State Economy: ন্যূনতম চাহিদা মিটলেই কমে দুর্নীতি, কতটা সতর্ক থাকতে হয় রাজ্যগুলিকে?

State Economy: প্রতিটি রাজ্য সরকারের যে কয়েকটি বিষয় নিশ্চিত করা প্রয়োজন, তা হল স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সুরক্ষা। এই মৌলিক চাহিদা না মিটলে, একদিকে নির্ভরশীলতা বাড়ে ফলে ব্যক্তিগত প্রচেষ্টা হ্রাস হয়, নির্ভরশীলতার কারণে বাড়ে দুর্নীতি। তবে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে, অর্থনীতির ক্ষেত্রে দুরদর্শিতার পরিচয় না দিয়ে রাজনৈতিক জয়কেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন রাজনীতিকরা?

State Economy: ন্যূনতম চাহিদা মিটলেই কমে দুর্নীতি, কতটা সতর্ক থাকতে হয় রাজ্যগুলিকে?
প্রতীকী ছবিImage Credit source: Facebook
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 18, 2023 | 11:54 PM

নয়া দিল্লি: প্রতিটি রাজ্যের খরচের ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট পরিকল্পনা থাকা প্রয়োজন। সরকারি টাকা কীভাবে, কোন খাতে খরচ করা হবে, তার একটা স্পষ্ট ছবি থাকা দরকার বলেই মনে করছেন অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। কারণ এই খরচের ওপরেই নির্ভর করে কোনও রাজ্যের উন্নতি বা রাজ্যবাসীর ‘ভাল থাকা’। মনে করা হয়, যে কোনও রাজ্যের বাজেটই হল রাজ্যের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতির আয়না।

সাধারণ মানুষের টাকা যাতে সঠিক খাতে ব্যবহার করা হয়, সেটাই হওয়া উচিত যে কোনও রাজ্যের সরকারে মূল লক্ষ্য। যে ক্ষেত্রে প্রয়োজন, যেখানে খরচ করলে মানুষের কাজে লাগবে, সেই ক্ষেত্রে খরচ করার কথা মাথায় রাখতে হবে সরকারকে। যেমন -শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নির্মাণের মতো ক্ষেত্রগুলিই খরচ করার জন্য বেছে নেওয়া প্রয়োজন। তাতে দুর্নীতিমুক্ত থাকা সম্ভব। আর সেটাই একজন নাগরিক সবথেকে বেশি পছন্দ করেন।

অনেক সময় সাধারণ মানুষকে প্রলোভন দেখিয়ে অনেক উদ্যোগ নিয়ে থাকে সরকার। সে ক্ষেত্রে তৎক্ষণাৎ রাজনৈতিক লাভ হতে পারে, কিন্তু তাতে রাজ্যর সার্বিক অর্থনৈতিক অবস্থার ওপর সুদূর প্রসারী প্রভাব ফেলতে পারে বলেই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

রবি অ্যান্ড কাপুর একটি সমীক্ষা করে জানিয়েছে, কেরল, পঞ্জাব, মহারাষ্ট্র, কর্নাটক, গুজরাটের মতো বড় রাজ্যগুলিতে জন প্রতি খরচ প্রায় জাতীয় স্তরের মতোই। তবে পশ্চিমবঙ্গ বা বিহারের মতো রাজ্যের ক্ষেত্রে তেমনটা নয়।

খরচ মূলত দু রকমের হয়- উন্নয়নমূলক ও অনুন্নয়নমূলক। উন্নয়নমূলক অর্থাৎ যা সামাজিক পরিষেবার কথা মাথায় রেখে খরচ করা হয়। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, পঞ্জাব ও কেরল ছাড়া সব রাজ্যেই উন্নয়নমূলক খাতে খরচ ৫০ শতাংশের বেশি। তবে পশ্চিমবঙ্গ ও উত্তর প্রদেশের ক্ষেত্রে ১৯৯০ থেক ২০২০-র মধ্যে উন্নয়নমূলক খরচের পরিমাণ কমেছে। রবি অ্যান্ড কাপুরের সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, পার ক্যাপিটা গ্রোথের ক্ষেত্রে অনেকটাই পিছিয়ে আছে পশ্চিমবঙ্গ ও পঞ্জাব।

যে কোনও রাজ্যের অর্থনীতির ক্ষেত্রে পেনশন বিষয়টা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ২০০৩-০৪ সালে কেন্দ্রীয় সরকার পেনশনে সংস্কার আনে, যা অনেক দূরদর্শিতার পরিচয় দেয়। এই সংস্কারের পরে বেশ কিছু পরিবর্তন আসে। এই সংস্কার করা হয়েছিল মূলত নারী, শিশু ও পিছিয়ে পড়া মানুষের কথা ভেবে। হিমাচল প্রদেশ ও পঞ্জাবে যথাক্রমে ৩৭ ও ৩১ শতাংশ উন্নয়নমূলক বাজেট বরাদ্দ থাকে পেনশনের জন্য, যা গোটা দেশের মধ্যে সবথেকে বেশি। এর জন্য ওই রাজ্যগুলিতে অন্যান্য পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হন সাধারণ মানুষ।

প্রতিটি রাজ্য সরকারের যে কয়েকটি বিষয় নিশ্চিত করা প্রয়োজন, তা হল স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সুরক্ষা। এই মৌলিক চাহিদা না মিটলে, একদিকে নির্ভরশীলতা বাড়ে ফলে ব্যক্তিগত প্রচেষ্টা হ্রাস হয়, নির্ভরশীলতার কারণে বাড়ে দুর্নীতি। বিশেষজ্ঞদের মতে, রাজ্যের দুটো বিষয়ে কড়া নিয়ন্ত্রণ থাকা উচিত- ঋণের বোঝা যাতে বাড়ে, রাজনৈতিক স্বার্থে বিনামূল্যে পরিষেবা বিতরণ করার প্রবণতা যেন তৈরি না হয়।

তবে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে, অর্থনীতির ক্ষেত্রে দুরদর্শিতার পরিচয় না দিয়ে রাজনৈতিক জয়কেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন রাজনীতিকরা? এই প্রবণতা কার্যত দেউলিয়া করে দেওয়ার সমতুল্য। ফলে রাজ্যের মানুষ ভাল না থাকলে তার দায় বর্তাবে সরকারের ওপরেই।