Afghanistan: রূপকথার মতো সুন্দর বাদাখশানে এখন তালিবানের বুটের শব্দ! মানুষগুলো দু’মুঠো খেতেও পায় না
শুধু জেহাদি মৌলবাদ নয়, বাদাখশানকে মারছে প্রকৃতিও। গত তিন মরশুমের দু'টিই কেটেছে অনাবৃষ্টিতে। খরায় বন্ধ্যা হয়েছে জমি, ফসলের জন্ম দিতে পারেনি।
কাবুল: যুদ্ধে জয়-পরাজয় হয়। মীমাংসাহীন পরিণতিও হয়। তবে যুদ্ধের একটি ফলাফল সব যুগে, সব দেশে সমান। তা হল মৃত্যু, পঙ্গুত্ব! অনাথ আর ভুখার মিছিল। আফগানিস্তানে গৃহযুদ্ধে জিতে ক্ষমতায় এসেছে তালিবান। তারা ক’দিন দেশের তখ্তে থাকবে কেউ জানে না। কিন্তু, একটি ভবিতব্য সকলের জানা। এই যুদ্ধেরও পরিণতি অনাহার। আফগানিস্তানের বাদাখশান প্রদেশে ইতিমধ্যেই সেই ছবি দেখা দিতে শুরু করেছে।
আফগানিস্তানের উত্তর পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ। এই বাদাখশান। একদিকে তাজিকিস্তান, অন্যদিকে পাকিস্তান। আর সরু ফিতের মতো একটি অংশ এসে মিশেছে গিলগিট-বালটিস্তানে। কাগজে কলমে যা ভারতের অংশ। বিশ্ব চেনে পাক অধিকৃত কাশ্মীর হিসেবে। আফগানিস্তান বলতেই কল্পনায় যে রুক্ষ্ম ধূসরতা ভেসে ওঠে, বাদাখশান তেমন নয়। কাশ্মীর লাগোয়া এই প্রদেশের সৌন্দর্য অবর্ণনীয়। জমি উর্বর, মাটি সুফলা। এখানে আফগানি যুবকের হাতে রাইফেল নয়, থাকে কাগজ-কলম। পার্বত্য নদীর অববাহিকায় প্রাকৃতিক পার্কে তরুণ হৃদয় গান ধরে। প্রেমে পড়ে। জন্ম হয় ভবিষ্যতের রুমি-ওমর খৈয়ামের।
তাজিক সীমান্ত পেরিয়ে গেলেই জন্ম নেয় নতুন রূপকথা। পামির মালভূমি। পৃথিবীর ছাদ। এই ভূগোল চুম্বকের মতো টেনে আনতে পারে অভিযাত্রীদের। সত্যি যদি এ জায়গাকে নিয়ে কেউ ভাবনাচিন্তা করত, আন্তর্জাতিক পর্যটনক্ষেত্র হয়ে উঠতে পারত অনায়াসে। তার সমস্তরকম সম্ভাবনা এই বাদাখশানে রয়েছে। কিন্তু, সেই সম্ভাবনা কখনই বাস্তবের মাটি পায়নি। আফগানিস্তানে কে বা সাহস করে ছুটি কাটাতে আসে?
A young boy entertains a group of girls by performing a head stand. The Wakhan Corridor is one of the most remote regions of Afghanistan. Much of it is only reachable on foot or by horse or yak and is inhabited by nomads living in yurts. Badakhshan, Afghanistan ?? pic.twitter.com/Dzm3vXjIEr
— Somi (@acaianara) August 17, 2021
শুধু জেহাদি মৌলবাদ নয়, বাদাখশানকে মারছে প্রকৃতিও। গত তিন মরশুমের দু’টিই কেটেছে অনাবৃষ্টিতে। খরায় বন্ধ্যা হয়েছে জমি, ফসলের জন্ম দিতে পারেনি। বাদাখশান বেঁচে রয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জের বদান্যতায়। ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামের আওতায় মাসে ৬০ কেজি রেশন পায় প্রতি পরিবার। উপভোক্তা ৫০ হাজার। কিন্তু, সেই রেশনেও থাবা বসিয়েছে গৃহযুদ্ধ। তালিবান ক্ষমতা দখলের পর বহু প্রদেশে রেশন বণ্টনে সমস্যা হচ্ছে। বাদাখশান তার ব্যতীক্রম নয়। কাতার আর কাবুলে বসে তালিব নেতারা বোঝানোর মরিয়া চেষ্টা করছে যে, তারা বদলে গিয়েছে। কিন্তু স্থানীয় স্তরে মৌলবাদী মন মানবতার প্রয়োজন বোঝে না।
মহামারির মতো ফিরে এসেছে তালিবান। উপসর্গ হিসেবে সঙ্গে এনেছে খাদ্য সঙ্কট। সুন্দরী বাদাখশান এখন হতশ্রী। বাদাখশানবাসী ভুগছে অপুষ্টি ও অনাহারে। সঙ্কীর্ণতাকে শক্তি করে এমন ঐশ্বরিক ভূমিকে নষ্ট করার অধিকার কে দিয়েছে? তালিব নেতাদের কাছে এই প্রশ্নের উত্তর নেই। তারা নিশ্চয়ই এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেও যাবে না। আরও পড়ুন: ভোল বদলাচ্ছে চেনা রাজধানী এক্সপ্রেস, অত্যাধুনিক ট্রেনেই শিয়ালদহ-হাওড়া থেকে দিল্লি সফর