Do Not Invest Here: এই ১০ জায়গায় বিনিয়োগ, পথে বসাতে পারে আপনাকে
Investment Tips: একজন বিনিয়োগকারী হিসাবে সব সময় জানা উচিৎ কোন কোন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করলে তিনি ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন। এখানে রইল এমন ১০টি ক্ষেত্রের খোঁজ যেখানে বিনিয়োগ করা আসলেই অনেক বেশি বিপজ্জনক।
যে কোনও মানুষ সর্বদাই জানতে চায় তারা কোথায় বিনিয়োগ করবে। কিন্তু কোথায় বিনিয়োগ করা ঠিক নয় সেই বিষয়ে সাধারণ মানুষের আগ্রহ বেশ কিছুটা কম বলেই মনে করা হয়। মাঝে মাঝে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিনিয়োগের ট্রেন্ড আসে। এর মধ্যে কিছু ভাল আবার কিছু ভাল নয়। ফলে এই ট্রেন্ড থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে সঠিক জায়গায় বিনিয়োগ করা খুবই জরুরি।
ইউলিপ বা ইউনিট লিঙ্কড ইন্সিওরেন্স পলিসি
এই ধরণের পলিসিতে যে কোনও বিনিয়োগকারীকে বলা হয়, এতে বিমাও হবে আবার মিউচুয়াল ফান্ডের মতো রিটার্নও পাওয়া যাবে। অনেকেই এক্ষেত্রে মনে করে জীবনবিমা বা টার্ম ইন্সিওরেন্স করলে যেহেতু অনেকক্ষেত্রে টাকা ফেরত আসে না তাই তার তুলনায় ইউলিপ করা ভাল। ইউলিপের রিটার্ন মিউচুয়াল ফান্ডের তুলনায় অনেক কম। তাছাড়া এই ধরণের পলিসিতে বিভিন্ন রকম ট্যাক্স কেটে নেয়। আর টার্ম ইন্সিওরেন্সের তুলনায় ইউলিপের কভারেজ অনেক কম। বিনিয়োগকারীর অবর্তমানে তাঁর পরিবারের জন্য সেই টাকা পর্যাপ্ত নয়।
ফিউচার অ্যান্ড অপশনস
নতুন যারা বিনিয়োগ করা শুরু করেছে তাদের অনেকেই ফিউচার অ্যান্ড অপশনসে বিনিয়োগ করার পছন্দ করে। কারণ এই ধরণের বিনিয়োগ বিনিয়োগকারীকে খুব দ্রুত সম্পদশালী করে তুলতে পারে। কিন্তু এই ধরণের বিনিয়োগে ঝুঁকি অনেকগুণ বেশি। ওয়ারেন বাফেট ফিউচার অ্যান্ড অপশনসকে পারমানবিক অস্ত্রের সঙ্গে তুলনা করেছেন। তিনি বলেছেন, “ফিউচার অ্যান্ড অপশনস আসলে গণবিধ্বংসী অস্ত্র”(Weapon Of Mass Destruction)।
ট্রেডিং
ট্রেডিং বলতে ইন্ট্রাডে, মোমেন্টাম ট্রেডিং বা স্যুইং ট্রেডিংকে বোঝানো হয়। হঠাৎ যদি কোনও স্টকের মূল্য পরিবর্তিত হয় বা যে স্টকের দাম উঠছিল সেটি হঠাৎ অনেকটা পড়ে যায় তাহলে বিনিয়োগকারীর খুব দ্রুত অনেক আর্থিক ক্ষতি হতে পারে। আর এই ধরণের বিনিয়োগের ফলে প্রথমিক বিনিয়োগের তুলনায় বিনিয়োগকারী আরও অনেক বেশি অর্থ হারাতে পারে।
অ্যাকটিভ লার্জ কাপ মিউচুয়াল ফান্ড
সেবির নিয়ম অনুযায়ী লার্জ ক্যাপ ফান্ডগুলোকে তাদের এইউএম-এর (AUM or Asset Under Management) ৮০ শতাংশ লার্জ ক্যাপ স্টকে বিনিয়োগ করতে হয়। অর্থাৎ স্টক মার্কেটের সবচেয়ে বড় ১০০টা কোম্পানির মধ্যে এই টাকা বিনিয়োগ করতে হয় তাদের। ফলে এই ধরণের মিউচুয়াল ফান্ডগুলোর রিটার্ন প্রায় একই রকম হয়। আর সেই কারণেই এই শরণের ফান্ড থেকে মার্কেটের তুলনায় বেশি রিটার্ন পাওয়া বেশ কষ্টের। ইনডেক্স ফান্ডের ক্ষেত্রে ফান্ড ম্যানেজার ট্যাক্স বা বিভিন্ন চার্জ ১ বা ২ শতাংশ কম নেয় ফলে, লার্জ ক্যাপের বদলে ইনডেক্স ফান্ডে বিনিয়োগ করা লাভজনক।
পি২পি লেন্ডিং (P2P Lending)
পি টু পি বা পিয়ার টু পিয়ার লেন্ডিং বর্তমানে অনেকক্ষেত্রে বেশ জনপ্রিয় হয়েছে। বর্তমানে বিভিন্ন অ্যাপ তৈরি হয়েছে যারা এই পি টু পি লেন্ডিংয়ের মাধ্যমে অনেক বেশি অর্থ উপার্জনের স্বপ্ন দেখায়। এই ধরণের অ্যাপগুলো এই ধরণের বিনিয়োগের ক্ষেত্রে থাকা রিস্কের কথা বলে না। এরা শুধু এই ধরণের বিনিয়োগে বেশি রিটার্ন পাওয়া যায় তার কথা বলে।
