‘শরীর প্রদর্শন চলবে না’, আফগান মহিলাদের খেলাধুলোর অধিকারও কেড়ে নিল তালিবান
Sports ban on Afghan Women: সাংস্কৃতিক কমিশনের ডেপুটি প্রধান আহমাদুল্লাহ ওয়াসিকও নয়া নির্দেশিকা ঘোষণা করে বলেন, "মহিলাদের খেলাধুলোর কোনও প্রয়োজন নেই। এতে শরীর প্রদর্শন হয়, যা আইন বিরুদ্ধ।"
কাবুল: নতুন সরকার গঠনের পরই একের পর এক নির্দেশিকা জারি করছে তালিবান (Taliban)। মঙ্গলবার মন্ত্রিসভার ঘোষণার পরই নতুন শিক্ষামন্ত্রী শেখ মৌলবি নুরউল্লাহ মুনির জানিয়েছেন, মোল্লাাদের কাছে পিএইচডি বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রি না থাকার পরও তারা বিশ্বসেরা, তাই এই ডিগ্রিগুলির কোনও মূল্য নেই। এ বার তালিবানের সাংস্কৃতিক কমিশনের ডেপুটি প্রধান আহমাদুল্লাহ ওয়াসিক জানালেন, মহিলাদের খেলাধুলোর কোনও প্রয়োজন নেই (Sports Ban)। ক্রিকেট সহ অন্য যে কোনও ধরনের ক্রীড়াতেই মহিলারা অংশ নিতে পারবেন না, কারণ এগুলিতে শরীর প্রদর্শন হয়।
তালিবানের নতুন সরকার শরিয়া আইন অনুসরণ করে চলা হবে জানিয়েছেন সুপ্রিম নেতা হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা। মঙ্গলবার নতুন সরকারের ঘোষণার পরই তিনি দেশবাসীর উদ্দেশ্যে বলেন, “আমি আপনাদের আশ্বাস দিচ্ছি যে ইসলামিক নিয়ম ও শরিয়া আইন তুলে ধরার জন্য সর্বাত্মকভাবে আমরা চেষ্টা করব।”
এখনও অবধি সকলের চোখের আড়ালেই থাকা হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা আরও জানান, তালিবানরা আফগানিস্তানে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি, সম্প্রীতি ও উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করতে চায়। তাই দেশ ছেড়ে পলানোর চেষ্টা করা উচিত নয় আফগানবাসীর। এ দিকে, নতুন শিক্ষামন্ত্রী শেখ মৌলবি নুরউল্লাহ মুনির জানিয়ে দিয়েছেন পিএইডি বা মাস্টার্স ডিগ্রির কোনও মূল্য নেই।
তিনি বলেন, “আজকের দিনে দাঁড়িয়ে পিএইচডি বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রির কোনও মূল্য নেই। আপনারাই দেখুন, ক্ষমতায় বসে থাকা মোল্লা ও তালিবান নেতাদের কাছে কোনও পিএইচডি বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেই। তাদের কাছে হাই স্কুলের ডিগ্রিটুকুও নেই। তবুও আজ তাঁরা বিশ্ব সেরা।”
এরপরই সাংস্কৃতিক কমিশনের ডেপুটি প্রধান আহমাদুল্লাহ ওয়াসিকও নয়া নির্দেশিকা ঘোষণা করে বলেন, “মহিলাদের খেলাধুলোর কোনও প্রয়োজন নেই। এতে শরীর প্রদর্শন হয়, যা আইন বিরুদ্ধ। তাই এতদিন ধরে আফগান মহিলারা ক্রিকেট সহ অন্যান্য যে ক্রীড়াগুলিতে অংশ নিতেন, সেগুলিতে আর অংশ নিতে পারবেন না।”
চলতি সপ্তাহের শুরুতেই মহিলাদের শিক্ষাব্য়বস্থা নিয়েও নয়া নির্দেশিকা জারি করেছিল তালিবান। ফতেয়ায় বলা হয়েছিল, মহিলারা বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে পারলেও তারা ছাত্রদের সঙ্গে একই কক্ষে বসতে পারবেন না। স্বামী বা রক্তের সম্পর্ক রয়েছে, এমন কোনও পুরুষ সঙ্গীর তত্বাবধানেই তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসবেন।
রবিবারই তালিবান এডুকেশন কমিটির তরফে একটি লম্বা তালিকা প্রকাশ করা হয়, যেখানে বিশ্ববিদ্য়ালয়ের পড়ুয়াদের কী কী নিয়ম মানতে হবে, তা জানানো হয়েছে। যদি আলাদা ক্লাসরুমের ব্যবস্থা না করা যায়, তবে ১৫ জনের বেশি পড়ুয়া থাকলেও মাঝখানে পর্দা টাঙিয়ে দিতে হবে। মহিলাদের ক্লাসও ৫ মিনিট আগে শেষ করতে হবে, যাতে বেরনোর সময় পুরুষদের সঙ্গে দেখা না হয়। মহিলাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার জন্য আবায়া ও নিকাব পরতে হবে।
শিক্ষকদের ক্ষেত্রেও বলা হয় একমাত্র মহিলা শিক্ষিকারাই ছাত্রীদের পড়াতে পারবেন। একান্তই যদি শিক্ষিকা না পাওয়া যায়, তবে ভাল চরিত্রের কোনও বয়স্ক শিক্ষককে নিয়োগ করা হবে।
আরও পড়ুন: ‘অবৈধ্য সরকার মানি না’, তালিবানের নাকের ডগাতেই নতুন সরকার গঠন করবেন মাসুদ!