Canada: খাবারের অর্ডার দিয়ে ডেকে এনে বেধড়ক মার, কানাডায় গাড়িচোরদের পিটুনিতে খুন ভারতীয় ছাত্র

Canada Indian student Murdered: ব্র্যাম্পটন শহরে এক বিজনেস স্কুলে পড়তেন তিনি। শেষ সেমিস্টারের পড়াশোনা বাকি ছিল। গ্রীষ্মের ছুটিতে কিছু উপরি রোজগারের জন্য এক খাদ্য সরবরাহকারী সংস্থার ডেলিভারি এজেন্ট হিসেবে কাজ করছিলেন।

Canada: খাবারের অর্ডার দিয়ে ডেকে এনে বেধড়ক মার, কানাডায় গাড়িচোরদের পিটুনিতে খুন ভারতীয় ছাত্র
৯ জুলাই তাঁকে মারধর করা হয়েছিল, ১৪ জুলাই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন গুরবিন্দরImage Credit source: Twitter
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 24, 2023 | 7:40 PM

টরন্টো: কানাডার বুকে গাড়িচোরদের নৃশংস হামলায় মৃত্যু হল এক ভারতীয় ছাত্রের। মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে প্রায় এক সপ্তাহ আগে, ৯ জুলাই ভোর ২টো বেজে ১০ মিনিট নাগাদ। ২৪ বছর বয়সী ওই ছাত্রের নাম গুরবিন্দর নাথ, থাকতেন ব্র্যাম্পটন শহরে। সেখানেই এক বিজনেস স্কুলে পড়তেন তিনি, শেষ সেমিস্টারের পড়াশোনা বাকি ছিল। গ্রীষ্মের ছুটিতে কিছু উপরি রোজগারের জন্য এক খাদ্য সরবরাহকারী সংস্থার ডেলিভারি এজেন্ট হিসেবে কাজ করছিলেন তিনি। ঘটনার দিনও মিসিসাগার ব্রিটানিয়া এবং ক্রেডিটভিউ স্ট্রিট এলাকায় তিনি পিৎজা সরবরাহ করতে গিয়েছিলেন। সেই সময়ই কিছু অজ্ঞাত পরিচয় দুষ্কৃতী তাঁকে ব্যাপক মারধর করে তাঁর গাড়িটি ছিনিয়ে নিয়ে পালায়। গুরবিন্দরের সাহায্যে এগিয়ে এসেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরা এই ভারতীয় ছাত্রকে একটি ট্রমা কেয়ার সেন্টারে নিয়ে গিয়েছিলেন। ১৪ জুলাই তাঁর মৃত্যু হয়।

কানাডার পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় একাধিক সন্দেহভাজন ব্যক্তি জড়িত আছেন। তদন্তকারীদের মতে, গাড়ি চুরির উদ্দেশ্যেই ওই নির্দিষ্ট জায়গা থেকে খাবারের অর্ডার দিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। লক্ষ্য ছিল খাবার ডেলিভারি এজেন্টকে ওই এলাকায় ডেকে এনে তাঁর গাড়িটি ছিনিয়ে নেওয়া। দুর্ভাগ্যক্রমে সেই ব্যক্তি ছিল গুরবিন্দর। সে সেখানে আসার পর, তাঁর উপর নৃশংস হামলা করা হয়। গুরুতর আঘাত লেগেছিল তাঁর মাথায়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে ওই জায়গায় ফেলে তাঁর গাড়িটি ছিনতাই করে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। পুলিশ আরও জানিয়েছে, দুষ্কৃতীদের সঙ্গে গুরবিন্দরের আগে কোনও পরিচয় ছিল না। হামলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ঘটনাস্থল থেকে মাত্র পাঁচ কিলোমিটার দূরে গুরবিন্দর নাথের গাড়িটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া যায়।

এর থেকে পুলিশের অনুমান, সম্ভবত গুরবিন্দরকে হত্যা করা আততায়ীদের উদ্দেশ্য ছিল না। গুরুতর আঘাত করে গাড়িটি ছিনিয়ে নেওয়াই তাদের মূল লক্ষ্য ছিল। আঘাতে যে গুরবিন্দরের মৃত্যু হবে, তা তাদের পরিকল্পনায় ছিল না। গুরবিন্দরের আঘাত গুরুতর বুঝেই সম্ভবত তারা দ্রুত গাড়ি ফেলে পালিয়েছে। ইতিমধ্যেই গাড়িটির ফরেনসিক পরীক্ষা করা হয়েছে। গাড়িটি থেকে বেশ কিছু প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে।

২০২১-এর জুলাইয়ে ভারত থেকে কানাডায় এসেছিলেন গুরবিন্দর। তাঁর পরিবার এবং বন্ধু-বান্ধবরা জানিয়েছেন, পড়াশোনার শেষে নিজস্ব ব্যবসা খোলার পরিকল্পনা ছিল তাঁর। টরন্টোর ভারতীয় কনসাল জেনারেল সিদ্ধার্থ নাথ গুরবিন্দরের পরিবারের সদস্য, বন্ধুবান্ধবদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। তিনি আরও জানিয়েছেন, এই ঘটনার প্রেক্ষিতে টরন্টোর ভারতীয় সম্প্রদায় গুরবিন্দরের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, ভারতীয় সম্প্রদায়ের কাছ থেকে এই ভাবে সাড়া পাওয়াটা, শোকের আবহেও আশার আলো জাগিয়েছে। গুরবিন্দরের শোকাহত পরিবারও এতে কিছুটা সান্ত্বনা পাবে বলে মনে করছেন তিনি। শনিবার, মিসিসাগায় ২০০-রও বেশি জড়ো হয়েছিলেন গুরবিন্দরের স্মরণসভায়। কানাডিয়ান ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশন বা সিবিসি জানিয়েছে, টরন্টোর ভারতীয় কনস্যুলেট জেনারেলের সহায়তায় ২৭ জুলাই গুরবিন্দর নাথের মরদেহ ভারতে নিয়ে আসা হবে।