Rishi Sunak: ঋষি সুনকের শিকড় কি পাকিস্তানে? কেন তার প্রধানমন্ত্রী হওয়া নিয়ে গর্ব করছে ‘প্রতিবেশী’রা

Rishi Sunak's 'Pakistan' link: ঋষি সুনককে নিয়ে গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা ভারতীয়দের গর্বের শেষ নেই। সোশ্যাল মিডিয়ায় পাকিস্তানি নেটিজেনরাও এই ব্রিটিশ রাজনৈতিক নেতা তাঁদের গর্ব বলে দাবি করতে শুরু করেছে। কিন্তু কেন?

Rishi Sunak: ঋষি সুনকের শিকড় কি পাকিস্তানে?  কেন তার প্রধানমন্ত্রী হওয়া নিয়ে গর্ব করছে 'প্রতিবেশী'রা
ফাইল চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 26, 2022 | 7:56 AM

লন্ডন: প্রথম অ-শ্বেতাঙ্গ ব্যক্তি হিসবে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হয়ে ইতিহাস রচনা করেছেন ঋষি সুনক। তাঁকে নিয়ে গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা ভারতীয়দের গর্বের শেষ নেই। কিন্তু, ঋষি পরবর্তী ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হবেন, তা স্পষ্ট হওয়ার সময় থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় পাকিস্তানি নেটিজেনরা এই ব্রিটিশ রাজনৈতিক নেতার তাঁদের গর্ব বলে দাবি করতে শুরু করেছে। কিন্তু কেন? সুনকের সঙ্গে পাকিস্তানের যোগ কোথায়?

বর্তমানে ৪২ বছর বয়সী ঋষির জন্ম ইংল্যান্ডের সাউদাম্পটনে, এক হিন্দু-পঞ্জাবি পরিবারে। কিন্তু, তাঁর ঠাকুর্দা-ঠাকুমা জন্মেছিলেন অবিভক্ত ভারতের পঞ্জাব প্রদেশের গুজরানওয়ালা শহরে। যা বর্তমানে পাকিস্তানে অবস্থিত। ঋষির ঠাকুর্দা রামদাস সুনক, ১৯৩৫ সালে দাঙ্গার হাত থেকে বাঁচতে কেনিয়ার নাইরোবিতে পাড়ি দিয়েছিলেন। কেরানি হিসেবে কাজ নিয়েছিলেন সেখানে। তাঁর স্ত্রী, সুহাগ রানী সুনকও প্রথমে দিল্লিতে এসেছিলেন, তারপর ১৯৩৭-এ পাড়ি দিয়েছিলেন কেনিয়ায়।

রামদাস ও সুহাগ রানীর ছয় সন্তান – তিন ছেলে ও তিন মেয়ে। ঋষি সুনকের বাবা যশবীর সুনকের জন্ম হয়েছিল ১৯৪৯ সালে, নাইরোবিতে। ১৯৬৬ সালে লিভারপুল বিশ্ববিদ্যালয়ে মেডিসিন নিয়ে পড়াশোনা করার জন্য তিনি তিনি ইংল্যান্ডের লিভারপুলে এসেছিলেন। ১৯৭৭ সালে যশবীর সালে লিস্টারে ঋষির মা উষার সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল তাঁর। এর তিন বছর পর, ১৯৮০ সালে সাউদাম্পটনে জন্মগ্রহণ করেন ঋষি।

ঋষির ঠাকুর্দা রামদাস সুনক, ১৯৩৫ সালে গুজরানওয়ালা ছেড়েছিলেন, এটা জানার পর থেকেই পাকিস্তানি নেটিজেনরা, ঋষি সুনক ‘তাদের লোক’ বলে দাবি করতে শুরু করেছে। এক পাক টুইটার ব্যবহারকারী বলেছেন, “আমি মনে করি পাকিস্তানেরও ঋষি সুনাকের উপর দাবি করা উচিত। কারণ তাঁর ঠাকুর্দা গুজরানওয়ালার বাসিন্দা ছিলেন।” আরেকজন সাফ বলেছেন, “বাহ! কী অসাধারণ অর্জন। একজন পাকিস্তানি এখন ইংল্যান্ডের সর্বোচ্চ পদে আরোহণ করলেন।” আরেকজন বলেছেন,”যেহেতু গুজরানওয়ালা পাকিস্তানে, তাই ১০০ বছর আগেও যারা এই শহরের বাসিন্দা ছিল, তারা আজ পাকিস্তানি।”

কেউ কেউ অবশ্য বলেছেন, এটা ভারত ও পাকিস্তান দুই দেশের জন্যই গর্বের মুহূর্ত। একজন টুইটার ব্যবহারকারী বলেছেন, “সকালে গুজরানওয়ালার একজন পঞ্জাবি যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হবেন, এই আশা নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে শুতে যাচ্ছি! এই মুহুর্তে পাকিস্তান এবং ভারত দুই দেশেরই যৌথভাবে গর্বিত হওয়া উচিত!”

প্রসঙ্গত, লাহোর থেকে প্রায় দেড় ঘণ্টা লাগে গুজরানওয়ালা শহরে পৌঁছতে। ভাল খাবার এবং কুস্তি সংস্কৃতির জন্য পরিচিত এই শহর। দেশভাগের আগে, যখন ঋষির ঠাকুর্দা-ঠাকুমারা এখানে থাকতেন, সেই সময় এই শহরে একটি বৃহৎ ও সমৃদ্ধশালী হিন্দু সম্প্রদায় ছিল। ব্রিটিশ ভারতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা শুরু হলে, অনেক হিন্দু, শিখ এবং মুসলমান দেশান্তরিত হতে বাধ্য হয়েছিলেন। অনেক মুসলিম ও হিন্দু পরিবার আজকের ভারত ও পাকিস্তান ছেড়ে কেনিয়া এবং অন্যান্য দেশে পাড়ি দিয়েছিলেন। আজকের গুজরানওয়ালা, যানজটপূর্ণ, ঘনবসতিপূর্ণ শহর। সরু সরু রাস্তা, কাপড়, গয়না, ইলেকট্রনিক্স এবং অন্যান্য জিনিসের দোকানে ভরা।