যুদ্ধ বিরতি লঙ্ঘন করে বোমা বৃষ্টি, মৃত ৪৩৩ জন, পিছনে কি ট্রাম্প?
গতকাল রাত থেকে ২৪ ঘণ্টায় ১০৫ বার গাজায় বোমা ফেলেছে আইডিএফের বোমারু বিমান। ২০২৩ সালের অক্টোবরে থেকে ২০২৫- এর মার্চ - গত দেড় বছরে এটাই সম্ভবত দ্বিতীয় বড় হামলা।

পয়লা মার্চ শেষ হয়েছিল যু্দ্ধবিরতির মেয়াদ। গত ১৫-১৬ দিন ধরে দফায় দফায় আলোচনা চালিয়েও লাভ হয়নি। গতকাল বিকেল ৫টা নাগাদ স্পষ্ট হয়ে যায়, এখনই দ্বিতীয় দফার যুদ্ধবিরতি হচ্ছে না। এর পরপরই গাজায় শুরু হয় বিমানহানা। গত ৩০ ঘণ্টা ধরে লাগাতার বিমানহানা চলছে। গাজার বেশ কয়েকটি সেফ শেল্টার জোন খালি করার নির্দেশ দিয়েছে ইজরায়েলি ডিফেন্স ফোর্স বা আইডিএফ।
আন্তর্জাতিক মিডিয়ার দাবি, নতুন করে বিমানহানায় নিহত অন্তত ৪৩৩ জন। সংখ্যাটা ৫০০ ছাড়িয়ে যেতে পারে। ইজরায়েলের বক্তব্য, ইজরায়েলি পণবন্দীদের মুক্তি দেওয়া নিয়ে কথার খেলাপ করেছে হামাস। তাই জঙ্গিদের গুঁড়িয়ে দেওয়া ছাড়া আর কোনও পথই খোলা নেই। টাইমস অফ ইজরায়েলের প্রতিবেদনে দাবি, গতকাল রাত থেকে ২৪ ঘণ্টায় ১০৫ বার গাজায় বোমা ফেলেছে আইডিএফের বোমারু বিমান। ২০২৩ সালের অক্টোবরে থেকে ২০২৫- এর মার্চ – গত দেড় বছরে এটাই সম্ভবত দ্বিতীয় বড় হামলা।
ইজরায়েল ডিফেন্স ফোর্সের দাবি, গাজায় এখনও অনেক এলাকা হামাসের দখলে রয়েছে। সেইসব এলাকায় বাসিন্দাদের উচ্ছেদ করে গা-ঢাকা দিয়ে রয়েছে হামাস সদস্যরা। এদের খতম করতেই বিমানহানার সিদ্ধান্ত। ইজরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর নিরাপত্তা উপদেষ্টা বলছেন, এই মুহূর্তে কোনও যুদ্ধবিরতি নেই। ইজরায়েলের কোনও বাধ্যবাধকতাও নেই। তাই সর্বশক্তি দিয়ে হামাসের উপর হামলার নির্দেশ দিয়েছে ইজরায়েলের মন্ত্রিসভা। কিন্তু পয়লা মার্চ যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার পর দ্বিতীয় দফায় সমঝোতা হল না কেন? কোটি টাকার প্রশ্ন। অথচ এটার কোনও উত্তর নেই।
দ্বিতীয় দফায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে কেউই তেমন একটা উত্সাহী হয়নি। না ইজরায়েল, না হামাস, না আমেরিকা। মধ্যস্থতাকারী হিসাবে কাতারের চেষ্টায় তো কিছু হওয়ার নয়, তাই না! কেন কেউ উত্সাহী হল না? কারণ আন্তর্জাতিক দুনিয়ায় সম্পর্কের সমীকরণ পাল্টে গিয়েছে। ট্রাম্প গাজার দখল হাতে পেতে আগ্রহী। গাজায় কে এল, কে থাকল, সে নিয়ে তাঁর আগ্রহ কম। ইজরায়েল মনে করছে, হামাসের হাতে পণবন্দিদের মুক্তির সম্ভাবনা ক্রমেই কমে আসছে। তাই হামাসকে মাটিতে মিশিয়ে দেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। হামাসও গাজায় মাটি কামড়ে থাকারই চেষ্টা করছে। তাঁদের ধারণা, শান্তি প্রস্তাবের টোপ গিললে সেটা মহাভুল হবে। এমনিতেই ট্রাম্পের গাজা পুর্নগঠন প্রস্তাবে হাড়ে চটেছিল আরব দুনিয়া ও মুসলিম বিশ্ব। তাই এখনই আগ বাড়িয়ে তাঁরা খুব একটা এগোতে চাইছে না। তবে সংবাদসংস্থা এপি-র দাবি, নতুন করে শান্তি আলোচনা শুরু করতে আজই কাতার পৌঁছেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক প্রতিনিধি। তিনি যদি সবপক্ষকে রাজি করিয়ে যুদ্ধবিরতি করাতে পারেন তো ভাল। না হলে গাজায় ধ্বংসস্তুপ জমতেই থাকবে।





