Japan Earthquake: নাগরদোলার মতো দুলছিল মেট্রোর কামরা, মনে হচ্ছিল এখুনি উল্টে যাবে! ভূমিকম্পের পরই অন্ধকারে ডুবল জাপান

Japan Earthquake: ফুকুশিমা ও প্রতিবেশী মিয়াগী শহর মিলিয়ে মোট ২ জনের এখনও অবধি মৃত্যুুর খবর পাওয়া গিয়েছে। একাধিক অঞ্চল মিলিয়ে কমপক্ষে ৯০ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে সে দেশের অগ্নিনির্বাপণ ও বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর। উপকূলবর্তী উত্তর-পূর্ব এলাকায় ভূমিকম্পের প্রভাব সবথেকে বেশি অনুভূত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

Japan Earthquake: নাগরদোলার মতো দুলছিল মেট্রোর কামরা, মনে হচ্ছিল এখুনি উল্টে যাবে! ভূমিকম্পের পরই অন্ধকারে ডুবল জাপান
ভূমিকম্পের মুহূর্ত। ছবি: টুইটার
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Mar 17, 2022 | 2:18 PM

টোকিয়ো: প্রতিদিনের মতোই কাজ সেরে বাড়ি ফিরছিলেন মেট্রো ধরে, হঠাৎই মনে হল গতি ধীর হয়ে গেল ট্রেনের। এররপই দুলুনি শুরু হল কামরা। চোখের পলক ফেলতে না ফেলতেই এত ভয়ঙ্কর মাত্রায় দুলুনি শুরু হল যে উপরের হাতল ধরেও সোজাভাবে দাঁড়ানো সম্ভব হচ্ছিল না। কোনওমতে মেট্রোর কামরার মেঝেতেই শুয়ে পড়লেন যাত্রীরা। ভূমিকম্প (Earthquake) থামার পরই স্থানীয় প্রশাসনের তরফে মেট্রোর ভিতরে আটকে থাকা যাত্রীদের উদ্ধার করা হলে, তাদের মুখে ধন্যবাদ ছাড়া একটাই কথা শোনা গেল, “কোনওমতে এবার রক্ষা পেলাম”।

বুধবার রাতেই ভয়ঙ্কর ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে গোটা জাপান (Japan)। একটা নয়, পরপর বেশ কয়েকটি কম্পন অনুভূত হয়। ভূমিকম্পের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে সুনামির আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। ভূমিকম্পের জেরে এখনও অবধি দুইজনের মৃত্যুর খবর মিলেছে, আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৯০ জন। ভূমিকম্পের পরই বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায়, অন্ধকারে ডুবে গিয়েছেন লক্ষাধিক মানুষ।

স্থানীয় প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, বুধবার মধ্যরাতের কিছুক্ষণ আগে (ভারতীয় সময় অনুযায়ী সন্ধ্যা) একাধিক ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে জাপান।  রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৭.৪। দেশের পূর্ব অংশে একাধিক জোরাল ভূমিকম্প অনুভূত হয়, এর জেরে সুনামির সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছে। এখনও অবধি ক্ষয়ক্ষতির সঠিক আন্দাজ করা যাচ্ছে না। একাধিক জায়গায় জলস্তরও স্বাভাবিকের তুলনায় ৩০ সেন্টিমিটার বেশিতে পৌঁছেছে। মধ্যরাত থেকে বৃহস্পতিবার সকাল অবধিও একাধিক ছোট ছোট কম্পন, যা আফটার শক বলেই মনে করা হচ্ছে, তা অনুভূত হয়েছে।

জানা গিয়েছে, টোকিয়োর কাছে অবস্থিত মিনামিসোমা-ফুকুশিমা থেকে ৩৫ মাইল দূরে এই ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল। ভূপৃষ্ঠ থেকে ৬০ কিমি গভীর থেকে কম্পন অনুভূত হয়েছে। উল্লেখ্য, ২০১১ সালেও এখানেই ভূমিকম্প হয়েছিল, যার জেরে সুনামি আছড়ে পড়েছিল।

প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, প্রাথমিক তথ্যের উপর ভিত্তি করে তুলনামূলকভাবে কম ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। পরমাণু কেন্দ্রেও কোনও বিশেষ ক্ষয়ক্ষতির খবর মেলেনি। সরকারি মুখপাত্র হিরোকাজ়ু মাৎসুনো বলেন, “ক্ষয়ক্ষতি যাতে বেশি না হয়, তার জন্য আমরা সবরকমের চেষ্টা করছি। এখনও অবধি আফটার শক সেভাবে অনুভব করিনি আমরা। তবে অনেক সময়ই বড় ভূমিকম্পের সময় কয়েকদিন বাদেও আফটার শক বোঝা যায়। তাই সকলে সাবধান থাকুন, ভাঙাচোরা বাড়ি বা অন্যান্য ঝুঁকিপূর্ণ জায়গা থেকে দূরে থাকুন।”

ফুকুশিমা ও প্রতিবেশী মিয়াগী শহর মিলিয়ে মোট ২ জনের এখনও অবধি মৃত্যুুর খবর পাওয়া গিয়েছে। একাধিক অঞ্চল মিলিয়ে কমপক্ষে ৯০ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে সে দেশের অগ্নিনির্বাপণ ও বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর। উপকূলবর্তী উত্তর-পূর্ব এলাকায় ভূমিকম্পের প্রভাব সবথেকে বেশি অনুভূত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। একাধিক বাড়িঘর ভেঙে পড়েছে। ভূমিকম্পের পর থেকেই টোকিয়ো সহ একাধিক শহরেই বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। মিয়াগী ও ফুকুশিমার প্রায় ৩৫ হাজারেরও বেশি বাড়িতে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। ফুকুশিমা শহরে শিনকানসেন বুলেট ট্রেনও লাইনচ্যুত হয়ে গিয়েছে। প্রায় ৪ ঘণ্টা ট্রেনের ভিতরে বন্দি থাকার পর সুরক্ষিতভাবে ৭৫ জন যাত্রীকে উদ্ধার করে আনা হয়েছে।