UN HDI: আয়ুও বাড়ল, মাথাপিছু আয়ও বাড়ল ভারতীয়দের! বলছে রাষ্ট্রপুঞ্জ
United Nations HDI: অনেক সময়ই ভারতীয় অর্থনীতির এই সাফল্যের কথা উঠলে, সমালোচকরা পার ক্যাপিটা ইনকাম বা মাথাপিছু আয়ের প্রসঙ্গ তোলেন। এই ক্ষেত্রে ভারত বাংলাদেশের থেকেও পিছিয়ে আছে বলে দাবি করা হয়। এবার এই বিষয়েও উল্লেখযোগ্য উন্নতি করল ভারত। এর পাশাপাশি বেড়েছে ভারতীয়দের গড় আয়ুও। জানাল রাষ্ট্রপুঞ্জের হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট ইনডেক্স বা মানবোন্নয়ন সূচক।
নয়া দিল্লি: বর্তমানে ভারত বিশ্বের পঞ্চম বৃহৎ অর্থনীতি। খুব শিগগিরই জার্মানি ও জাপানকে টপকে ভারত এই তালিকায় তৃতীয় স্থানে উঠে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে, সমালোচকরা অনেক সময়ই ভারতীয় অর্থনীতির এই সাফল্যের কথা উঠলে, পার ক্যাপিটা ইনকাম বা মাথাপিছু আয়ের প্রসঙ্গ তোলেন। এই ক্ষেত্রে ভারত বাংলাদেশের থেকেও পিছিয়ে আছে বলে দাবি করা হয়। এবার এই বিষয়েও উল্লেখযোগ্য উন্নতি করল ভারত। রাষ্ট্রপুঞ্জের হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট ইনডেক্স বা মানবোন্নয়ন সূচক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২ সালে, এক বছরে ভারতের মাথাপিছু আয় এক লাফে ৬.৩ শতাংশ বেড়ে বছরে ৬৯৫১ ডলার (প্রায় ৫ লক্ষ ৭৬ হাজার টাকা) হয়েছে।
এর পাশাপাশি বেড়েছে ভারতীয়দের গড় আয়ুও। ২০২১ সালে ভারতীয়দের গড় আয়ু ছিল ৬২.৭ বছর। ২০২২-এ তা বেড়ে হয়েছে ৬৭.৭ বছর। উন্নতি হয়েছে শিক্ষা ক্ষেত্রেও। আগের থেকে ভারতীয়রা এখন স্কুলে অনেক বেশি বছর পড়াশোনা করছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে ব্যক্তি প্রতি ১২.৬ পর্যন্ত স্কুলে পড়াশোনা করছে ভারতীয়রা। সামগ্রিকভাবে, ভারতের হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট ইনডেক্সের স্কোর বেড়েছে। ২০২১-এ এই স্কোর কমেছিল, তার আগের কয়েক বছরে ছিল অপরিবর্তিত। উন্নতি হলেও, এখনও এইচডিআই স্কোর মাঝারি বিভাগেই রয়েছে, ০.৬৪৪। ২০২৩-২৪ সালের রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রতিবেদনে ১৯৩টি দেশের মধ্যে ভারত রয়েছে ১৩৪ নম্বরে। এইচডিআই স্কোর দেওয়া হয়, মানবোন্নয়নের তিনটি মৌলিক বিষয়ের ভিত্তিতে – দীর্ঘ ও সুস্থ জীবন, শিক্ষার অধিকার এবং জীবনযাত্রার মান।
১৯৯০ সালে ভারতের এইচডিআই স্কোর ছিল ০.৪৩৪। সেখান থেকে ২০২২-এ এসে এই স্কোরে প্রায় ৪৯ শতাংশ উন্নতি হয়েছে। ভারতের এই সাফল্যের প্রশংসা করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। রাষ্ট্রপুঞ্জের উন্নয়ন কর্মসূচির প্রতিনিধি ক্যাটলিন উইসেন বলেছেন, “বছরের পর বছর ধরে মানবোন্নয়নের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে ভারতের। ১৯৯০ সাল থেকে আয়ু বেড়েছে ৯.১ বছর। স্কুলে পড়ার প্রত্যাশিত বছর বেড়েছে ৪.৬ বছর। স্কুলে পড়ার গড় বছর বেড়েছে ৩.৮ বছর। ভারতের মাথাপিছু মোট জাতীয় আয় প্রায় ২৮৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।”
লিঙ্গ বৈষম্য কমানোর ক্ষেত্রেও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে ভারতের। ভারতের লিঙ্গ বৈষম্য সূচক হয়েছে ০.৪৩৭। এটা আন্তর্জাতিক গড়ের থেকে ভাল। প্রজননকালীন স্বাস্থ্য, মহিলাদের ক্ষমতায়ন এবং মহিলাদের শ্রমবাজারে অংশগ্রহণ – এই তিন বিষয়ের ভিত্তিতে এই সূচক তৈরি করা হয়। এই ক্ষেত্রে ১৬৬টি দেশের মধ্যে ভারত রয়েছে ১০৮তম স্থানে। ক্যাটলিন উইসেন বলেছেন, “মহিলাদের নেতৃত্বে উন্নয়নের উপর জোর দিচ্ছে ভারত। এর ফলে, আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্ত খুলতে পারে ভারত।”
ভারতের উন্নতি হলেও, সামগ্রিকভাবে টানা দ্বিতীয় বছর এইচডিআইয়ের মান কমেছে। এর আগে কখনও এটা দেখা যায়নি। রাষ্ট্রপুঞ্জের মতে, ধনী এবং দরিদ্র দেশগুলির মধ্যে বৈষম্য ক্রমে বাড়ছে। এটাই সারা বিশ্বে হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট ইনডেক্সের অবনতির কারণ। কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাবেই এই বৈষম্য বেড়েছে। এই সংকট আসার আগে যেভাবে চলছিল, তাতে ২০৩০ সালের মধ্যেই বিশ্বের গড় এইচডিআই খুব ভাল যায়গায় পৌঁছতে পারত। কিন্তু, সেই রাস্তা থেকে বিশ্বকে ছিটকে দিয়েছে কোভিড।