পাকিস্তানকে ‘সায়েস্তা’ করলেই বাঁচবে আফগানিস্তান! টুইটারে ব্যাপক ট্রেন্ডিং #SanctionPakistan

আফগানিস্তান ও তালিবানিদের মধ্যে সংঘর্ষের মাঝেই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেন, "যতদিন আসরাফ ঘানি দেশের প্রেসিডেন্ট থাকবেন, ততদিন সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলি আফগানিস্তান প্রশাসনের সঙ্গে কথাই বলবে না।"

পাকিস্তানকে 'সায়েস্তা' করলেই বাঁচবে আফগানিস্তান! টুইটারে ব্যাপক ট্রেন্ডিং #SanctionPakistan
ফাইল চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 12, 2021 | 5:04 PM

কাবুল: তালিবানদের মদত দেওয়ার অভিযোগ আগেই ছিল, এ বার সোশ্যাল মাধ্যমেও প্রতিবেশী দেশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ও বিদ্বেষ প্রকাশ করতে শুরু করল আফগানবাসীরা। তালিবানিদের আফগানিস্তান দখল নিতে সাহায্য করছে পাকিস্তান, এই অভিযোগে বিগত কয়েকদিন ধরেই টুইটারে ট্রেন্ডিং একটিই শব্দ, #SanctionPakistan। অর্থাৎ জঙ্গির আঁতুড়ঘর পাকিস্তানের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা।

বুধবার অবধি এই হ্যাশট্যাগটি ৭ লক্ষ ৩০ হাজারেরও বেশি বার ব্যবহার করা হয়েছে। এরমধ্যে ৩৭ শতাংশ টুইটই আফগানিস্তান থেকে করা। সামিল রয়েছে ভারতও। কিন্তু হঠাৎ এই হ্যাসট্যাগ ট্রেন্ডিং হতে শুরু করল কেন? আফগানিস্তানের পরিস্থিতিকে ব্যাখ্যা করতে কানাডিয়ান রাজনীতিবিদ ও প্রাক্তন মন্ত্রী ক্রিস অ্যালেকজান্ডার পাকিস্তানকে নিষিদ্ধ করতে প্রথম এই হ্যাসট্যাগ ব্যবহার করেন। তাঁর এই টুইটে  জবাব দেন আফগানিস্তানের ভাইস প্রেসিডেন্ট ওমরউল্লাহ সালেহ। তিনি বলেন, “আমরা কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। তবে, পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠলে এই পথেই হাঁটবে আফগানিস্তান।” এরপরই ট্রেন্ড করতে শুরু করে এই হ্যাসট্যাগ

ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রাক্তন সাংবাদিক হাবিব খান তোতাখিলও সরব হয়েছেন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। সোমবারই তিনি টুইট করে লেখেন, “আপনি যদি আফগান হন বা আফগানিস্তানের বন্ধু হন, তবে এখনই সরব হন।” তিনিও #SanctionPakistan ব্যবহার করেন।

আফগান প্রশাসনের তরফেও অনুরোধ করা হয়েছে যাবতীয় প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে যেন আফগানিস্তানের পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়। আফগানিস্তান যে এই যুদ্ধ চায় না, সেই বার্তাও যেন তুলে ধরা হয়।  আফগান প্রেসিডেন্ট আসরাফ ঘানি থেকে শুরু করে বিভিন্ন সরকারি আধিকারিকরাও পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক উত্তপ্ত হয়ে ওঠা নিয়ে মুখ খুলেছেন। যদিও পাকিস্তানের তরফে এই অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করা হয়েছে।

অলঙ্করণ: অভিজিৎ বিশ্বাস।

পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, তারা বরাবরই আফগান প্রশাসনকেই সমর্থন করে এসেছেন।  বুধবার পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরি আফগানিস্তানকেই দোষারোপ করে বলেন যে, আফগান সেনাই নিজেদের মাটি ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়েছে। সেই কারণেই তালিবানরা ক্ষমতা বৃদ্ধি করছে, একের পর এক প্রাদেশিক রাজধানী দখল করছে। আমেরিকার মানুষদেরও প্রশ্ন করা উচিত যে আফগান সেনা বাহিনী গড়তে যে ২ লক্ষ কোটি ডলার খরচ করা হয়েছে, তার এই হাল কেন?

তিনি আরও বলেন, “কীভাবে সমস্ত মন্ত্রী ও জেনারেলরা কোটিপতি হয়ে গেলেন, কিন্তু আফগানিস্তানের মানুষরা দারিদ্রতার শিকার? তাদের এই দুর্দশার জন্য দায়ী কে? দেশের নেতৃত্বের দুর্নীতির জন্যই গোটা দেশটি ডুবতে বসেছে। আফগানিস্তান এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ।”

মঙ্গলবারই ইসলামাবাদের নীতি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের তরফে একটি গবেষণা পত্র প্রকাশ করে জানানো হয়, স্যাংশন পাকিস্তান বলে যে হ্য়াশট্যাগটি ব্যবহার করা হচ্ছে, সেটি ভুয়োভাবে প্রচার চালানো হচ্ছে। গত ৯ ও ১০ অগস্ট মূলত ভারত ও আফগানিস্তানের অ্যাকাউন্ট থেকেই করা হয়েছে।

এ দিকে, আফগানিস্তান ও তালিবানিদের মধ্যে সংঘর্ষের মাঝেই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেন, “যতদিন আসরাফ ঘানি দেশের প্রেসিডেন্ট থাকবেন, ততদিন সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলি আফগানিস্তান প্রশাসনের সঙ্গে কথাই বলবে না।”

ইসলামাবাদে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, “তিন-চার মাস আগে ওরা যখন এসেছিল, আমি তালিবানিদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছিলাম। তারা জানিয়েছিল যতদিন আসরাফ ঘানি রয়েছেন, ততদিন ওরা কথা বলবে না।”  আরও পড়ুন: করোনা-ডেঙ্গুর কোপে দোকান খুললেও ক্রেতা নেই, মাথায় হাত বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের