Russia-Ukraine Conflict: ২১ দিন পর মিলল সমাধানসূত্র, রাশিয়ার ২টি শর্ত মানলেই থামবে যুদ্ধ
Russia-Ukraine Conflict: রাশিয়ার তরফে এখনও ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ শহরের উপর লাগাতার হামলা জারি রাখা হলেও, এই বৈঠক যুদ্ধ শেষ হওয়ার ক্ষেত্রে আশার আলো দেখাচ্ছে।
কিয়েভ: অবশেষে কি শেষ হতে চলেছে রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ (Russia-Ukraine War)? বুধবার দুই দেশের মুখোমুখি আলোচনায় অবশেষে খুঁজে পাওয়া গিয়েছে বিরোধের সমাধানসূত্র। সূত্রের খবর, রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করার জন্য মিলিতভাবে একটি সম্ভাব্য পরিকল্পনা তৈরি করেছে। তবে যুদ্ধ থামানোর জন্য বেশ কিছু শর্তও রেখেছে রাশিয়া। একমাত্র সেই শর্তগুলি পূরণ হলেই ইউক্রেনের উপরে হামলা থামাবে রাশিয়া (Russia)। যে শর্তগুলি রাখা হয়েছে রাশিয়ার তরফে, তার মধ্যে অন্যতম হল ন্যাটো(NATO)-র সদস্যপদ নিয়ে ইউক্রেন (Ukraine) যেন নিজেদের উচ্চাকাঙ্ক্ষা ত্যাগ করে। সমস্ত শর্ত পূরণ হলেই রাশিয়া যুদ্ধবিরতির (Ceasefire) পথে হাঁটবে এবং সেনা প্রত্যাহার করে নেবে বলে জানানো হয়েছে।
২১ দিন পার করেছে রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ। বিগত দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে ইউক্রেন সীমান্তেই রাশিয়ান সেনা মোতায়েন থাকলেও, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের উপরে সামরিক অভিযান চালানোর ঘোষণা করেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এরপরই দুই দেশের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। যুদ্ধ শুরুর এক সপ্তাহ পর থেকেই রাশিয়া ও ইউক্রেন নিজেদের মধ্যে আলোচনা শুরু করলেও ব্যর্থ হয় প্রথম বৈঠক। এরপর দ্বিতীয় দফার বৈঠকে মানবিক করিডর তৈরিতে রাজি হয় দুই দেশ। কথা অনুযায়ীই ঘোষণা করা হয় যুদ্ধবিরতির। পরে আরও এক দফা বৈঠক হয়, যার ফলাফল ইতিবাচক ছিল বলেই জানানো হয়েছিল।
কী কী শর্ত রেখেছে রাশিয়া?
গতকাল ফের একবার আলোচনায় বসেন রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিরা। আর সেখানেই সমাধানসূত্র উঠে আসে। কিয়েভ ইন্ডিপেন্ডেন্টের দাবি, রাশিয়া ও ইউক্রেন মিলিতভাবে যুদ্ধ শেষ করার একটি পরিকল্পনা তৈরি করেছে। যদি ইউক্রেন নর্থ আটলান্টিক ট্রিটি অর্গাাইজেশন বা ন্যাটোর সদস্য হওয়ার আশা পরিত্যাগ করে এবং নিজেদের সশস্ত্র বাহিনীকে সীমাবদ্ধ রাখতে রাজি হয়, তবেই রাশিয়া যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করবে এবং ইউক্রেন থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নেবে।
রাশিয়ার তরফে এখনও ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ শহরের উপর লাগাতার হামলা জারি রাখা হলেও, এই বৈঠক যুদ্ধ শেষ হওয়ার ক্ষেত্রে আশার আলো দেখাচ্ছে। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের মতে, ইউক্রেনের উপরে আক্রমণ চালিয়ে রাশিয়া নিজেদের শক্তি জাহিরে সক্ষম হলেও, দেশের অর্থনীতি ধীরে ধীরে ভেঙে পড়ছে। একের পর এক দেশ আর্থিক অনুদান, তহবিল বন্ধ করায় একদিকে যেমন অর্থনীতিতে ধস নেমেছে, তেমনই আবার হেগের আন্তর্জাতিক আদালতের তরফেও রাশিয়াকে যথাসম্ভব শীঘ্র ইউক্রেনের উপরে সামরিক অভিযান বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ন্যাটো নিয়ে ইউক্রেনের অবস্থান:
অন্যদিকে, ন্যাটোর কাছে একাধিকবার আকাশসীমা বন্ধের আর্জি জানিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জ়েলেনস্কি। কিন্তু দুই দেশের যুদ্ধের মাঝে জড়াতে রাজি নয় ন্যাটো, তা জানিয়ে দেওয়া হয়। এরপরই প্রেসিডেন্ট জ়েলেনস্কি জানিয়েছিলেন, তারা আর ন্যাটোর সদস্য হতে চান না। উল্লেখ্য, রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধের অন্যতম কারণ হল ইউক্রেনের ন্যাটোর সদস্য হওয়ার চেষ্টা। ইউক্রেন যদি ন্যাটোর সদস্যপদ পায়, তবে তারা পরোক্ষে পশ্চিমী ক্ষমতাশীল দেশ, যেমন আমেরিকার হাতেই নিয়ন্ত্রিত হবে বলে আশঙ্কা রাশিয়ার।
গতকাল মার্কিন কংগ্রেসেও ভিডিয়ো কনফারেন্সে কথা বলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জ়েলেনস্কি। সেখানে তিনি আবেগঘন বার্তায় আমেরিকার কাছে আরও অস্ত্র-শস্ত্র ও কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি করার আবেদন জানান। কাতর আবেদন করে বলেন, “আপনাদের পাশে প্রয়োজন এখন।”