Old man marriage: ৭৫ বছরেও ‘তরুণ’, রোজ গাছে উঠে পাড়েন খেজুর রস; দ্বিতীয় বিয়ে করে ‘সুখী’ আব্দুল

৭৫ বছর বয়সে বিয়ে করলেন আব্দুল গফুর। ২৩ বছরের ছোট ৪৮ বছর বয়সি বিবি হনুফার সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি।

Old man marriage: ৭৫ বছরেও 'তরুণ', রোজ গাছে উঠে পাড়েন খেজুর রস; দ্বিতীয় বিয়ে করে 'সুখী' আব্দুল
৭৫ বছর বয়সে বিয়ে করলেন আব্দুল গফুর।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Apr 22, 2023 | 11:22 PM

ঢাকা: ইচ্ছাশক্তির কাছে বয়স কেবল সংখ্যা মাত্র। এই কথাটির এবার প্রমাণ দিলেন আব্দুল গফুর ব্যাপারী। বয়স পৌঁছে গিয়েছে ৭৫ বছরের কোটায়। কিন্তু, তাতে কী! ভালভাবে বাঁচার ইচ্ছা তো রয়েছে। তাই ৭৫ বছর বয়সে বিয়ে করলেন আব্দুল গফুর। ২৩ বছরের ছোট ৪৮ বছর বয়সি বিবি হনুফার সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি। শুধু বিয়ে করা নয়, সংসারের হালও ধরতে আজও প্রতিদিন ২৫-৩০টি গাছে উঠে খেজুর রস পেড়ে, সেটা বিক্রি করেন তিনি। যা সকলের কাছেই এককথায় বিস্ময়!

বাংলাদেশের ভোলার সদর উপজেলার রাজাপুরের বাসিন্দা আব্দুল গফুর ব্যাপারী। ৭৫ বছর বয়সে দ্বিতীয় বিয়ের পর এটাই তাঁর প্রথম ইদ। শনিবার ইদের নমাজ পড়ে বেরোনোর পর তাঁর চোখেমুখে আনন্দের ঝিলিক। কেমন আছেন জানতে চাইলে একগাল হেসে বলেন আব্দুলের জবাব, “ভাল আছি।”

আব্দুল গফুরকে নিয়ে সকলেরই কৌতূহলের অন্ত নেই। কারণ, যখন সাধারণত লোকে শুয়ে-বসে সময় কাটান, দ্বিতীয় বিয়ে তো অনেক দূরের কথা, তখন আব্দুল গফুর কেবল বিয়ে করেননি, আজও গাছে উঠে রস সংগ্রহ, খেজুরগাছ কাটা, ছাগল প্রতিপালনের মতো একাধিক পরিশ্রমের কাজ করেন। এই বয়সে তাঁর দৃষ্টিশক্তিও ভাল আছে। চশমা ছাড়াই বই পড়তে পারেন তিনি।

জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী, আব্দুল গফুরের জন্ম তারিখ ১৯৪৮ সালের ২ মার্চ। আজ, ৭৫ বছর বয়সেও তারুণ্যের অন্যতম নজির গফুর। প্রতিদিনই তিনি সূর্যোদয়ের আগে ২৫-৩০টি খেজুর গাছে উঠে রসের হাঁড়ি সংগ্রহ করেন। তারপর বাজারে গিয়ে সেই রস বিক্রি করেন। এরপর বাড়িতে ফিরে জলখাবার খেয়ে ছাগল-গরু নিয়ে মাঠে বের হন। দুপুরে বাড়িতে ফিরে কিছুটা বিশ্রাম। বিকালে ফের খেজুর গাছ কাটতে বের হন। তারপর সন্ধ্যায় স্থানীয় এক চিকিৎসকের চেম্বারেও বসেন তিনি। প্রতিদিন নিয়ম করে সংবাদপত্রও পড়েন। তাও আবার চশমা ছাড়া।

আগে রাতে খেতের মধ্যে গড়ে তোলা ছোট ঘরে কুপিবাতি জ্বালিয়ে কৃষি শ্রমিকদের চারপাশে বসিয়ে পুঁথি পড়ে শোনাতেন। সেই পুঁথি শুনেই তাঁর প্রেমে পড়েছিলেন দক্ষিণ রাজাপুরের হাওলাদার বাড়ির এক মেয়ে। তাঁর সঙ্গে আব্দুলের বিয়েও হয়। তাঁদের তিন মেয়ে ও দুই ছেলে আছে। বছর দুই আগে আব্দুলের স্ত্রী মারা যান। তারপর থেকে একা হয়ে পড়েন আব্দুল। সেই একাকিত্ব ঘোচাতেই দ্বিতীয় বিয়েতে আবদ্ধ হন আব্দুল। তিনি বলেন, “ছেলে-মেয়েদের বিয়ের পরে তাঁদের আলাদা সংসার। তাঁদের মা মারা যাওয়ার পর একা হয়ে পড়ি। তাই মাস ছয়েক আগে ছেলেরাই বিবি হনুফার সঙ্গে আমার বিয়ে দেয়। এই বয়সে এসে একা একা চলা যায় না। তাই ছেলেদের আব্দার আর ফেলতে পারিনি।”

বয়সে ছোট হলেও বিবি হনুফার সঙ্গে নতুন সংসারে ভালই রয়েছেন বলে জানান আব্দুল গফুর। আর ৭৫ বছর বয়সেও তাঁর সুস্থ ও ভাল থাকার অন্যতম চাবিকাঠি, সর্বদা নিজে আনন্দে থাকা ও অন্যকে আনন্দ দেওয়া, কঠোর পরিশ্রম এবং নিয়ম মেনে জীবনযাপন।