PM Modi at US congress: ‘মোদী-মোদী’ স্লোগানে মুখরিত সভা, মার্কিন কংগ্রেসে কী বললেন প্রধানমন্ত্রী? দেখে নিন এক নজরে
PM Modi's speech at US congress: তাঁর ভাষণের মাঝে মার্কিন আইনপ্রণেতাদের দেখা যায়, করতালি দিয়ে, উঠে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে সমর্থন করতে। এমনকি, ওঠে মোদী-মোদী স্লোগানও। ঠিক কী বললেন তিনি? দেখে নিন এক নজরে -
ওয়াশিংটন: বৃহস্পতিবার (২২ জুন), মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে ঐতিহাসিক ভাষণ দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ভারত-মার্কিন বাণিজ্যিক সম্পর্ক, আন্তর্তজাতিক অর্থনীতি, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক চ্যালেঞ্জ-সহ বিভিন্ন প্রাসঙ্গিত বিষয় উঠে এসেছে তাঁর বক্তৃতায়। ভারত-মার্কিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ভবিষ্যতের বিষয়েও তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর ভাষণের মাঝে মার্কিন আইনপ্রণেতাদের দেখা যায়, করতালি দিয়ে, উঠে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে সমর্থন করতে। এমনকি, ওঠে মোদী-মোদী স্লোগানও। এই নিয়ে দ্বিতীয়বার মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ অভিবেশনে বক্তব্য রাখলেন প্রধানমন্ত্রী। বিশ্বের হাতে গোনা নেতার এই সুযোগ হয়েছে। এর জন্য নিজেকে ভাগ্যবান বলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। ঠিক কী বললেন তিনি? আসুন দেখে নেওয়া যাক –
- বক্তৃতার শুরুতেই তিনি বলেন, “মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে ভাষণ দেওয়া অত্যন্ত সম্মানের বিষয়। দুবার এই ভাষণ দেওয়ার সুযোগ পাওয়া ব্যতিক্রমী ঘটনা। এই সম্মানের জন্য, আমি ভারতের ১৪০ কোটি জনগণের পক্ষ থেকে গভীর কৃতজ্ঞতা জানাই।”
- প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে উঠে এসেছে, অত্যআধুনিক প্রযুক্তি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা এআই-এর প্রসঙ্গও। এর সঙ্গে তিনি অন্য এআই, অর্থাৎ, ভারত-আমেরিকা সম্পর্কের তুলন করেছেন। তিনি বলেন, “গত কয়েক বছরে, এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় প্রভূত অগ্রগতি ঘটেছে। একই সময়ে, আরেকটি এআই – আমেরিকা এবং ভারত-এর সম্পর্কও উল্লেখযোগ্যভাবে এগিয়েছে।”
- ভারত-মার্কিন সম্পর্ককে গণতন্ত্রের ভবিষ্যতের শুভ সূচনা বলেও উল্লেখ করেন তিনি। বলেন, “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রাচীনতম এবং ভারত বৃহত্তম গণতন্ত্র। আমাদের অংশীদারিত্ব গণতন্ত্রের ভবিষ্যতের শুভ সূচনা।”
- মার্কিন কংগ্রেসম্যানদের সামনে তিনি ভারতের বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্যের ঐতিহ্যও তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বৈচিত্র্য ভারতের জীবনধারারই অংশ। আমাদের ২২টি সরকারি ভাষা এবং হাজার হাজার উপভাষা রয়েছে। তবুও আমরা এক সুরে কথা বলি।”
- ভারতের প্রতি বর্তমানে সারা বিশ্বে আগ্রহ তৈরি হয়েছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, “সবাই ভারতের উন্নয়ন, গণতন্ত্র এবং বৈচিত্র্যের সম্পর্কে জানতে চাইছেন। সবাই জানতে চাইছেন, ভারত কী করছে, কীভাবে করছে।” ।
- সমগ্র বিশ্বের ভবিষ্যতের বিষয়ে তিনি তাঁর দৃষ্টিভঙ্গীও প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, “প্রত্যেকের আস্থা এবং যৌথ প্রচেষ্টায় সকলের উন্নতি হোক, এটাই ভারতের দৃষ্টিভঙ্গী।”
- মহিলাদের ক্ষমতায়নের বিষয়ে প্রদানমন্ত্রী মোদী বলেছেন, “ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি শুধুমাত্র মহিলাদের উন্নয়ন সাধন নয়, ভারত চায় মহিলাদের নেতৃত্বে উন্নয়ন। যেখানে, মহিলাদের অগ্রগতির যাত্রায় নেতৃত্ব দেবেন মহিলারাই।”
- জলবায়ু পরিবর্তনের বিপদের মোকাবিলা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “কয়েকটি ক্ষেত্রে সচেতন হলে প্রত্যেক ব্যক্তিই এই ক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারেন। স্থিতিশীলতাকে গণ আন্দোলনে পরিণত করতে হবে। তাহলেই, বিশ্ব দ্রুত শূন্য কার্বন নির্গমনের লক্ষ্য অর্জন করতে পারবে।”
- সন্ত্রাসবাদকে মানবতার শত্রু বলেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে কোনও দ্বিধা থাকতে পারে না।
- রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ প্রসঙ্গে ফের একবার যুদ্ধবিরোধী বার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এর আগে বহুবার বিভিন্ন মঞ্চে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘এটা যুদ্ধের যুগ নয়।’ তাঁর এই মন্তব্য জি২০-র প্রস্তাবেও গৃহীত হয়েছে। এদিন ফের সেই বিখ্যাত উক্তির পুনরাবৃত্তি করে তিনি বলেন, “এটা যুদ্ধের যুগ নয়। আলাপ-আলোচনা এবং কূটনীতির সময়। রক্তপাত এবং মানুষের দুর্ভোগ বন্ধ করতে আমাদের সকলের প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা নিতে হবে।”
এই ঐতিহাসিক বক্তৃতার শেষে মার্কিন আইনপ্রণেতাদের অনেককে দেখা যায় প্রধানমন্ত্রী মোদীর অটোগ্রাফ নিতে। কেউ কেউ তাঁর সঙ্গে সেলফিও তোলেন। মোদীকে কেন্দ্র করে উৎসাহে ভেঙে যায় রিপাবলিকান-ডেমোক্র্যাট রাজনৈতিক বিভেদও।