Turkey-Syria Earthquake: সময়ের বিরুদ্ধে লড়াই, তুরস্কে ১৫ হাজার পার করল মৃতের সংখ্যা, প্রবল ঠান্ডায় প্রাণ ওষ্ঠাগত শিশু-বৃদ্ধদের
Turkey-Syria Earthquake: ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল গাজিয়ানটোপ ও কাহমানমারাসের বাসিন্দা প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিতে শুরু করেছেন। তাদের অভিযোগ, "দুইদিন কেটে গিয়েছে, এখনও অবধি সরকার বা উদ্ধারকারী দলের কাউকে দেখতে পাইনি আমরা।"
ইস্তানবুল: সময়ের বিরুদ্ধে লড়াই! যত সমটয় পার হচ্ছে, ততই পরিস্থিতি কঠিন হচ্ছে ভূমিকম্প বিধ্বস্ত তুরস্ক-সিরিয়ার (Turkey-Syria Earthquake)। ক্রমশ বেড়েই চলেছে মৃতের সংখ্যা। প্রশাসন সূত্রে খবর, সোমবারের ভয়াবহ ভূমিকম্পে এখনও অবধি ১৫ হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আহত ৩৫ হাজারেরও বেশি। ধ্বংসস্তূপের মাঝে যতই উদ্ধারকাজ চলছে, ততই মৃতের সংখ্য়া (Death Toll) বাড়ার সম্ভাবনাও বাড়ছে। যদি উদ্ধারকাজে (Rescue Work) গতি না আনা হয়, তবে মৃতের সংখ্যা ২০ হাজারের কাছাকাছি পৌঁছতে পারে বলে অনুমান। এরই মধ্যে নতুন বিপত্তি দেখা দিয়েছে তুরস্ক ও সিরিয়ায়। যারা ভূমিকম্পে কোনওমতে বেঁচে গিয়েছেন, তাদের প্রবল ঠান্ডা ও তুষারপাতে প্রাণ ওষ্ঠাগত। হঠাৎ করেই তুরস্ক-সিরিয়ায় পারাপতন হয়েছে। তাপমাত্রা ০ থেকে ৩-র মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। ভূমিকম্পের জেরে বাড়িঘর ভেঙে যাওয়ায় এমনিতেই মাথা গোঁজার স্থান নেই। খোলা আকাশের নীচে প্রবল ঠান্ডায় এভাবে যদি থাকতে হয়, তবে আরও বহু সংখ্যক মানুষ, বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের মৃত্যু হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
তুরস্ক প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, ভূমিকম্পের জেরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বাড়িঘরে পাশাপাশি রাস্তাঘাটও ভেঙে গিয়েছে। ফলে বিধ্বস্ত এলাকাগুলিতে উদ্ধারকারী দল পৌঁছতে পারছে না। ত্রাণসামগ্রীও পৌঁছে দেওয়া যাচ্ছে না সেই এলাকাগুলিতে। যোগাযোগ ব্যবস্থাও বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। ভূমিকম্পে দেশ এতটাই বিধ্বস্ত যে আগামী তিন মাসের জন্য তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বের ১০টি প্রদেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে।
তবে বিপদের শেষ এখানেই নয়। ভূমিকম্পের পরে এবার নতুন করে লড়াই শুরু হয়েছে ঠান্ডার বিরুদ্ধে। এখনও ধ্বংসস্তূপের নীচে জীবিত অবস্থায় আটকে রয়েছেন অনেকে। তাদের পরিবারের সদস্যরা উদ্ধারকারী দলের অপেক্ষায় ধ্বংসস্তূপের সামনেই অপেক্ষা করছেন। কিন্তু খোলা আকাশের নীচে বৃষ্টি ও প্রবল ঠান্ডায় দীর্ঘক্ষণ থাকায়, তাদের হাইপোথার্মিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে।
ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল গাজিয়ানটোপ ও কাহমানমারাসের বাসিন্দা প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিতে শুরু করেছেন। তাদের অভিযোগ, “দুইদিন কেটে গিয়েছে, এখনও অবধি সরকার বা উদ্ধারকারী দলের কাউকে দেখতে পাইনি আমরা। আমাদের পরিবারের সদস্যরা এখনও ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়ে রয়েছে। আশেপাশে তাকিয়ে দেখুন, আমাদের সাহায্য করার মতো কেউ নেই। বাচ্চারা প্রবল ঠান্ডায় জমে যাচ্ছে।”
ভূমিকম্পের খবর পাওয়ার পরই ত্রাণ সাহায্যের কথা ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ইতিমধ্যেই বায়ুসেনার তরফে ত্রাণসামগ্রী বোঝাই একটি বিশেষ বিমান পাঠানো হয়েছে তুরস্কে। আমেরিকা, চিন ও মধ্য প্রাচ্যের দেশগুলিও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফে এমার্জেন্সি মেডিক্য়াল টিমের নেটওয়ার্ক চালু করা হয়েছে। তুরস্ক প্রশাসনের তরফে এখনও অবধি ১৫ হাজার জনের মৃত্যুর কথা ঘোষণা করা হলেও, হু-র দাবি মৃতের সংখ্যা ইতিমধ্যেই ২০ হাজার পার করেছে। ২৩ মিলিয়ন বা ২.৩ কোটি মানুষ ভূমিকম্পে প্রভাবিত হতে পারেন বলে অনুমান করা হচ্ছে।