G-20 : বিশ্ব উষ্ণায়নের মাত্রা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার শপথ জি-২০ দেশগুলির
Global Warming: ২০১৫ সালের প্যারিস চুক্তির শর্তগুলি পালন করার বিষয়ে সদস্য দেশগুলির রাষ্ট্রনেতারা সম্মত হয়েছেন। বিশ্ব উষ্ণায়নের মাত্রা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে আটকে রাখতে অঙ্গীকারবদ্ধ হয়েছে প্রতিটি দেশ।
রোম (ইতালি): আজকের দিনে দাঁড়িয়ে বিশ্ব উষ্ণায়ন হল এক জ্বলন্ত ইস্যু। আর জি-২০ সদস্য দেশগুলির রাষ্ট্রনেতারাও বিষয়টি নিয়ে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন। বিশ্ব উষ্ণায়নের পরিস্থিতি নিয়ে আজ রোমে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা করেন জি-২০ দেশগুলির প্রধানরা। সেখানে পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিশ্ব উষ্ণায়নের মাত্রা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার প্রতিশ্রুতি নেন রাষ্ট্রনেতারা।
একইসঙ্গে কয়লার ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে আনার বিষয়ে পদক্ষেপ করারও প্রতিশ্রুতি নেওয়া হয়েছে। তবে জি-২০’র চূড়ান্ত খসড়ার ঘোষণা অনুযায়ী, দূষণ নিয়ন্ত্রণের যে লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল, তা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে সদস্য দেশগুলি।
উল্লেখ্য, জি-২০ সদস্য দেশগুলিই বিশ্বের মোট কার্বন নির্গমনের প্রায় ৮০ শতাংশের জন্য দায়ী।
সংবাদ সংস্থা এএফপি দ্বারা প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে অনুযায়ী ওই খসড়া সম্পর্কে ওয়াকিবহাল একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ২০১৫ সালের প্যারিস চুক্তির শর্তগুলি পালন করার বিষয়ে সদস্য দেশগুলির রাষ্ট্রনেতারা সম্মত হয়েছেন। সেখানেই বিশ্ব উষ্ণায়নের মাত্রা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে আটকে রাখতে অঙ্গীকারবদ্ধ হয়েছে প্রতিটি দেশ।
ভারত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চিন, রাশিয়া এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন সহ অন্যান্য দেশগুলির নেতারা জাতীয় স্তরে একটি স্পষ্ট পরিকল্পনার আহ্বান জানিয়েছেন যা “স্বল্প এবং মধ্যমেয়াদী লক্ষ্যগুলি পূরণের পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্যগুলির দিকেও এগিয়ে নিয়ে যাবে। এবং এই গোটা বিষয়টি সম্ভব হবে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও সমর্থনের মাধ্যমে।
পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে বিশ্ব উষ্ণায়নের মাত্রা আটকে দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে, তা পূরণ করতে পারার অর্থ হল ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বে কার্বন নির্গমনর পরিমাণ প্রায় অর্ধেক কমিয়ে আনা যাবে এবং ২০৫০ সালের মধ্যে কার্বন নির্গমন মুক্ত বিশ্ব তৈরি করা সম্ভব হবে। কিন্তু জি-২০ কমিউনিকের কোনও এমন নির্দিষ্ট সময়ের কথা উল্লেখ নেই। সেখানে শুধুমাত্র বলা হয়েছে এই শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে আমরা কার্বন নির্গমন মুক্ত পরিবেশ পেতে পারি।”
উল্লেখ্য, বিশ্বের তাবড় তাবড় রাষ্ট্রনেতারা এখন রোমে। রয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ।বাইডেন, বরিসদের সঙ্গে খোশমেজাজে সময়ও কাটাতে দেখা যায় নমোকে।
গতকাল প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে টুইটারে কিছু ছবি শেয়ার করা হয়। আর এই ছবি থেকেই স্পষ্ট, আন্তর্জাতিক আঙিনায় ভারতের অবস্থান এখন কতটা গুরুত্বপূর্ণ। জি-২০ সদস্য দেশগুলির রাষ্ট্রনেতারা একসঙ্গে একটি ছবিও তোলেন। সেই ছবিও নরেন্দ্র মোদী শেয়ার করেছেন তাঁর টুইটার হ্যান্ডেলে।
এর আগে রোম সফরে গিয়ে পোপ ফ্রান্সিসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই প্রথমবার পোপের মুখোমুখি হলেন তিনি। ঘণ্টা খানেক মিনিটের বৈঠক হয় তাঁদের মধ্যে। জলবায়ু পরিবর্তন সহ একাধিক বিষয়ে তাঁদের মধ্যে কথা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মোদী। পোপকে ভারতে আমন্ত্রন জানিয়েছেন মোদী। গতকাল রোম সফরের দ্বিতীয় দিন ছিল প্রধানমন্ত্রীর।
সূত্রের খবর, পোপ এবং মোদীর বৈঠক হওয়ার কথা ছিল ২০ মিনিট ধরে । যদিও সেই বৈঠক এক ঘণ্টা চলেছে। একাধিক বিষয়ে নিয়ে পোপ এবং মোদীর আলোচনা হয়েছে। আলোচনায় উঠে এসেছে জলবায়ু পরিবর্তন এবং দারিদ্র্য দূরবীকরণের মতো বিষয়ও।
আরও পড়ুন : PM Modi visits Rome: কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বাইডেনের সঙ্গে ‘বন্ধুত্বে’র নতুন সমীকরণ নমোর