Global Warming: লাফিয়ে বাড়ছে তাপমাত্রা, চরম বিপর্যয়ের হাত থেকে বাঁচবে পৃথিবী? কী বলছে IPCC-র রিপোর্ট?

IPCC’s Sixth Assessment Report: সোমবার (২১ মার্চ), তাদের ষষ্ঠ মূল্যায়ন রিপোর্টের চূড়ান্ত কিস্তি প্রকাশ করেছে জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে আন্তঃসরকারি প্যানেল বা আইপিসিসি। এই রিপোর্ট ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

Global Warming: লাফিয়ে বাড়ছে তাপমাত্রা, চরম বিপর্যয়ের হাত থেকে বাঁচবে পৃথিবী? কী বলছে IPCC-র রিপোর্ট?
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Mar 21, 2023 | 7:10 PM

নয়া দিল্লি: সোমবার (২১ মার্চ), তাদের ষষ্ঠ মূল্যায়ন রিপোর্টের চূড়ান্ত কিস্তি প্রকাশ করেছে জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে আন্তঃসরকারি প্যানেল বা আইপিসিসি। রিপোর্টে জলবায়ু সঙ্কটের তীব্রতার পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলায় কঠোর এবং জরুরি পদক্ষেপ করার আহ্বান জানিয়েছে। বলা হয়েছে কঠোর ব্যবস্থা নিলে, প্রতি বছর পৃথিবীর গড় উষ্ণতা বৃদ্ধিকে ১.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াসের মধ্যে আটকে রাখা যেতে পারে। বিজ্ঞানীদের মতে, এই রিপোর্টে জলবায়ু পরিবর্তনের সর্বশেষ অবস্থার আপডেট রয়েছে। শুধু তাই নয়, গোটা বিশ্বের সরকারগুলিকে জলবায়ু সংক্রান্ত পদক্ষেপ করতে সাহায্য করবে এই রিপোর্টটি। ইউনাইটেড নেশনস ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন ক্লাইমেট চেঞ্জ বা ইউএনএফসিসিসি (UNFCCC)-র অধীনে ২০১৫ সালে প্যারিস চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। সেই চুক্তি অনুসারে, বিশ্বের ১৯০টিরও বেশি দেশ পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি বছরে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে আটকে রাখার অঙ্গীকার নিয়েছিল। পরবর্তী সময়ে লক্ষ্যমাত্রা আরও বাড়িয়ে, বিশ্ব-উষ্ণায়ন ১.৫ ডিগ্রিতে সীমাবদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সোমবার প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে এক বছরে পৃথিবীপৃষ্ঠের গড় তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রির বেশি বাড়তে পারে। এর ৫০-৫০ সম্ভাবনা রয়েছে। আইপিসিসির চেয়ারম্যান হোয়েসুং লি বলেছেন, “প্রতি ডিগ্রি উষ্ণায়ন বৃদ্ধির ফলে দ্রুত বিপদ বাড়ছে। আরও তীব্র তাপপ্রবাহ, ভারী বৃষ্টিপাত এবং অন্যান্য চরম আবহাওয়া অবস্থা মানব স্বাস্থ্য এবং বাস্তুতন্ত্রের জন্য ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে তোলে। উষ্ণতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে জলবায়ু-নির্ভর খাদ্য এবং জলের ঘাটতি আরও বাড়বে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। জলবায়ু বিষয়ে কার্যকর এবং ন্যায়সঙ্গত পদক্ষেপকে মূলধারায় আনতে পারলে, শুধুমাত্র প্রকৃতি এবং মানব সম্পদের ক্ষতিই কমে না, অন্যান্য সুবিধাও পাওয়া যাবে।”

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব বিষয়ক প্ল্যাটফর্ম, কনসালটেটিভ গ্রুপ অন ইন্টারন্যাশনাল এগ্রিকালচারাল রিসার্চ বা সিজিআইএআর-এর ডিরেক্টর ডা. অদিতি মুখোপাধ্য়ায় বলেছেন, ভারতীয়দের মাথাপিছু কার্বন নির্গমনের পরিমাণ অনেক কম। তাই ঐতিহাসিকভাবে জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলা করার বিষয়ে ভারতের দায়িত্বও অনেক কম। কিন্তু, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ভারতেই সবথেকে বেশি পড়েছে। তাই, আমরা খুব বেশি কার্বন নির্গমন করিনি, তাই আমদের খুব বেশি পদক্ষেপ নিতে হবে না, এটা বলা যাবে না। এই রিপোর্টে প্রতিটি দেশকে জাতীয় প্রেক্ষাপট ও পরিস্থিতি অনুযায়ী জরুরি ভিত্তিতে কী কী ব্যবস্থা নিতে হবে, তা বলা হয়েছে। খাদ্য, জল, ক্ষুদ্র কৃষকদের কীভাবে রক্ষা করা যাবে এবং তার জন্য কী কী পদক্ষেপ করা যেতে পারে, রিপোর্টে সেই দিকে মনোযোগ দেওয়া হয়েছে। তাই এই রিপোর্টটি ভারতের জন্য অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক বলেই মনে করছেন ডা. অদিতি মুখোপাধ্য়ায়।

প্রতিবেদনে, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় লগ্নি ৩ থেকে ৬ গুণ বাড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বিজ্ঞানীরা জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে করা পদক্ষেপগুলিকে একত্রিত করে কার্বন নির্গমন কমাতে বৃহত্তর সুবিধা প্রদানকারী পদক্ষেপ নেওয়ার উপর জোর দিয়েছেন। ভারতে ৭,৫০০ কিলোমিটার দীর্ঘ উপকূল রয়েছে। প্রায় ৪০ শতাংশ নগরিক হিমবাহ থেকে উৎপন্ন নদীগুলির জলের উপর নির্ভরশীল। এছাড়া একটা বিস্তীর্ণ আধা-শুষ্ক উপদ্বীপ অঞ্চল রয়েছে। এই সকল ভূ-প্রাকৃতিক কারণে, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ভারতে বড় ধরণের ক্ষতি হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। তাই ভারতের প্রেক্ষিতে এই রিপোর্টটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।