21st february : ‘জিন্নাহর চোখে চোখ রেখে বললেন উর্দু মানছি না’, আব্দুলের কলিজার গপ্পো শোনালেন আকবর
21st february : শুরু থেকেই ভাষা আন্দোলনের পুরোভাগে নেতৃত্ব দিতে দেখা গিয়েছিল কমরেড আব্দুল মতিনকে (Comrade Abdul Motin)। তিনিই জিন্নাহর চোখে চোখ রেখে প্রথম বলেছিলেন মানছি না উর্দু (Urdu)।
ঢাকা : সালটা ১৯৪৮। একবছর আগেই ভারতের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন হয়েছে ছিন্ন হয়েছে। তখনও লাহোরের অধীনেই রয়েছে ঢাকা। তখনওই তীব্র হয়নি পূর্ববঙ্গের স্বাধীনতার ডাক। তবে স্বাধীনতার দাবিতে ধিকি ধিকি আগুনটা তখনই জ্বলা শুরু হয়ে গিয়েছিল। ওই বছরই পাকিস্তানের (Pakistan) প্রধামন্ত্রী মহম্মদ আলি জিন্নাহ ঘোষণা করলেন দেশের রাষ্ট্রভাষা হবে উর্দু। তাতেই যেন ধিকি ধিকি জ্বলা আগুনটায় ঘৃতাহুতি পড়ল। সরাকারের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে গর্জে উঠল পূর্ববঙ্গের তরুণ-তুর্কিরা। বিপ্লবের সেই আগুন আজীবন হৃদয়ে বয়ে নিয়ে বেড়িয়েছেন ভাষা সৈনিক কমরেড আব্দুল মতিন। চোখে চোখ রেখে কথা বলেছেন পাকিস্তানের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা আলি জিন্নার। দীর্ঘদিন তাঁর সঙ্গে কাজ করেছেন আকবর খান। তাঁর স্মৃতিচারণায় বিহ্বল হতে দেখা গেল তাঁকেও।
ভাষা আন্দোলন বাংলাদেশের ইতিহাসে এমন এক গৌরবোজ্জল অধ্যায় সৃষ্টি করেছে, যেমনটা পৃথিবীর আর কোন দেশের পক্ষেই সম্ভব হয়নি। অনেক ইতিহাস বিশ্লেষক দাবি করেন, ভাষা আন্দোলনের পথ বেয়েই স্বতন্ত্র স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের উদ্ভব ঘটেছে, এ সত্য আর এখন অস্বীকার করার আর কোন উপায় নেই। কিন্তু, কী হয়েছিল ১৯৫২সালের একুশে ফেব্রুয়ারির ঠিক আগে? শুরু থেকেই ভাষা আন্দোলনের পুরোভাগে নেতৃত্ব দিতে দেখা গিয়েছিল কমরেড আব্দুল মতিনকে। তাঁর সম্পর্কে বলতে গিয়ে আকবর খান বলেন, “জিন্নাহ সাবেহ ঢাকায় যখন ঘোষণা করেছিলেন উর্দুই হবে রাষ্ট্রীয় ভাষা, তখন সেখানে উপস্থিত ছিলেন আমার বাবা। তাঁর মুখেই শুনেছি যে তরুণটি এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করে সকলের সামনেই না বলে চিৎকার করে উঠেছিলেন তিনিই সেই কমিউনিস্ট নেতা কমরেড আব্দুল মতিন।”
তিনি আরও বলতে থাকেন, “পরবর্তীতে স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার পন্থী ছাত্র সংগঠন এনএসএফের হাতে আমি প্রচণ্ড মার খেয়েছিলাম। আমার গোটা শরীর রক্তে ভাসছিল। ভর্তি হয়েছিলাম ঢাকা মেডিকেল কলেজে। তখন দেখেছিলাম একজন রাজবন্দী এসেছেন, মুখে কালো দাড়ি, হাতে হ্যান্ডকাফ। তার সঙ্গে পরিচয় শেষে জানতে পেরেছিলাম তিনিই আবদুল মতিন। আমার থেকে ১৫ বছরের বড়। তিনিই আমার নেতা। দীর্ঘদিন রাজনীতি করার কারণে তিনি আমাকে নামে চিনতেন। তিনি সেদিন আমাকে দেখে কোনওরকম করুণা না দেখিয়ে স্পষ্ট ভাষায় বললেন, মার খেয়ে এখানে এলেন, মার দিয়ে আসতে পারলেন না!”