সঙ্গ ছেড়েছেন ৬ রিপাবলিকান, ইমপিচমেন্টের ৫০-৫০ লড়াইয়ে তবু এগিয়ে ট্রাম্প

মার্কিন হাউসে ইতিমধ্যেই ইমপিচড ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেখানে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন রিপাবলিকানরাও।

সঙ্গ ছেড়েছেন ৬ রিপাবলিকান, ইমপিচমেন্টের ৫০-৫০ লড়াইয়ে তবু এগিয়ে ট্রাম্প
ফাইল চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Feb 10, 2021 | 2:36 PM

ওয়াশিংটন: পঞ্চাশে পঞ্চাশে লড়াই। তবুও ‘কমলা’ ভোটে সেনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠ ডেমোক্র্যাটরা। মার্কিন সেনেটে ৫০টি ভোট ডেমোক্র্যাটদের হাতে, বাকি ৫০টি রিপাবলিকানদের। তাই বিভিন্ন ক্ষেত্রে নির্ণায়ক হয়ে উঠবে প্রেসিডেন্ট অব দ্য সেনেট কমলা হ্যারিসের ভোট। সেভাবে দেখলে ভাইস প্রেসিডেন্টকে নিয়ে সেনেটেও সংখ্যাগরিষ্ঠ ডেমোক্র্যাটরা। কিন্তু সেনেটে ট্রাম্পকে (Donald Trump) ইমপিচড করতে গেলে প্রয়োজন দুই-তৃতীয়াংশ ভোট। অর্থাৎ ৬৭টি ভোট। সেক্ষেত্রে কম করে ১৭ জন রিপাবলিকানকে ভোট দিতে হবে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে। এমতাবস্থায় সেনেটে শুরু হয়েছে ট্রাম্পের ইমপিচমেন্ট বিতর্ক।

 ট্রাম্পের বিরুদ্ধে কারা?

ট্রাম্পের ইপিচমেন্ট কি আদৌ সাংবিধানিক! রিপাবলিকানদের একাংশের মতে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের ইমনপিচমেন্ট সাংবিধানিক নয়। আবার একাংশ মনে করেন সংবিধান মেনেই সেনেটে যদি ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব আসে, সে বিষয়ে বিতর্কে রাজি তাঁরা। ট্রাম্প পক্ষের আইনজীবীরা দাবি করেছিলেন, মেয়াদ শেষের পর ডোনাল্ড ট্রাম্প এখন সাধারণ নাগরিক। তাঁর বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব অসাংবিধানিক। কিন্তু ভোটাভুটির পর সেনেট ট্রাম্পের ইমপিচমেন্ট প্রস্তাবকে স্বীকৃতি দিয়েছে। মার্কিন সংবাদ মাধ্যমে অনুযায়ী, ইতিমধ্যেই ৬ জন রিপাবলিকান সেনেটেও ট্রাম্পের বিপক্ষে হেঁটেছেন। যার ফলে এখন সেনেটে ট্রাম্পের ইমপিচমেন্টের পক্ষে ভোট ৫৬ আর বিপক্ষে ৪৪। অর্থাৎ ট্রাম্পকে যদি সেনেটে ইমপিচড করতে হয় তাহলে আরও ১১ জন রিপাবলিকানকে তাঁর বিরুদ্ধে গিয়ে ইমপিচমেন্টের পক্ষে ভোট দিতে হবে।

কী হতে পারে?

বিশ্লেষকরা বলছেন, ১১ জন রিপাবলিকান ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যাবেন, এমনটা হয়ত হবে না। কিন্তু অন্যদিকে মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে ট্রাম্পের নতুন দল গড়ার প্রসঙ্গও। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, নতুন প্যাট্রিয়টিক দল গড়ার কথা জানিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাই রিপাবলিকানরাও যে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে একেবারেই যেতে পারেন না, এটাও হলফ করে বলছেন না বিশেষজ্ঞরা।

কেন ইমপিচমেন্ট ট্রাম্পকে?

মার্কিন হাউসে ইতিমধ্যেই ইমপিচড ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেখানে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন রিপাবলিকানরাও। হাউসে ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব আসার পিছনে তিনটি কারণ ছিল। প্রথমত,লাগাতার ট্রাম্প দাবি করেছেন, তিনিই নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন। কিন্তু আসলে ফল আলাদা। ইলেক্টোরাল কলেজ সিদ্ধান্ত জানানোর পরও ট্রাম্প দাবি করে গিয়েছেন, নির্বাচন জিতেছেন তিনিই। এই মিথ্যাচারের অভিযোগ উঠেছে তাঁর নামে।

দ্বিতীয়ত, মার্কিন ক্যাপিটল হামলায় উস্কানি দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁরই উস্কানির জেরে মার্কিন ক্যাপিটল তছনছ করেছে ট্রাম্প ভক্তরা। প্রসঙ্গত, মার্কিন ক্যাপিটলে হামলার আগেই ট্রাম্প তাঁর সমর্থকদের উদ্দেশে বক্তব্য রেখেছিলেন। যেখানে তিনি তাঁর সমর্থকদের ‘হিংস্র’ হতে আহ্বান করেছিলেন। তারপরেই মার্কিন হাউসে হামলা করেন ট্রাম্প সমর্থকরা। সেই অভিযোগেই ট্রাম্পের বিরুদ্ধে হাউসে ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব এনেছিলেন ন্যান্সি পেলোসি।

তৃতীয়ত, নির্বাচনের ফল বদলে দেওয়ার জন্য বারবার ট্রাম্প ছলচাতুরির আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করেছেন। তাঁর নামে এমনও অভিযোগ এসেছে যেখানে জর্জিয়ার স্টেট সেক্রেটারিকে তিনি বাইডেনকে হারানোর জন্য ভোট ‘খোঁজার’ কথা বলেছেন।

২০১৯ সালের ইমপিচমেন্টের ফল:

এর আগে ক্ষমতার অপব্যাবহারের অভিযোগে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে ট্রাম্পের নাম ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব এসেছিল। যদিও সেই সময় সেনেট সম্পূর্ণ রিপাবলিকানদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। তাই হাউসে পাশ হলেও সেনেটে আটকে যায় ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব। কিন্তু এক্ষেত্রে ট্রাম্পের ইমপিচমেন্ট সেনেটে যাওয়ার সময় সেনেটের নিয়ন্ত্রণ ডেমোক্র্যাটদের হাতে। তবুও ট্রাম্পের ইমপিচমেন্ট পাশ হওয়া নিয়ে ধোঁয়াশা থেকেই যাচ্ছে।