Iran Anti-hijab Protest: মাঠে পরাজিত ইরান, মাঠের বাইরে জিতে গেল ইরানি মহিলারা
Iran's anti-hijab protest reaches FIFA world cup: ইরানের হিজাব বিরোধী আন্দোলনের আঁচ এসে পড়ল বিশ্বকাপের মাঠেও। মাঠে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে পরাজিত হল ইরান। কিন্তু মাঠের বাইরে জিতে গেল ইরানের মহিলারা।
দোহা: ইরানের হিজাব বিরোধী আন্দোলনের আঁচ এসে পড়ল বিশ্বকাপের মাঠেও। গোটা বিশ্বের নজর এখন কাতারে। এমন বিশ্বমঞ্চকে তাদের শাসক বিরোধী প্রতিবাদের মঞ্চ হিসেবে ব্যবহার করলেন ইরানের ফুটবলার এবং দর্শকরা। সোমবার (২১ নভেম্বর), ইংল্যান্ডেবিরুদ্ধে ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ ফুটবলের ম্যাচের আগে তৈরি হল এক আবেগঘন মুহূর্ত। দেশের শাসকদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে জাতীয় সঙ্গীত গাইতে অস্বীকার করলেন ইরানের ফুটবলাররা। তাদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে গাইলেন না স্টেডিয়ামে উপস্থিত ইরানি সমর্থকরাও। বরং, তাদের চোখের কোনে চিক-চিক করতে দেখা গেল জল।
গত কয়েক মাস ধরে ইরান জুড়ে চলছে নাগরিক প্রতিবাদ। নীতি পুলিশের হেফাজতে থাকা অবস্থায় মৃত্যু হয়েছিল ইরানি যুবতী মাহসা আমিনির। সঠিকভাবে হিজাব না পরার কারণে তাঁকে আটক করেছিল নীতি পুলিশ। সেই একটি মৃত্যুই উসকে দিয়েছে দেশ জোড়া প্রতিবাদ। সেলেব থেকে সাধারণ মানুষ, হিজাবে আগুন দিয়ে, হাওয়ায় চুল উড়িয়ে বর্তমান শাসকদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। প্রাথমিকভাবে, এই প্রতিবাদকে কড়াভাবে দমন করার চেষ্টা করেছিল ইরান সরকার। ইতিমধ্যেই সরকারি বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে শতাধীক প্রতিবাদীর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু, যত সময় যাচ্ছে ততই প্রতিবাদ আরও জোরালো হচ্ছে। বিশ্বকাপও এর বাইরে থাকল না।
This is the real Iran. Not the forcibly-veiled women and regime-sponsored supporters the Qatari-controlled broadcasters want you to see.#FIFAWorldCup pic.twitter.com/jsI4XD1mya
— Reza Pahlavi (@PahlaviReza) November 21, 2022
অবশ্য এরকম দৃশ্য যে দেখা যাবে, তার ইঙ্গিত মিলেছিল বিশ্বকাপ শুরুর আগেই। ইরানের বেশ কয়েকজন ফুটবলার আগেই প্রতিবাদীদের প্রতি সংহতি জানিয়েছিলেন। জার্মান ক্লাব বেয়ার লেভারকুসেনে খেলেন স্ট্রাইকার সর্দর আজমাউন। ইনস্টাগ্রামে আজমাউন লিখেছিলেন, “কী হবে, বড় জোড় জাতীয় দল থেকে বাদ পড়ব আমি। কোনও ব্যাপার না। ইরানি মহিলাদের মাথার চুলের জন্য আমি এই আত্মত্যাগ করতে রাজি আছি। এই স্টোরিটা ডিলিট হবে না। ওরা যা ইচ্ছা তাই করতে পারে। এত সহজে হত্যা করে চলার জন্য তোমাদের লজ্জা হওয়া উচিত। ইরানি মহিলারা দীর্ঘজীবী হোন।”
এইকে অ্যাথেন্স ক্লাবের ডিফেন্ডার তথা ইরানের জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক এহসান হজসফি কাতারে আসার পর, সাংবাদিক সম্মেলনেও হিজাব বিরোধী আন্দোলনের প্রসঙ্গ তুলেছিলেন। হজসফি বলেছিলেন, “আমরা তাঁদের সঙ্গে আছি। আমরা তাঁদের সমর্থন করি। এই অবস্থার প্রেক্ষিতে আমরা তাঁদের সমব্যথী। স্বীকার করতেই হবে হবে যে, আমাদের দেশের অবস্থা ঠিক নয়, জনগণ খুশি নয়। আমরা এখানে আছি মানে এমন নয় যে আমরা তাঁদের কন্ঠ হব না বা আমরা তাঁদের সম্মান করব না।”
শুধু মাঠের মধ্যেই নয়, হিজাব বিরোধী আন্দোলনের আঁচ দেখা যাচ্ছে। দেশে স্টেডিয়ামে বসে ফুটবল ম্যাচ দেখার অনুমতি পান না ইরানের মহিলারা। কিন্তু, কাতার বিশ্বকাপে, মনের সেই ইচ্ছে পূরণের সুযোগ পেয়েছেন খেলা পাগল ইরানি মহিলারা। লাল-সাদা-সবুজ – ইরানের জাতীয় পতাকার রঙে রেঙে স্টেডিয়ামে প্রবেশ করছেন তারা। তবে, এই টুকরো ‘স্বাধীনতা’র মধ্যেও প্রতিবাদের পথ ছাড়েননি তাঁরা। স্টেডিয়ামে তাঁরা পোস্টারের মাধ্যমে তুলে ধরছেন ইরানের হিজাব বিরোধী আন্দোলনের অমোঘ স্লোগান – “নারী, জীবন, স্বাধীনতা।”