কুরিয়ার কর্মী সেজে দুই বন্ধুকে কুপিয়ে হত্যা করেছিল জঙ্গিরা, ৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিল আদালত

জুলহাজ মান্নান ছিলেন মার্কিন সংস্থার কর্মী আর তনয় ছিলেন নাট্যকর্মী। আজ ঢাকা আদালত তাদের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে।

কুরিয়ার কর্মী সেজে দুই বন্ধুকে কুপিয়ে হত্যা করেছিল জঙ্গিরা, ৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিল আদালত
এই দুই বন্ধুকে জুলহাজ ও তনয়কেই হত্যা করা হয়েছিল
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 31, 2021 | 2:53 PM

ঢাকা: পাঁচ বছর আগে রাজধানী শহর ঢাকার কলাবাগানে এক মার্কিন সংস্থার আধিকারিক জুলহাজ মান্নান ও তাঁর বন্ধু নাট্যকর্মী মাহবুব রাব্বী তনয়কে হত্যা করে একদল জঙ্গি। সেই মামলায় ছয় জঙ্গির মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। এই মামলায় দু’জনকে বেকসুর খালাস ঘোষণা করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ঢাকার সন্ত্রাস বিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মহম্মদ মজিবুর রহমান এই রায় ঘোষণা করেন। যাদের এই মামলায় মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে তাদের নাম সৈয়দ জিয়াউল হক, আকরাম হোসেন, মোজাম্মেল হোসেন ওরফে সায়মন, মহম্মদ আরাফাত রহমান, মহম্মদ শেখ আবদুল্লাহ জোবায়ের ও আসাদুল্লাহ।

এ ছাড়া সাব্বিরুল হক চৌধুরী ও মহম্মদ জুনাইদ আহমদ নামে দু’জনকে বেকসুর খালাস বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এরা দু’জনই পলাতক। খুন হওয়া জুলহাজ সমকামীদের অধিকার সংক্রান্ত একটি পত্রিকা ‘রূপবান’ সম্পাদনা ও প্রকাশনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। অন্যদিকে নাট্যকর্মী তনয় পিটিএ নামের একটি প্রতিষ্ঠানে ‘শিশু নাট্য প্রশিক্ষক’ হিসেবে কাজ করতেন।

২০১৬ সালের ২৫ এপ্রিলের ঘটনা। ওইদিন বিকেলে কলাবাগান এলাকায় কুরিয়ার সার্ভিসের কর্মী সেজে জুলহাজ মান্নান ও তাঁর বন্ধু তনয়কে কুপিয়ে হত্যা করে জঙ্গিরা। নৃশংস এই জোড়া খুনের ঘটনায় তিন বছর ধরে তদন্ত হয়। এরপর ২০১৯ সালের ১২ মে পুলিশ আদালতে চার্জশিট দিয়ে জানায়, এ ঘটনায় জড়িত নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের আট সদস্য। হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে চার জঙ্গি আদালতে জবানবন্দি দেয়। তাদের জবানবন্দিতে উঠে আসে, জোড়া খুনের কারণ। কী ভাবে হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করা হয়েছিল, সেটাই জানা যায়। আটজনের বিরুদ্ধে গত বছরের ১৯ নভেম্বর বিচার শুরু হয়।

জানা যায়, ওই এলাকার লেকসার্কাস রোডের আছিয়া নিবাস নামে ছ’তলা একটি ভবনের দ্বিতীয় তলার ফ্ল্যাটে মা’কে নিয়ে থাকতেন জুলহাজ। সে দিন বিকাল ৫টার দিকে টি শার্ট ও প্যান্ট পরা একদল যুবক ওই বাড়িতে যায়। একটি জিনিস ডেলিভারি দেওয়ার কথা বলে তারা জুলহাজ মান্নানের ফ্ল্যাটে ঢুকতে চাইলে ওই বাড়ির নিরাপত্তাকর্মীরা তাদের ঢুকতে দেন। জুলহাজ দরজা খুলে তাদের দেখে আবার দরজা বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু, তখন তারা জোর করে বাসায় ঢুকতে চাইলে নিরাপত্তাকর্মী পারভেজ মোল্লা বাধা দেন। পরে তাঁরা ঘরে ঢুকে জুলহাজ ও তনয়কে কুপিয়ে হত্যা করে। হামলাকারীরা ‘আল্লাহু আকবার’ বলতে বলতে আগ্নেয়াস্ত্র থেকে গুলি ছুড়ে পালিয়ে যায় বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা। দীর্ঘ তদন্তে অভিযুক্তদের জবানবন্দি ও অন্যান্য সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে জানা গিয়েছে, তারা নিষিদ্ধ ঘোষিত সন্ত্রাসী সংগঠন আনসার আল ইসলামের বিভিন্ন পর্যায়ের সক্রিয় সদস্য। সংগঠনের নেতা সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল হকের নির্দেশে সংগঠনের সামরিক শাখার সদস্যরা ওই হত্যাকাণ্ড ঘটায় বলে জানা যায়। আরও পড়ুন: চোখের সামনে পড়ে থাকবে, তবু কোনোদিন মার্কিন সেনার ফেলে আসা ৭৩ টি বিমান ওড়াতে পারবে না তালিবান