হাজার কোটি টাকা খরচ করেও আমন্ত্রিত নয় ভারত, তালিব সরকার গঠন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি চিন-পাকিস্তান!

সূত্রের খবর, সরকার গঠনের শেষ পর্যায়ে রয়েছে তালিবান। মিত্র দেশগুলিকে সরকার গঠনের অনুষ্ঠানে অংশ নিতে আমন্ত্রণও জানানো হচ্ছে। ইতিমধ্যেই আমন্ত্রণ পেয়েছে পাকিস্তান, টার্কি, কাতার, রাশিয়া, চিন ও ইরান।

হাজার কোটি টাকা খরচ করেও আমন্ত্রিত নয় ভারত, তালিব সরকার গঠন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি চিন-পাকিস্তান!
ফাইল চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 06, 2021 | 3:58 PM

কাবুল: আফগানিস্তানের উন্নয়নে কয়েক হাজার কোটি টাকা খরচ করেছে ভারত, এখনও বাকি রয়েছে বেশ কয়েকটি প্রকল্প। এ দিকে নতুন সরকার গঠনের অনুষ্ঠানেই আমন্ত্রিত নয় ভারত। তবে আমন্ত্রণ পত্র পেয়েছে চিন, পাকিস্তানের মতো প্রতিবেশী দেশ।

গত সপ্তাহেই ঘোষণা হওয়ার কথা ছিল নতুন তালিবান সরকারের। ২০ বছর পর আফগানিস্তানের ক্ষমতায় এসে নতুন ভাবে সবকিছু গড়তে চাইছে তালিব বাহিনী। এ দিন সকালে সাংবাদিক বৈঠকেই তালিবান মুখপাত্র জাবিদুল্লাহ মুজাহিদ আমেরিকাকে আক্রমণ করে বলেছেন, “অনুপ্রবেশকারীরা কোনওদিনই আফগানিস্তান পুনর্গঠনের কাজ করেনি। আমাদেরই নিজেদের দেশ পুনর্গঠনের কাজ করতে হবে।” সাংবাদিক বৈঠক থেকেই জানানো হয়, সরকার গঠনের শেষ পর্য়ায়ের প্রস্তুতি চলছে। আপাতত নতুন জাতীয় পতাকা ও জাতীয় সঙ্গীত স্থির করছেন তালিবানি নেতারা।

গত মাসেই কাবুল দখল করে নিলেও কিছুতেই হাতের মুঠোয় আসছিল না পঞ্জশীর। এ দিন সকালে দেশের ৩৪তম তথা শেষ প্রদেসও দখল করে নেওয়ার পরই সরকার গঠনের কাজ আরও মসৃণ হল বলে জানান তালিবান মুখপাত্র। আফগানিস্তানের নাম বদলের ঘোষণা আগেই করা হয়েছিল। এ দিন তিনি জানান, জাতীয় পতাকা ও জাতীয় সঙ্গীতও বদলে ফেলা হবে। নতুন তালিবান সরকারই এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। একইসঙ্গে সরকারি কর্মীদের জন্যও খুশির খবর শোনান তিনি। জানান, সরকারি কর্মীদের বেতন নিয়ে কোনও চিন্তা করতে হবে না। নতুন তালিবান সরকারই তাদের বেতন দেবে।

সূত্রের খবর, সরকার গঠনের শেষ পর্যায়ে রয়েছে তালিবান। মিত্র দেশগুলিকে সরকার গঠনের অনুষ্ঠানে অংশ নিতে আমন্ত্রণও জানানো হচ্ছে। ইতিমধ্যেই আমন্ত্রণ পেয়েছে পাকিস্তান, টার্কি, কাতার, রাশিয়া, চিন ও ইরান। ভারতের নাম আপাতত আমন্ত্রিত অতিথিদের তালিকায় নেই বলে জানা গিয়েছে।

ইতিমধ্যেই কাতার, টার্কি ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহির সহযোগিতায় কাবুলের হামিদ কারজ়াই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সচল করেছে তালিবান। গত সপ্তাহেই কাতার একটি বিশেষজ্ঞ দল এসেছে, তারা তালিবানদের কাবুল বিমানবন্দরের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল ও বিমান ওড়ানো শেখাচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। অন্যদিকে আফগানিস্তান দখলে পাকিস্তান মদত দিয়েছে তালিবানদের, তা সকলের কাছেই স্পষ্ট। সম্পর্কের সমীকরণ বদলেছে চিনের সঙ্গেও। ঘানি সরকারের পতনের পরই চিনের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র হুয়া চুনয়িং বলেছিলেন, “আমরা তালিবানদের স্বাগত জানাচ্ছি। আফগানিস্তানের মানুষ নিজেরাই যাতে নিজেদের ভাগ্য নির্ধারণ করে, সেটাই চায় চিন”।

উল্টোদিকে, তালিবানের মুখপাত্র সুহেল শাহিও বলেছেন, “চিন একটি বড় দেশ এবং এর অর্থনীতিও বিপুল। আফগানিস্তান পুনর্গঠনে বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারে চিন। এর আগেও আফগানিস্তানে শান্তির বার্তা প্রচারে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছে চিন। নতুন করে দেশ গঠনে তাদের মতামতকে সাদরে গ্রহণ করা হবে।”

একদিকে, আমেরিকার প্রতিপক্ষ হিসাবে চিন বিশ্বের সবথেকে শক্তিশালী দেশগুলির মধ্যে অন্যতম, তাই চিনের সঙ্গে সখ্য়তা বাড়াতে চায় তালিবান। এই মুহূর্তে দাড়িয়ে তালিবানের প্রয়োজন বিপুল পরিমাণ অর্থ সাহায্য, আর সেই সাহায্যই করতে পারে চিন। তালিবানের দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়ানোর পিছনে রয়েছে চিনের স্বার্থও। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকদের মতে, পাকিস্তানকে সামনে রেখে তালিবানকে সঙ্গে নিয়েই আফগানিস্তানকে লুঠ করাই হল চিনের আসল পরিকল্পনা। আফগানিস্তানের বিপুল খনিজ ভাণ্ডার দখলের পাশাপাশি গোটা এশিয়ার বাজার দখলেও বিশেষ সাহায্য করবে আফগানিস্তান। আরও পড়ুন: ‘আর কেউ সমস্যা তৈরি করতে চাইলেই…’, পঞ্জশীর দখল করেই হুংকার তালিবানের, খোঁজ শুরু প্রতিরোধ বাহিনীর