Fiscal Health: অ-বিজেপি শাসিত কেরল, পঞ্জাব ও পশ্চিমবঙ্গের আর্থিক অবস্থা মন্দ, বলছে গবেষণাপত্র

Fiscal Health: প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা কমিটি (EAC-PM) -র সদস্য ড. শমিকা রবি এবং ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউটের (ISI)-এর ড. মুদিত কাপুর 'ভারতে রাজ্যের বাজেট: ১৯৯০ থেকে ২০২০ পর্যন্ত পর্যবেক্ষণমূলক সময়ের প্রবণতা বিশ্লেষণ' শীর্ষক একটি গবেষণাপত্র তুলে ধরেছেন। এই গবেষণাপত্র ভারতের রাজ্যগুলির আর্থিক পরিস্থিতির অবস্থা বিশ্লেষণ করা হয়েছে।

Fiscal Health: অ-বিজেপি শাসিত কেরল, পঞ্জাব ও পশ্চিমবঙ্গের আর্থিক অবস্থা মন্দ, বলছে গবেষণাপত্র
প্রতীকী ছবি।Image Credit source: unplash
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 18, 2023 | 11:45 PM

নয়া দিল্লি: ভোটারদের মন জয় করতে ও ভোট টানতে বর্তমানে রাজনৈতিক দলগুলি একাধিক ভাতা-সহ বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দেয়। যেমন, ভর্তুকিযুক্ত গ্যাস সিলিন্ডার থেকে বিনামূল্যে বাস পাস, বেকারত্ব ভাতা থেকে সরাসরি নগদ সুবিধা, এমনকি বিনামূল্যে জল, বিদ্যুৎ পর্যন্ত দেওয়ার ঘোষণা করে। সদ্য সমাপ্ত বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে কংগ্রেসও এরকম প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু, ভোটের খেলায় জিততে এই ধরনের প্রতিশ্রুতি দেওয়া সহজ হলেও রাজ্যের আর্থিক পরিস্থিতির নিরিখে সেগুলি পূরণ করা কার্যত কঠিন। অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, সর্বদা সীমিত অর্থ বিশেষ পরিকল্পনার সঙ্গে ব্যয় করতে হয়। কিন্তু, রাজনীতিবিদদের একাংশ এই বিষয়টিতে গুরুত্ব দেন না। তাঁদের জন্য কয়েকটি রাজ্যের নিরিখে একটি স্পষ্ট ছবি তুলে ধরল EAC-PM (প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা কমিটি) ও ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউটের (ISI)।

EAC-PM (প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা কমিটি) এর সদস্য ড. শমিকা রবি এবং ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউটের (ISI)-এর ড. মুদিত কাপুর ‘ভারতে রাজ্যের বাজেট: ১৯৯০ থেকে ২০২০ পর্যন্ত পর্যবেক্ষণমূলক সময়ের প্রবণতা বিশ্লেষণ’ শীর্ষক একটি গবেষণাপত্র তুলে ধরেছেন। এই গবেষণাপত্র ভারতের রাজ্যগুলির আর্থিক পরিস্থিতির অবস্থা বিশ্লেষণ করা হয়েছে। গত ৩০ বছরে সময়ের প্রবণতা, রাজস্ব, ব্যয় এবং মূলধনের ব্যয় বিশ্লেষণ করে এই অর্থনৈতিক গবেষণাপত্রটি বিভিন্ন রাজ্যের আর্থিক গতিপথের উপর রেখাপাত করেছে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, পঞ্জাব এবং হরিয়ানায় ৯০-এর দশকে অর্থনৈতিক বৃদ্ধির হার একই ছিল। কিন্তু ২০০০ সালের পরে উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। আবার সমীক্ষায় উল্লেখ করা হয়েছে, “এক দশকেরও বেশি সময় ধরে ভারতের একমাত্র রাজ্য হিসাবে বিহারের প্রবৃদ্ধির হার ক্রমশ কমেছে। বিহারের প্রকৃত মাথাপিছু আয় ১৯৯০ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত অপরিবর্তিত ছিল।”

