খালি রানওয়ে, চোখে মুখে জয়ের আনন্দ, কাবুল থেকে গোটা বিশ্বকে ‘শিক্ষা’ নেওয়ার কথা বলছে তালিবান

গতকাল রাতেই আমেরিকার শেষ বিমান রওনা হয়েছে কাবুলের মাটি থেকে। আর আজ সকালে খালি রানওয়েতে বিজয়ের উল্লাস। দেখা মিলল তালিব নেতাদের

খালি রানওয়ে, চোখে মুখে জয়ের আনন্দ, কাবুল থেকে গোটা বিশ্বকে ‘শিক্ষা’ নেওয়ার কথা বলছে তালিবান
নয়া সরকারে কী কী বিধিনিষেধ আরোপ করবে তালিবান? ফাইল চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 31, 2021 | 2:45 PM

কাবুল: প্রায় গোটা দেশটাই এখন তালিবানের দখলে। গত ১৫ দিন ধরে শুধু কাবুল বিমানবন্দরটুকু নিজেদের হাতে রেখেছিল মার্কিন সেনা। গত কয়েকদিনে অনেক ভয়, কান্নার সাক্ষী থেকেছে এই বিমানবন্দর। আর আজ সেখানে একেবারে অন্য ছবি। চারপাশ শুনশান। কে বলবে এই বিমানবন্দর থেকে মুক্তির লক্ষ্যে ছুটে যেতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন কত মানুষ? কান পাতলেই শোনা যাচ্ছিল কান্নার আওয়াজ। গতকাল রাতে উড়ে গিয়েছে আমেরিকার শেষ বিমান। ‘স্বাধীনতা’র আনন্দে এখন উচ্ছ্বসিত তালিবান। আর সেই বিজয়ের বার্তা নিয়েই শুনশান রানওয়েতে এ দিন সাদা-কালো পোশাক পরে হাঁটলেন একদল তালিব নেতা। ২০ বছর পর ‘সাম্রাজ্য’ ফিরে পেয়ে আনন্দ ধরে রাখতে পারছেন না তাঁরা। কেউ কেউ মোবাইলে বন্দি করছেন ফাঁকা রানওয়ের ছবি। আর তার মধ্যেই গোটা বিশ্বকে দিলেন বার্তা।

নির্দিষ্ট দিন-ক্ষণ মেনেই ৩১ অগস্টের ঠিক আগেই আফগানিস্তান ছেড়েছে মার্কিন সেনা। আর তারপর মঙ্গলবার সকালে রানওয়েতে পৌঁছে যায় তালিবানের নেতারা। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তালিবানের মুখপাত্নর জাবিবুল্লাহ মুজাহিদ বলেন, ‘আফগানিস্তানকে অভিনন্দন। এই জয় আমাদের।’ সেই সঙ্গে তিনি আরও জানান, তালিবান চায় আমেরিকা সহ সব দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ভালো রাখতে। বলেন, ‘আমরা গোটা বিশ্বের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে চাই।’ সেই সঙ্গে এই আমেরিকা সহ অন্যান্য দেশকে বার্তা দিয়ে তিনি বলেন, ‘গোটা বিশ্বের উচিৎ শিক্ষা নেওয়া।’

এ দিকে, আফগানিস্তান ছাড়লেও তালিবানকে বার্তা দিতে ভুলছে না আমেরিকা। মার্কিন বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেন, ‘তাদের প্রতিশ্রুতিগুলো বজায় রেখে আন্তর্জাতিক সমর্থন পাওয়া জায়গা তৈরি করতে হবে তালিবানকে।’ কী সেই প্রতিশ্রুতি? ‌আফগানিস্তান ছাড়ার পথ খোলা রাখা, সন্ত্রাস দমনে উদ্যোগ নেওয়া, আফগানিস্তানের মানুষের মর্যাদা রক্ষা করা, মহিলা ও সংখ্যালঘুদের অধিকারকে স্বীকৃতি দেওয়ার কথা উল্লেখ করেন ব্লিঙ্কেন।

৩১ অগস্টের মধ্যেই সেনা সরানোর কথা ছিল আমেরিকার। সেই মতো ৩০ তারিখ মধ্যরাতেই রওনা হয় সেই শেষ বিমান। আর সেই বিমান উড়ে যেতেই আফগানিস্তানের আকাশে ধরা পড়ে উল্লাসের ছবি। তালিবানের দাবি, ২০ বছর পর অবশেষে পূর্ণ স্বাধীনতা পেয়েছে আফগানিস্তান। তাই রাতেই বাজি ফাটিয়ে, বন্দুকের শব্দে সেই ‘স্বাধীনতা’ উদযাপন করেছে তারা। সোমবার রাতে বিমান ওড়ার পরই কাবুলের বিভিন্ন জায়গায় শোনা যায় গুলির শব্দ। মার্কিন এয়ার ফোর্সের সি-১৭ গ্লোবমাস্টারে বিমানবন্দর ছাড়ে মার্কিন সেনাবাহিনীর সদস্য ও বেশ কয়েকজন আধিকারিক। জানা গিয়েছে, বিমানে সেনাবাহিনীর সদস্য ছাড়াও ছিলেন কমান্ডাররা। তবে সব আমেরিকানকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে পেন্টাগন। আরও পড়ুন: চোখের সামনে পড়ে থাকবে, তবু কোনোদিন মার্কিন সেনার ফেলে আসা ৭৩ টি বিমান ওড়াতে পারবে না তালিবান