিকের কোনও হাত নেই বলে দাবি করেন তিনি। এরপরেই বিজেপির উদ্দেশে কানাইয়ালালের হুঁশিয়ারি, ওদের সৎ সাহস থাকলে সেদিনই থানায় ডাইরি করত।