WHO: ‘ডিজ়িজ় এক্স’-এর মোকাবিলায় মাঠে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ডাক পড়ল ৩০০-রও বেশি বিজ্ঞানীর

WHO on future pandemics: কোভিড-১৯ মহামারি দেখিয়ে দিয়েছে, এই ধরনের প্যাথোজেনের মোকাবিলায় ঠিক কতটা প্রস্তুতির অভাব ছিল। আর যাতে তার পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেই কারণে আগে-ভাগেই কাজ শুরু করে দিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা 'হু'।

WHO: 'ডিজ়িজ় এক্স'-এর মোকাবিলায় মাঠে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ডাক পড়ল ৩০০-রও বেশি বিজ্ঞানীর
আরেকটা অতিমারি যাতে না হয়, আগে থেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছে 'হু'
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 23, 2022 | 11:17 AM

ওয়াশিংটন: বিশ্ব জুড়ে মহামারি বা অতিমারি। ২০১৯ সালের আগে পর্যন্ত এটা শুধুমাত্র কল্পনার জগতেই ছিল। বহু উপন্যাসে, সিনেমায় এই ধারণা দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তা যে বাস্তবে কোনওদিন দেখা যেতে পারে, তা কেউই বিশ্বাস করতে পারেনি। সেই অবিশ্বাসের মূলে আঘাত হেনেছে কোভিড-১৯ অতিমারি। দীর্ঘ প্রায় এক বছর পুরোপুরি স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল গোটা বিশ্ব। সেই জোরালো ধাক্কা সামলে, এখন ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরছে মানব সভ্যতা। কোভিড-১৯ মহামারি দেখিয়ে দিয়েছে, এই ধরনের প্যাথোজেনের মোকাবিলায় ঠিক কতটা প্রস্তুতির অভাব ছিল। আর যাতে তার পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেই কারণে আগে-ভাগেই কাজ শুরু করে দিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা ‘হু’। রাষ্ট্রসঙ্ঘের আওতাধীন এই সংস্থা জানিয়েছে, যে প্যাথোজেনগুলি ভবিষ্যতে কোভিডের মতো মহামারী সৃষ্টি করতে পারে, তাদের একটি অগ্রাধিকারের তালিকা তৈরি করেছে তারা। ভবিষ্যতের মহামারি মোকাবিলায় এখন থেকেই এই প্যাথোজেন বা রোগজীবাণুগুলিকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হচ্ছে। আর এই অগ্রাধিকারের তালিকায় সবার প্রথমে রয়েছে ‘ডিজ়িজ় এক্স’।

তবে, এই প্রথম এই তালিকা তৈরি করল হু, এমনটা নয়। ২০১৭ সালেই প্রথমবার এরকম একটি তালিকা তৈরি করেছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তারপর ২০১৮ সালে সেই তালিকা আপডেটও করা হয়েছিল। সেই সময় অবশ্য বিজ্ঞানীদের বাইরে কেউ সেই তালিকা নিয়ে বিশেষ মাথা ঘামায়নি। কিন্তু, সেই গবেষণা হয়েছিল বলেই, দ্রুত কোভিড-১৯’এর কার্যকর ও নিরাপদ টিকা তৈরি করা সম্ভব হয়েছে। কোভিড-১৯ মহামারির বছরগুলি পেরিয়ে ২০২২ সালে ফের আপডেট করা হল এই তালিকা।

বর্তমান তালিকায় রয়েছে কোভিড-১৯, ক্রিমিয়ান-কং হেমোরেজিক ফিভার, ইবোলা ভাইরাস ডিজি়জ়, মারবার্গ ভাইরাস ডিজি়জ়, লাসা জ্বর, মিডল ইস্ট রেসপিরেটরি সিন্ড্রোম বা মার্স, সিভিয়ার রেসপিরেটরি সিনড্রোম বা সার্স, নিপাহ ভাইরাস, হেনিপাভাইরাল রোগ, রিফট ভ্যালি জ্বর, জিকা এবং ডিজি়জ় এক্স। বাকি প্যাথোজেন বা রোগগুলির সঙ্গে মানব সভ্যতা ইতিমধ্যেই পরিচিত হলেও, ডিজ়িজ় এক্স-এর সঙ্গে এখনও মোলাকাত হয়নি। আসলে ডিজ়িজ় এক্স কোনও রোগ নয়। একটি আন্তর্জাতিক স্তরের গুরুতর মহামারি ঘটাতে পারে, এমন কোনও অজানা রোগজীবাণুর কথা বোঝাতে ‘ডিজ়িজ় এক্স’ শব্দ বন্ধটি ব্যবহার করা হয়। সার্স-কোভ-২’এর মতো অজানা এই রোগজীবাণু যাতে মানব সভ্যতাকে স্তব্ধ না করে দিতে পারে, সেই কারণেই এই অজানা রোগকে এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ডিজি়জ় এক্স-সহ মোট ২৫টি ভাইরাস পরিবার এবং ব্যাকটেরিয়া নিয়ে গবেষণা করার জন্য গোটা বিশ্ব থেকে ৩০০ জনেরও বেশি বিজ্ঞানীকে আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

হু-এর হেলথ ইমার্জেন্সি প্রোগ্রামের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ডাঃ মাইকেল রায়ান জানিয়েছেন, অগ্রাধিকারের তালিকায় থাকা এই প্যাথোজেন এবং ভাইরাস পরিবারগুলি নিয়ে গবেষণা ভবিষ্যতের মহামারিকে প্রতিরোধ করার জন্য ভ্যাকসিন বিকাশে সহায়ক হবে। তিনি বলেছেন, “একটি দ্রুত এবং কার্যকর মহামারি প্রতিক্রিয়ার জন্য এই অগ্রাধিকারের প্যাথোজেন এবং ভাইরাস পরিবারগুলিকে নিশানা করা অপরিহার্য। কোভিড-১৯ মহামারির আগে গবেষণা ও উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বিনিয়োগ না করা হলে, রেকর্ড সময়ে নিরাপদ এবং কার্যকর ভ্যাকসিন তৈরি করা সম্ভব হত না।” বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বিজ্ঞানী ডা. সৌম্যা স্বামীনাথনের মতে, এই তালিকাটিকে হল পরবর্তী মহামারি হুমকির মোকাবিলা করার জন্য গবেষণা সম্প্রদায়ের একটি রেফারেন্স ‘পয়েন্ট’।