উন্নয়ন ও অনুন্নয়ন ব্যয়ের প্রবণতা

প্রাথমিকভাবে, গবেষণাপত্রটি রাজ্যগুলির ব্যয়ের অভ্যাস বা বাধ্যবাধকতা তুলে ধরেছে। অর্থাৎ ওই ব্যয়টি উন্নয়ন বা অনুন্নয়ন সম্পর্কিত ছিল কিনা তাও উল্লেখ করা হয়েছে গবেষণাপত্রে। সাধারণত পরিকাঠামো নির্মাণের সঙ্গে সম্পর্কিত ব্যয়, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পরিবহণ এবং অর্থনৈতিক পরিষেবার ব্যয় ‘উন্নয়ন ব্যয়’ হিসাবে ধরা হয়। অন্যদিকে, অ-উন্নয়ন ব্যয় থেকে ‘বাধ্যতামূলক ব্যয়’-এর সঙ্গে সম্পর্কিত হল, প্রশাসনিক বেতন, ঋণ পরিশোধের জন্য সুদ প্রদান, পেনশন ইত্যাদি । কোনও রাজ্য উন্নয়নমূলক ব্যয় বেশি করলে সেই রাজ্যের ভাল আর্থিক স্বাস্থ্য বিবেচনা করা হয়।

সমীক্ষায় প্রকাশিত, উন্নয়ন ব্যয় ১৯৯০ সালে প্রায় ৭০ শতাংশ ছিল এবং ২০২০ সালে সেটা প্রায় ৬০ শতাংশে নেমে এসেছে। মজার বিষয় হল, সমস্ত বড় রাজ্যের জন্য উন্নয়ন ব্যয়ের অংশ ৫০ শতাংশের বেশি রয়ে গিয়েছে, শুধুমাত্র দুটি অ-বিজেপি -শাসিত রাজ্য পঞ্জাব ও কেরলে ৫০ শতাংশেরও কম। ডা. রবির মতে, পঞ্জাব ও কেরলের এই প্রবণতা তাদের ভবিষ্যৎ-প্রবৃদ্ধি এবং বিকাশের জন্য ভাল ইঙ্গিত নয়।

সুদ পরিশোধ এবং ঋণদান প্রবণতা

অ-উন্নয়ন ব্যয়ের একটি হল, সুদ প্রদান এবং ঋণ পরিষেবা। এটি ১৯৯০-৯১ সালে ২০ শতাংশ ছিল এবং ২০০৪-০৫ সালে সেটি বেড়ে ৪০ শতাংশের বেশি হয়েছে। আবার ২০২০-২১ সালে প্রায় ২০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।

গুজরাটে সুদ পরিশোধ এবং ঋণদান প্রবণতা ২০০০-০১ সালে ২০ শতাংশের কম ছিল এবং ২০০৫-০৬ সালে ৫০ শতাংশের বেশি হয়েছে। তারপর ২০২০-২১ সালে এটি অনেকটা কমে প্রায় ২০ শতাংশে নেমে আসে। দিল্লিতেও একই ধারা দেখা গিয়েছে, সেখানে পতন আরও বেশি ছিল। ২০২০-২১ সালে ১০ শতাংশেরও কম ছিল।

তবে কেরল এবং পঞ্জাবে গত এক দশকে সুদের অর্থ প্রদান এবং ঋণ পরিষেবার অংশ বেড়েছে। কেরলে এটি ২৫ শতাংশ থেকে ৩০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে এবং পঞ্জাবে এটি ৩০ শতাংশ থেকে বেড়ে ৪০ শতাংশের বেশি হয়েছে। ফলস্বরূপ, এই দুটি রাজ্যেই উন্নয়ন ব্যয়ের অনেকটা হ্রাস হয়েছে। আবার পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে উন্নয়ন ব্যয়ের সুদ পরিশোধ এবং ঋণ প্রদানের পরিমাণ সর্বভারতীয় স্তরের চেয়ে বেশি।