কর্পোরেট বন্ড
ফিক্সড ডিপোজিটের ক্ষেত্রে ৬ থেকে ৭ শতাংশ রিটার্ন পাওয়া যায়। অন্য দিকে কর্পোরেট বন্ড থেকে প্রায় ১০ শতাংশের কাছাকাছি রিটার্ন মেলে। কিন্তু যে কোম্পানির কর্পোরেট বন্ড কোনও বিনিয়োগকারী কিনবে সেই কোম্পানির দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে প্রশ্ন উঠতে বাধ্য কোম্পানি সাধারণ মানুষের থেকে কেন টাকা তুলছে? তারা লোন নিলে এর থেকে কম সুদে লোন পেতে পারত। এই ক্ষেত্রে কোনও বিনিয়োগকারীর সব টাকা কর্পোরেট বন্ডে বিনিয়োগ করার থেকে অর্ধেক টাকা ব্যাঙ্কে ফিক্সড ডিপোজিট করা ও বাকি টাকা মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করা উচিৎ। তাতে অন্তত বিনিয়োগের ঝুঁকি কমবে। যে টাকা ফিক্সড ডিপোজিট করা থাকবে তা একেবারে ঝুঁকিহীন। অর্থাৎ, কম ঝুঁকিতে ভাল রিটার্ন পাওয়া যাবে।
রিয়েল এস্টেট
কোনও পুরানো ফ্ল্যাট কম দামে পেলেও কেনা উচিৎ নয়। কারণ এই ধরণের বেশিরভাগ অ্যাসেটের দাম সময়ের সঙ্গে সঙ্গেই কমতে থাকে। তার থেকে নতুন যে ফ্ল্যাট তৈরি হচ্ছে সেখানে বিনিয়োগ করা ভাল অপশন। তবে হ্যা, যদি কোনও পুরানো বাড়ি বা বাংলো কেউ কেনে যার সঙ্গে জমিও আছে, সেক্ষেত্রে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাড়ি বা বাংলোর মূল্য কমতে থাকলেও জমির দাম সময়ের সঙ্গে বাড়তে থাকে। কিন্তু পুরানো ফ্ল্যাট কেনার ক্ষেত্রে অবশ্যই সাবধান থাকা উচিৎ।
পেনি স্টক
পেনি স্টকে বিনিয়োগ করতে অনেকেই চায়। কিন্তু ‘পেনি স্টক’ -এর সংজ্ঞা অনেকেই জানে না। পেনি স্টক আসলে সেই স্টককে বলে যার প্রতি শেয়ারের দামও কম সঙ্গে কোম্পানিটাও খুব বড় নয়। অর্থাৎ কোনও কোম্পানির শেয়ারের দাম ৩ বা ৪ টাকা হলেই সেটা পেনি স্টক নয়। এমআরএফ কোম্পানির স্টকের দাম ১ লক্ষ টাকার কাছাকাছি। এবার এমআরএফ কোম্পানি যদি তাদের প্রতি শেয়ারকে ১ লক্ষ শেয়ারে ভেঙে দেয় তাহলেই কিন্তু এমআরএফ পেনি স্টক হয়ে যাবে না। কারণ এমআরএফ-এর মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন ৪৫ হাজার কোটির বেশি।
আইপিও
আইপিও-র ব্যাপারটা বেশ সহজ। কোম্পানির মালিকগোষ্ঠী নিজেদের কোম্পানির অংশীদারিত্ব বিক্রি করে দিচ্ছে জনসাধারণের কাছে। খুব সাধারণ হিসাবে কোনও বিক্রেতা যখন কিছু বিক্রি করে তখন সে সেই জিনিসের পরিবর্তে সব সময় সর্বোচ্চ অর্থ চায়। আইপিও-র ক্ষেত্রেও তাই। এছাড়াও আরও একটা প্রশ্ন ওঠে এই ক্ষেত্রে। কোনও একটা আইপিও আসছে, সেটাই সব থেকে ভাল কীভাবে হয়? দেশে তো আরও ৫০০০-এর বেশি কোম্পানি রয়েছে। সেক্ষেত্রে আইপিও আসার সঙ্গে সঙ্গেই না কিনে কিছুদিন পরে কেনাই সঠিক পদ্ধতি।
ক্রিপ্টো
ক্রিপ্টোর কোনও স্বকীয় মূল্য (Intrinsic Value) নেই। যেরকম, সোনার একটা স্বকীয় মূল্য রয়েছে। কিনে ফেলে রেখে দিলে যখনই বিক্রি করা হবে, তার দাম পাওয়া যাবে। বা কোনও শেয়ার কিনলে, সেই কোম্পানির অংশিদারিত্ব কেনা হল। অর্থাৎ কোনও অ্যাসেটের স্বকীয় মূল্য বেশ কয়েকটি ব্যাপারের উপর নির্ভর করে। কিন্তু ক্রিপ্টোর ক্ষেত্রে ব্যাপারটা এমন নয়। মানুষ কিনছে, তাই তার চাহিদা বাড়ছে, ফলে দামও বাড়ছে। এর পিছনে কোনও অ্যাসেট যুক্ত নেই।