বায়োলজিক্যাল, এন্টি নিউক্লিয়ার ওয়ারফের আর কেমিক্যাল হাতিয়ার ব্যবহার করে রাতের অন্ধকারে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে চিন!
China Military Drill in Dark of Night: নভেম্বরে একটি রিপোর্টে, মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ জানিয়েছিল যে চিন রাসায়নিক এবং জৈবিক দ্বৈত ব্যবহারের কৌশল নিয়ে গবেষণা করছে। এই রিপোর্টে বলা হয়েছে, PRC সম্ভাব্য দ্বৈত-ব্যবহারের জৈবিক কার্যকলাপে যুক্ত রয়েছে। এরপর থেকেই বায়োলজিক্যাল আর টক্সিন্স ওয়েপন কনভেনশন (BWC) এবং কেমিক্যাল ওয়েপন কনভেনশন (CWC) নিয়ে চিন্তা বেড়ে গিয়েছে।
নয়া দিল্লি: ভারত আর চিনের মধ্যে বেশ কিছুদিন ধরেই উত্তেজনা চলছে। দুই দেশের মধ্যে কয়েক দফা আলোচনা হলেও সমস্যার কোনও সমাধান হয়নি। এই অবস্থায় চিনের ব্যাপারে একটি অবাক করে দেওয়ার মতো খবর সামনে এসেছে। রাতের অন্ধকারে তারা সামরিক অনুশীলন করছে। যা দেখে মনে হচ্ছে তারা কোনও হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মির (People’s Liberation Army) জয়েন্ট মিলিটারি ব্রিগেড তিব্বতে জৈব, অ্যান্টি নিউক্লিয়ার ওয়ারফেয়ার আর রাসায়নিক হাতিয়ার সহ সামরিক অনুশীলন করছে। প্রসঙ্গত, তিব্বত লাগোয়া পূর্ব লাদাখ সীমান্তে ভারত আর চিনের মধ্যে দ্বন্দ চলছে, যা এখনও বজায় রয়েছে।
এটাই কারণ যে এই সামরিক অনুশীলনকে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হচ্ছে। এটি তিব্বতের সামরিক ক্ষেত্রের পশ্চিমী থিয়েটার কমান্ডের (WTC) অধীনে আয়োজন করা হয়েছে, যা চিনের পাঁচটি কমান্ডের মধ্যে সবচেয়ে বড়। এটি চিন-ভারতের সেই বিতর্কিত সীমান্তের জন্য দায়ী যা লাদাখ থেকে অরুণাচল প্রদেশ পর্যন্ত ৩,৪৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত। নভেম্বরের শেষদিকে আয়োজিত ২৪ ঘন্টার এই দীর্ঘ অনুশীলনের খবর মঙ্গলবার একটি অফিসিয়াল পিএলএ সংবাদ পোর্টালে প্রকাশিত হয়েছে। প্রসঙ্গত চিনের অফিসিয়াল সামরিক মিডিয়া খুব কমই সেইসব মহড়ার খবর প্রকাশিত করে, যেখানে চিনা সশস্ত্র বাহিনী আর অপ্রচলিত হাতিয়ার ব্যবহার করা হয়।
প্রকৃত যুদ্ধের অনুশীলন
খবরে সংক্ষেপে অনুশীলনের ধরন আর অংশ নেওয়া সৈনিকদের বর্ণনা করা হয়েছে, কিন্তু বিশেষত এটা উল্লেখ করা হয়নি যে এই অনুশীলন কোথায় আয়োজন করা হয়েছিল। এই খবরে লেখা হয়েছে, ‘তিব্বত মিলিটারি এরিয়া কমান্ডের অধীনে একটি যৌথ সামরিক ব্রিগেড নভেম্বরের শেষে তুষারাবৃত মালভূমিকে প্রকৃত যুদ্ধের অনুশীলন করেছে।’ এই সংবাদের শিরোনামে লেখা হয়েছে,’তিব্বত সামরিক অঞ্চলের সিন্থেটিক ব্রিগেডের ক্রস-ডে (Cross-Day) এবং নাইট মোবাইল মাল্টি-আর্ম কোঅর্ডিনেটেড প্রকৃত যুদ্ধের অনুশীলন পরিচালনা।’ রিপোর্টে আরও লেখা হয়েছে, রকেট লঞ্চ করা আর সাঁজোয়া হামলাকারী দল মোতায়েন করার পর, লক্ষ্যবস্তুতে বিস্ফোরণ ঘটাতে সেনার ইঞ্জিনিয়ারদের ডাকা হয়েছিল।
কীভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছে চিন?
এই রিপোর্টে বলা হয়েছে, কমান্ডিং অফিসার ‘পরমাণু, জৈবিক আর রাসায়নিক হামলা’র হুঁশিয়ারি দেন। রিপোর্টে আরও প্রকাশিত ‘একটি পরমাণু, জৈবিক আর রাসায়নিক হামলার মুখোমুখী হতে হয়! হঠাৎ, একটি নির্দেশ আসে। তৃতীয় ব্যাটালিয়নের কমান্ডার লি কুনফেঙ্গ গ্যাস মাস্ক পরে দ্রুত বিষাক্ত এলাকার মধ্যে চলে যান আর তারপর কমান্ড পোস্টকে পরিস্থিতির সূচনা দেন। এরপর রাসায়নিক সুরক্ষা দলের কাছে সাহায্য আর পরিশোধন (এক রকমের স্যানিটাইজ করা) করার অনুরোধ জানান। অনুশীলন চলাকালীন ‘শত্রুর’ অবস্থানের উপর সূক্ষ্মভাবে নিরীক্ষণ, দিন আর রাতের কৌশল আর মাল্টি-ওয়েপন (নানা রকমের হাতিয়ার)-এর মতো প্রধান আর কঠিন বিষয়ে মনোযোগ দেওয়া হয়।’
গ্যাস মাস্ক পরা অবস্থায় দেখা গিয়েছে সৈনিকদের
ওই রিপোর্টে অনুশীলনের ছবি ছিল, যেখানে একজন সৈন্য গ্যাস মাস্ক পরেছিলেন। এর আগে নভেম্বরে একটি রিপোর্টে, মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ জানিয়েছিল যে চিন রাসায়নিক এবং জৈবিক দ্বৈত ব্যবহারের কৌশল নিয়ে গবেষণা করছে। এই রিপোর্টে বলা হয়েছে, PRC সম্ভাব্য দ্বৈত-ব্যবহারের জৈবিক কার্যকলাপে যুক্ত রয়েছে। এরপর থেকেই বায়োলজিক্যাল আর টক্সিন্স ওয়েপন কনভেনশন (BWC) এবং কেমিক্যাল ওয়েপন কনভেনশন (CWC) নিয়ে চিন্তা বেড়ে গিয়েছে।
বড় মাত্রায় সৈন্য মোতায়েন
এই অনুশীলন পিএলএ-র চিন-ভারত সীমান্তে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকার জন্য নিরন্তর প্রচেষ্টার অংশ। এমনা বলা হয়, চিন এখানে বড় মাত্রায় সৈন্য মোতায়েন করে রেখেছে। অনুমান রয়েছে, কয়েক হাজার সেনা উন্নত হাতিয়ার সহ মোতায়েন রয়েছে। পিএলএ-র মিডিয়া জানিয়েছে, কীভাবে চিন তিব্বত আর শিংজিয়াংয়ের উচ্চ এলাকায় নিজেদের সৈন্যদের সুবিধা আর থাকার ব্যবস্থা উন্নত করেছে।