Mahsa Amini: এক মৃত্যুর প্রতিবাদে প্রাণ যায় শতাধিক ‘মাহসা’র, ফাঁসির দড়ি ঝোলাতেও হাত কাঁপেনি ইরানের

Mahsa Amini: সেপ্টেম্বরের ১৬ তারিখে তেহরানের হাসপাতালে মৃত্যু হয় মাহসার।

Mahsa Amini: এক মৃত্যুর প্রতিবাদে প্রাণ যায় শতাধিক 'মাহসা'র, ফাঁসির দড়ি ঝোলাতেও হাত কাঁপেনি ইরানের
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 29, 2022 | 5:39 PM

ইরান: মাথায় হিজাব ছিল। কিন্তু ‘ঠিক মতো’ ছিল না। হয়ত একটু সরে গিয়েছিল। হয়ত একটু অন্যমনস্ক হয়ে পড়েছিলেন তরুণী। নাকি ২২ বছরের মেয়েটির ইচ্ছে করেছিল, মাথা থেকে হিজাব টেনে ফেলে দিতে? সে সব প্রশ্নের উত্তর আর পাওয়া যাবে না, কারণ সেই মেয়েটি আর বেঁচে নেই। হার্ট অ্যাটাকের পর দু’দিনের কোমা, সব প্রশ্নের উত্তর নিজের কাছে রেখেই চিরঘুমের দেশে পাড়ি দেন মাহসা আমিনি। মাহসার জানা হল না, তাঁর জন্য পথে নেমেছেন হাজার হাজার সহ নাগরিক। রাস্তায় নেমে প্রাণ দিয়েছেন তিন শতাধিক মানুষ। জানা হল না, তাঁর জন্য জাতীয় ফুটবল টিমের গলা থেকে বেরোয়নি জাতীয় সঙ্গীতের সুর।

সেপ্টেম্বরের ১৬ তারিখে তেহরানের হাসপাতালে মৃত্যু হয় মাহসার। তরুণী তখন ইরানের তথাকথিত নীতি পুলিশের হেফাজতে, যাদের পোশাকি নাম ল এনফোর্সমেন্ট কমান্ড অব দ্য ইসলামিক রিপাবলিক। কী ভাবে এই আকস্মিক মৃত্যু? থানাতেই নাকি আচমকা হার্ট অ্যাটাক হয় মাহসার। অজ্ঞান হয়ে যান তিনি। তারপর কোমায় চলে যান। আর চোখ খোলেননি তিনি। এ তো গেল প্রশাসনের ব্যাখ্যা। কিন্তু ভয় না পেয়ে আসল গল্পটা বলে ফেলেন অন্য ধৃত মহিলারা, যাঁদেরও গ্রেফতার করা হয়েছিল একই কারণে। তাঁরা জানান, মাহসাকে বেধড়ক মারধর করা হয়। আর সেই অত্যাচারের পরিণতিই এটা। এরই মধ্যে ফাঁস হয়ে যায় মাহসার মস্তিষ্কের স্ক্যান রিপোর্ট। মাথায় আঘাত, রক্তক্ষরণ, সামনে আসে অনেক কিছুই।

মাহসার রক্তক্ষরণের যন্ত্রণা পৌঁছে যায় ইরানের ঘরে ঘরে। হিজাবের মূল্য চোকাতে হল প্রাণ দিয়ে? প্রতিবাদে মহিলারা কেউ খুলে ফেললেন হিজাব, কেউ প্রকাশ্যে কেটে ফেললেন চুল। শুধু মহিলা নয়, পুরুষরাও বেরিয়ে এলেন রাস্তায়। হয়ত তাঁদের ঘরেও রয়েছে মাহসার মতো বোন কিংবা সন্তান!

প্রতিবাদ যত জোরালো হয়েছে, ততই কঠিন হয়েছে প্রশাসন। বেরিয়ে এসেছে বন্দুকের নল, ফাঁসির দড়ি। মাহসার জন্য পথে নেমে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত তিন শতাধিক মানুষ। বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছে পুলিশ। জনগণকে শিক্ষা দিতে প্রকাশ্যে ২৩ বছরের মাদিরেজা রানাভার্ডকে ফাঁসিতে চড়িয়েছে ইরান। মাদিরেজার আগে মোহসেন শেকারিকেও বিক্ষোভের জন্য মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

বিশ্বের প্রায় সব দেশ নিন্দায় মুখর। গণতন্ত্র, মানবতা, সবই কি নেহাত প্রহসন? বিচার চেয়ে পথে নামলে জনসমক্ষে এনে মেরে ফেলা হবে! এ কেমন বিচার! মাহসার আঘাতের জেরে অনেক রক্তক্ষরণ দেখল ইরান। হয়ত আরও অনেক দেখবে। কিন্তু প্রশ্ন একটাই এই মোহসেন, মাদিরেজাদের তরতাজা প্রাণের মূল্যে কি বিচার মিলবে মাহসার?