Pakistan petrol shortage: শ্রীলঙ্কার পথেই এগোচ্ছে পাকিস্তান? অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে মিলছে না জ্বালানি তেলও
Pakistan petrol shortage: ধীরে ধীরে শ্রীলঙ্কার পথেই এগোচ্ছে পাকিস্তান। পেট্রল পাম্পে মিলছে না জ্বালানি তেল।
ইসলামাবাদ: ধীরে ধীরে শ্রীলঙ্কার পথেই এগোচ্ছে পাকিস্তান। অর্থনৈতিক সঙ্কটের সঙ্গে যুঝতে থাকা পাকিস্তান এখন দ্রুত গতিতে তেল সঙ্কটের দিকে এগিয়ে চলেছে। পাশাপাশি, বিদেশি মুদ্রার ব্যাপক ঘাটতির মোকাবিলা করতে হচ্ছে ইসলামাবাদকে। ফলে, তেল কিনে যে ঘাটতি মেটানো হবে, তারও উপায় নেই। বিশেষ করে পরিস্থিতি অত্যন্ত খারাপ খাইবার পাখতুনখোয়ায় প্রদেশে। পাক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, তেল বিপণন সংস্থাগুলি আগে যে পরিমাণে তেল সরবরাহ করত, এখন তার পরিমাণ ব্যাপক কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। এরপর, খাইবার পাখতুনখোয়ার বেশিরভাগ অংশেই গাড়ি এবং মোটারবাইক, স্কুটারের দীর্ঘ লাইন দেখা যাচ্ছে। পেশোয়ার শহরের অধিকাংশ পেট্রোল পাম্প বন্ধ আছে বলে জানিয়েছেন গাড়িচালকরা।
পাক সংবাদমাধ্যমে পেশোয়ারের এক পেট্রোল পাম্পের ম্যানেজারকে বলেছেন, “বিদ্যুত বিভ্রাটের কারণে পেট্রোল পাম্পগুলিতে কোনও বিদ্যুত সংযোগ নেই। রাতে পুরো অন্ধকারে ডুবে থাকছে পেট্রোল পাম্পগুলি। এই অবস্থায় তেল বিক্রি চালিয়ে গেলে ছিনতাই হতে পারে। সেই ঝুঁকি আমরা নিতে পারছি না।” গাড়িচালকরা জানিয়েছেন, পেট্রোল পাম্পগুলিতে তাদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে। তারপর ফিলিং মেশিনের কাছে পৌঁছনোর পর, অনেক সময়ই তাঁরা জানতে পারছেন যে আর তেল পড়ে নেই। গত ৩১ ডিসেম্বর খাইবার পাখতুনখোয়া প্রশাসন বাড়িতে রান্নার গ্যাসের যাতে অভাব না হয়, তার জন্য সমস্ত সিএনজি ফিলিং স্টেশনগুলি এক মাসের জন্য বন্ধ করে দিয়েছে। তারপরে পেট্রোলের চাহিদা আরও বেড়েছে। অদূর ভবিষ্যতেও পাকিস্তানের এই জ্বালানি সঙ্কটের সমাধান হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। বরং, ফেব্রুয়ারিতে প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বর্তমানে চরম আর্থিক সঙ্কটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে পাকিস্তান। বৈদেশিক মুদ্রার ভাণ্ডার ৪.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে এসে দাঁড়িয়েছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের অনুমান অনুযায়ী চলতি আর্থিক বছরের শেষে দেশের মোট ঋণের পরিমাণ প্রায় ১৩৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছবে। যার মধ্যে প্রায় ২১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পরিশোধ করতে হবে এই বছরই। এই অবস্থায় আশঙ্কা করা হচ্ছে যে, শ্রীলঙ্কার মতো পাকিস্তানও ঋণ খেলাপির তালিকার অন্তর্ভুক্ত হবে পাকিস্তান। ২০২২ সালে বৈদেশিক মুদ্রার অভাবে শ্রীলঙ্কাতেও অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের ব্যাপক ঘাটতি তৈরি হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত মে মাসে ঋণখেলাপি দেশের তালিকায় যুক্ত হয় এই দ্বীপরাষ্ট্রের নাম।
গত সোমবার (২৩ জানুয়ারি), পাকিস্তানে দেশব্যাপী প্রায় ১৬ ঘণ্টা ধরে বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা গিয়েছিল। এই বিদ্যুৎ বিভ্রাটের জন্য জ্বালানি সরবরাহের অপ্রতুলতাই দায়ী বলে দাবি করছেন পাকিস্তানের জ্বালানি সেক্টরের সঙ্গে যুক্ত কর্তাব্যক্তিরা। নাম-পরিচয় প্রকাশ না করে এক সরকারি কর্তা বলেছেন, “পাক সরকার জ্বালানির খরচ বাঁচাতে রাতে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলি বন্ধ রাখছিল। সোমবার সকালে ফের কেন্দ্রগুলি চালু করার চেষ্টা করা হয়। তাতেই সিস্টেমটি বিগড়ে গিয়েছিল। ফলে দেশ জুড়ে সঙ্কট তৈরি হয়েছিল। দেশের এই চূড়ান্ত খারাপ পরিস্থিতির জন্য পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ এবং প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান, একে অপরকে দোষারোপ করে চলেছেন।