Russia-Ukraine Conflict : মাতৃভূমিকে বাঁচাতে হবে, রুশ সেনাকে ঠেকাতে হাতে অস্ত্র আম ইউক্রেনীয়দের
Russia-Ukraine Conflict : বহু ইউক্রেনবাসী রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়ার প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। শিখছেন বিভিন্ন অস্ত্রের ব্য়বহার। প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন বিভিন্ন পেশার সঙ্গে যুক্ত নাগরিকরা। এই যুদ্ধ বদলে দিয়েছে অনেক মানুষের রোজনামচা।
লাভিভ : যুদ্ধ বিধ্বস্ত ইউক্রেন। ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালানোর নির্দেশ দেন। তারপর থেকে লাগাতার ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে হামলা চালিয়েই যাচ্ছে রুশ সেনাবাহিনী। যুদ্ধের প্রথম দিনেই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট এবং বিদেশমন্ত্রী সাধারণ মানুষদের অস্ত্র তুলে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। তাঁরা জানিয়েছিলেন কারোর ইচ্ছে থাকলে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীতে তাঁরা যোগ দিতেই পারেন। তারপর ইউক্রেনের সাধারণ নাগরিকদের মলোটভ ককটেল বানিয়ে রুশ বাহিনীর দৌরাত্ম প্রতিরোধ করার ঘরোয়া টোটকা বানাতে দেখেছি। এরকমই বহু ইউক্রেনবাসী রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়ার প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। শিখছেন বিভিন্ন অস্ত্রের ব্য়বহার। প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন বিভিন্ন পেশার সঙ্গে যুক্ত নাগরিকরা। এই যুদ্ধ বদলে দিয়েছে অনেক মানুষের রোজনামচা।
রাশিয়া হামলা চালানোর আগে অ্যান্ড্রি সেনকিভ শান্তিবাদী ছিলেন। তিনি খেলাধূলো নিয়ে ব্লগ করতেন। জীবনে কোনওদিন বন্দুক ধরেননি তিনি। ২৭ বছর বয়সী সেই ইউক্রেনীয় এখন প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন অ্যাসল্ট রাইফেল কীভাবে চালাতে হয়। ইউক্রেনের পশ্চিমের একটি শহর লাভিভে আরও ৩০ জন নাগরিকের সঙ্গে তিনি এই প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। এই ৩০ জনের মধ্যে রয়েছেন সেলসম্যান, আইটি বিশেষজ্ঞ, রাঁধুনি এবং ফুটবলারও। বিভিন্ন পেশার মানুষ এগিয়ে অস্ত্র প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। উদ্দেশ্য একটাই, যেকোনও মূল্য়ে নিজ মাতৃভূমিকে রক্ষা করতে হবে।
এনডিটিভির একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, সেনকিভ বলছেন,”এটা খুবই ভয়ের যে, একবিংশ শতাব্দীতে, যে দক্ষতাগুলো অনেক আগেই শেষ হয়ে যাওয়া উচিত ছিল সেগুলো আবার উচ্চ চাহিদার মধ্যে রয়েছে।” তিনি রুশ সেনার বিরুদ্ধে লড়তে এবং তাদের মারতে প্রস্তুত কিনা এই প্রশ্নে সেনকিভ বলেছেন, “আমি প্রস্তুত থাকব না, কিন্তু আমি এটা করব।” সেনকিভদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন ডেনিস কোহুট। তিনি ডনবাসে লড়াই করেছিলেন এবং এখন একজন ফায়ারফাইটার। তিনি টেবিলে তিনটি অ্যাসল্ট রাইফেল রেখে ব্যাখ্যা করছিলেন যে সেই রাইফেলগুলো কীভাবে কাজ করে। সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে তিনি বলেছেন, “যদি এই ঘরে থাকা ১০ জন লোকও একটি বন্দুক তুলে রাশিয়ান সৈন্যদের গুলি করে, তাহলে প্রশিক্ষণটি মূল্যবান হবে।”
যাঁরা একসময় কম্পিউটারে মুখ গুঁজে জাভা, সি++ এ প্রোগ্রামিং করত, খেলাধূলো নিয়ে প্রতিবেদন লিখত বা বড় কোনও পাঁচতারা হোটেলে হেডকুক হয়ে খাবারেব়় গুণাগুণ চেখে দেখত তাঁরা হাতে রাইফেল তুলে নিচ্ছেন। নতুন করে পাঠ শিখছেন যুদ্ধে লড়ার। প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন কীভাবে নিজেদের সৈনিককে গুলি করা থাকতে হয়। জানছেন বিস্ফোরণের সময় কীভাবে শুয়ে পড়ে নিজের মাথা বাঁচাতে হয়। উল্লেখ্য, ইউক্রেনের ন্যাশনাল গার্ডের মতে, রাশিয়া অভিযান শুরু করার পর থেকে প্রায় ১ লক্ষেরও বেশি ইউক্রেন নাগরিক স্বইচ্ছায় রাশিয়ার সেনার বিরুদ্ধে লড়াইতে এগিয়ে এসেছে। তাঁরা আশায় বুক বাধছেন যে এই যুদ্ধ খুব শিগগির শেষ হবে। ৩৭ বছর বয়সী আইটি প্রজেক্ট ম্যানেজার ইয়ারোস্লাভ দুর্বা এখনও আশা করছেন যে কূটনীতি বা ন্যাটোর নো-ফ্লাই জ়োন রাশিয়ার আগ্রাসনকে রুখে দিতে পারে। তবে যদি যুদ্ধ চলতেই থাকে তবে দুর্বা তাঁর স্ত্রী এবং ৮ বছররের মেয়েকে ছেড়ে যুদ্ধে এগিয়ে আসতে দ্বিধা করবেন না বলে জানিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন : যুদ্ধে কীভাবে শিশুরা রাতারাতি বড় হয়ে যায়, ওরাই তার প্রমাণ