Bird Flu: আশঙ্কা হল সত্যি, মানুষের দেহে বার্ড ফ্লু; আতঙ্কের নাম সেই চিন

Bird Flu in Human: বছরের শুরুতেই বার্ড ফ্লু নিয়ে সতর্ক করেছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। শুধু পাখি নয়, মানুষও আক্রান্ত হচ্ছে এই ভাইরাসে।

Bird Flu: আশঙ্কা হল সত্যি, মানুষের দেহে বার্ড ফ্লু; আতঙ্কের নাম সেই চিন
বছরের শুরুতেই বার্ড ফ্লু নিয়ে সতর্ক করেছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Mar 04, 2023 | 9:20 AM

বেজিং: বছরের শুরুতেই বার্ড ফ্লু নিয়ে সতর্ক করেছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তারা সাফ জানিয়েছিল, এখনও পর্যন্ত বার্ড ফ্লু-এর ভাইরাস পাখির দেহেই পাওয়া গেলেও, শিগগিরই এই ভাইরাস বিবর্তিত হয়ে, করোনাভাইরাসের মতো মানুষ থেকে মানুষে ছড়িয়ে পড়ার মতো জায়গায় পৌঁছে যেতে পারে। আর সেই ক্ষেত্রে আরও এক বিশ্ব জোড়া মহামারি দেখা যেতে পারে। সেই আশঙ্কাই সত্যি হওয়ার উপক্রম হয়েছে। চিনে এক পুরুষ এবং এক মহিলার দেহে বার্ড ফ্লু ধরা পড়েছে। তবে দুই আক্রান্তের মধ্যে ৮০০ মাইলেরও বেশি ব্যবধান রয়েছে, তাই এখনই মানুষ খেকে মানুষে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ছে, এটা বলার মতো অবস্থা তৈরি হয়নি। তবে, পাখিসথেকে মানুষের দেহে ছড়িয়ে পড়ার মতো জায়গায় যে পৌঁছে গিয়েছে ভাইরাসটি, সেই কথা বলাই বাহুল্য।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে হাইলি প্যাথোজেনিক এভিয়ান ইফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস বা বার্ড ফ্লু ভাইরাস কোটি কোটি পক্ষিকূলকে ধ্বংস করছে। এবার সেই ভাইরাস মানুষের দেহেও প্রবেশ করতে পারে বলে ক্রমে উদ্বেগ বাড়ছে। এরইমধ্যে খবর পাওয়া গিয়েছে, পূর্ব চীনের জিয়াংসু প্রদেশের এক ৫৩ বছর বয়সী মহিলা গত মাসে বার্ড ফ্লুতে আক্রান্ত হয়েছেন। অন্যদিকে, দক্ষিণ চিনের গুয়াংডং প্রদেশের আরও এক ৪৯ বছর বয়সী পুরুষও কিছু পাখির সংস্পর্শে আসার পরই বার্ড ফ্লুতে আক্রান্ত হয়েছেন। তবে, এই দুই আক্রান্তের দেহে বার্ড ফ্লু-এর স্ট্রেন মানুষ থেকে মানুষে ছড়িয়েছে কিনা তা বোঝার কোনও উপায় নেই।

এর কয়েক সপ্তাহ আগেই কম্বোডিয়ায় বার্ড ফ্লু-তে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে এক কিশোরীর। তার বাবার দেহেও এই ভাইরাস পাওয়া গিয়েছিল। তারপর থেকেই বার্ড ফ্লু-এর ভাইরাস পাখি থেকে মানুষের দেহে ছড়িয়ে পড়া নিয়ে গভীর উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। তবে, এখনও এই ভাইরাস মানুষ থেকে মানুষে ছড়িয়ে পড়ার মতো জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে কিনা, সেই বিষয়ে স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়নি। বিজ্ঞানীরা অবশ্য জানিয়েছেন তারা বার্ড ফ্লু ভাইরাসের যে স্ট্রেনে আক্রান্ত হয়েছিল, সেটি ছিল অভিযোজিত স্ট্রেন। যে স্ট্রেন আগের স্ট্রেনগুলির তুলনায় মানুষকে সংক্রামিত করতে অনেক বেশি সক্ষম। তবে, কম্বোডিয়ার ক্ষেত্রে ভাইরাসটি মানুষ থেকে মানুষে ছড়ায়নি তা নিশ্চিত করা গিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা অবশ্য সতর্ক করেছেন যে, কম্বোডিয়ার এই ঘটনা ভাইরাসটির সম্ভাব্য মিউটেশনের প্রমাণ দিয়েছে।

কম্বোডিয়ার পাস্তুর ইনস্টিটিউটের গবেষক ডা. এরিক কার্লসন জানিয়েছেন, পাখিদের দেহে বার্ড ফ্লু-এর যে রূপ দেখা যায়, ওই দুই ব্যক্তির দেহে পাওয়া ভাইরাসটি তার থেকে অনেকটাই আলাদা। তিনি বলেছেন, ‘আমরা ইঙ্গিত পেয়েছি যে, এই ভাইরাসটি আগে কোনও মানুষের দেহের অভিযোজিত হয়েছে, তারপর সংক্রামিত হয়েছে। যখন এই ভাইরাসগুলি একটি নতুন হোস্টে প্রবেশ করে, তাদের কিছু পরিবর্তন হয়। যা তাদের আরও একটু ভালভাবে প্রতিলিপি তৈরি করতে বা আমাদের শ্বাসযন্ত্রের কোষগুলির সঙ্গে ভালভাবে আবদ্ধ হতে সহায়ক হয়। ভাইরাসটি এখনও মানুষের সঙ্গে পুরোপুরি খাপ খাইয়ে নিতে পারেনি, মৌলিকভাবে এটি এখনও পাখির দেহের ভাইরাস।”

বার্ড ফ্লু ভাইরাসে মানুষের মৃত্যুর হার প্রায় ৫০ শতাংশ। সাধারণত, মানুষের মধ্যে বার্ড ফ্লু সংক্রমণ বিরল। এখনও পর্যন্ত সারা বিশ্বে মাত্র ৮৭০টি ক্ষেত্রে মানুষের দেহে বার্ড ফ্লু ভাইরাস পাওয়া গিয়েছে। তবে, একবার যদি এটি মানুষের দেহের সঙ্গে পুরোপুরি খাপ খাইয়ে নিতে পারে, কোভিড-১৯-এর মতো আরও একবার থমকে যেতে পারে গোটা বিশ্ব। মানুষের চোখ, নাক, মুখে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভাইরাস প্রবেশ করলে মানুষ শ্বাসযন্ত্রের গুরুতর অসুস্থতায় ভুগতে পারে। আপাতত, প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে চিনে জনসাধারণকে ভেজা বাজার এবং খামারগুলিতে যাওয়া এড়িয়ে চলতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।