Bangladesh: গায়ে পুলিশের পোশাক, মাদক বিরোধী অভিযানের নামে পরপর দুই গ্রামে গরু চুরি

Bangladesh Cow theft: পাশাপাশি দুই গ্রামের দুটি বাড়ি থেকে রাতের অন্ধকারে চুরি গেল গরু। গরুচোররা পুলিশের পোশাকে এসেছিল বলে অভিযোগ।

Bangladesh: গায়ে পুলিশের পোশাক, মাদক বিরোধী অভিযানের নামে পরপর দুই গ্রামে গরু চুরি
প্রতীকী ছবি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 22, 2022 | 2:13 PM

দোহা: পাশাপাশি দুই গ্রামের দুটি বাড়ি থেকে রাতের অন্ধকারে চুরি গেল গরু। গরুচোররা পুলিশের (Cow smuggling in the guise of police) পোশাকে এসেছিল বলে অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দারা তাদের আটকালে পুলিশের পোশাকে থাকা গরুচোররা জানায় তারা মাদক বিরোধী অভিযানে হানা দিয়েছে গ্রামে। এমনকী, বন্দুক উঁচিয়ে গ্রামবাসীদের ভয়ও দেখানো হয় বলে অভিযোগ। এদিকে, গরুগুলি চুরি যাওয়ায় কয়েক লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে ক্ষতিগ্রস্ত দুই পরিবার। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলায়।

স্থানীয় সংবাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী কক্সবাজারের রামু উপজেলার মেরংলোয়া গ্রামে দুই সন্তানকে নিয়ে থাকেন আশরাফ জাহান। কাজের সূত্রে তাঁর স্বামী শফিউল আকবর বিদেশে থাকেন। বছরখানেক আগে স্বামীর পাঠানো টাকায় একটি গরু কিনেছিলেন আশরাফ জাহান। সেই গরুর দুধই খেত তাঁর সন্তানরা। মাসখানেক আগে সেই গরুর একটি বাছুর হয়েছিল। তারপর অতি সম্প্রতি আরও একটি গরু কিনেছিলেন তিনি। বাড়ির পাশেই একটি খোলা জায়গায় ওই দুটি গরু এবং বাছুরটি বাঁধা থাকত। রবিবার গভীর রাতে পুলিশের পোশাক পরা কয়েকজন অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তি বাছুরসহ গরু দুটি তুলে নিয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। তিনটি গরুর দাম প্রায় দেড় লক্ষ টাকা বলে দাবি করেছেন আশরাফ জাহান।

গরু চুরির ঘটনাটির প্রত্যক্ষদর্শী মেরংলোয়া গ্রামেরই বাসিন্দা নুরুল হাকিম। তিনি জানিয়েছেন, সোমবার ভোরে তিনি নামাজ পড়তে মসজিদে যাওয়ার সময় পুলিশের পোশাক পরা কয়েকজনকে গরুগুলি নিয়ে যেতে দেখেছিলেন। নুরুল তাদের পরিচয় জানতে চেয়েছিলেন। ওই ব্যক্তিরা উল্টে তাঁকে ধমক দিয়ে জানিয়েছিল, তাঁরা নিষিদ্ধ মাদকদ্রব্য ‘ইয়াবা’ উদ্ধার অভিযানে গ্রামে এসেছেন। গরুচোরদের একজন তাঁর দিকে বন্দুক উঁচিয়ে অবিলম্বে সেখান থেকে চলে যেতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। ভয়ে বাড়ি ফিরে যান নুরুল।

ওই রাতেই পাশের চাকমারকুল গ্রামের কৃষক নুর আহমদের বাড়ি থেকেও দুটি গরু চুরি গিয়েছে। নুর আহমদ জানিয়েছেন, দীর্ঘ কয়েক বছরের জমানো টাকায় তিনি গরু দুটি কিনেছিলেন। দাম পড়েছিল আড়াই লক্ষ টাকা। আগামী কুরবানির ইদে গরু দুটি বিক্রি করবেন বলে পরিকল্পনা করেছিলেন তিনি। কিন্তু, এখন সেই পরিকল্পনা বিশ বাঁও জলে। সোমবার সকাল থেকে গ্রামে ও আশপাশের এলাকায় অনেক খুঁজেও গরুদুটি কোথাও পাননি তিনি।

তবে এই প্রথম নয়, প্রতিদিন কক্সবাজারের রামু উপজেলায় গরু চুরির ঘটনা ঘটে চলেছে বলে দাবি করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কপাল পুড়ছে ক্ষুদ্র কৃষকদের। স্থানীয় কৃষকদের দাবি, সম্প্রতি রাতের অন্ধকারে উপজেলার কলঘর থেকে পাঁচটি, খরুলিয়া বিন্যাপাড়া থেকে তিনটি, জোয়ারিয়ানালা থেকে সাতটি গরু চুরির ঘটনা ঘটেছে। এর পিছনে কোনও বড়সড় গরুচোর চক্র জড়িয়ে আছে বলে সন্দেহ করছেন তাঁরা। তাদের সহায়তা করছে স্থানীয় কিছু ব্যক্তি।

এই বিষয়ে রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মহম্মদ আনোয়ারুল হোসেন জানিয়েছেন, গরু চুরির খবর তিনি পেয়েছেন। ঘটনাস্থলে পুলিশও গিয়েছে। কিন্তু পুলিশের পোশাক পরে গরু চুরি করা হয়েছে, এই অভিযোগ তিন মানতে চাননি। এই বিষয়ে অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে তিনি। তাঁর মতে, মায়ানমার থেকে চুরি করে আনা গরু নিয়ে রামু উপজেলায় মাঝে মাঝেই ঝামেলা বাধে। সেই সময় গরু চুরির অভিযোগও ওঠে। এই ক্ষেত্রেও সেইরকম কিছু ঘটে থাকতে পারে বলে মনে করছে পুলিশ।